অনেকেই আছেন যারা ছবি তুলতে ভালোবাসেন, কেউ নিজের শখের জন্য ছবি তুলে থাকেন, তো কেউ পেশা হিসেবে ছবি তোলাকে বেছে নেন। সে যাই হোক না কেন, নিজের তোলা ছবি বিক্রি করে টাকা আয় করার ইচ্ছে থাকলে, চলে এসেছেন সঠিক ঠিকানায়।
এই প্রতিবেদনে ৭টি এমন ওয়েবসাইটের ঠিকানা দেওয়া হয়েছে যেখানে আপনি অনলাইনে ছবি বিক্রি করার মাধ্যমে নিজের ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স বৃদ্ধি করে নিতে পারবেন। ছবি বিক্রির ওয়েবসাইট গুলির বিষয়ে বলার পাশাপাশি, কিভাবে এই সাইট গুলোর থেকে ইনকাম করবেন, একাউন্ট কিভাবে তৈরি করবেন এবং অন্যান্য প্রত্যেকটি প্রশ্নের উত্তর এই আর্টিকেলে আপনি পাবেন।
অবশই পড়ুন: অনলাইনে টাকা ইনকাম করার নতুন ওয়েবসাইট গুলো
অনলাইনে ছবি বিক্রি করে কিভাবে ইনকাম করা যায়?
ইন্টারনেটে বিভিন্ন মাধ্যম রয়েছে, যেগুলিকে কাজে লাগিয়ে আপনারা নিজের তোলা ছবি গুলি বিক্রি করে টাকা আয় করতে পারবেন। তবে, আমি আজ এই আর্টিকেলে কেবল লাভজনক এবং যেই উপায় ব্যবহার করে বেশিরভাগ ফটোগ্রাফাররা অনলাইন ইনকাম করছেন, সেই বিশেষ উপায় গুলোর বিষয়ে বলবো। আর এই উপায়টি হলো, অনলাইন স্টক ইমেজ ওয়েবসাইট (Stock Image Site)।
বিভিন্ন কোম্পানি, ব্লগার, ফ্রিল্যান্সাররা এবং অনলাইন বিসনেস গুলি, অনলাইন কনটেন্ট, brochures, বিজ্ঞাপন (advertisement) এবং অন্যান্য কাজের জন্য “স্টক ইমেজ” (stock image) ব্যবহার করেন। আর নানান ধরণের স্টক ইমেজ গুলো খুঁজতে তারা ভিসিট করেন, stock image site গুলোতে।
এবার আসল কথাটি হলো, এই stock image সাইট গুলোতে আপনি বা আমি জেকেও একটি ফ্রি একাউন্ট বানিয়ে নিজের তোলা ছবিগুলি আপলোড করতে পারবো। যখনি কেও আপনার আপলোড করা ছবি গুলো এই stock image website গুলির থেকে কিনে নিবে বা ডাউনলোড করবেন তখন সেই বিক্রি হওয়া ছবির জন্য আপনি কিছু টাকা কমিশন হিসেবে পাবেন।
এভাবেই, কিছু লাভজনক ও জনপ্রিয় স্টক ইমেজ সেলিং ওয়েবসাইট গুলিতে ছবি আপলোড করে পার্ট-টাইম কাজ করে নিয়মিত কিছু অতিরিক্ত টাকা অনলাইনে আয় করে নিতে পারবেন। আর তাই অনলাইনে ছবি বিক্রি করাটা বর্তমানে একটি অনেক লাভজনক অনলাইন ব্যবসা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রিলেটেড: ডিপোজিট ছাড়া ইনকাম করার ১০টি সাইট
স্টক ইমেজ ওয়েবসাইটে ছবি কিভাবে বিক্রি করবেন?
আপনি যেই stock image website এ, ছবি আপলোড করে অনলাইনে টাকা আয় করার কথা ভাবছেন, সেই ওয়েবসাইটে গিয়ে “become a contributor“, “Submit image” বা “Sell your image” লেখা অপসন/বাটন খুঁজতে হবে।
উপরে বলে দেওয়া অপসন/বাটন খুঁজে পেলে এবার সঠিক লিংকে ক্লিক করে নিজের একটি ফিরে contributor account তৈরি করে নিতে হবে। একাউন্ট রেজিস্টার করতে কোনো টাকা দিতে হবেনা। এক্ষেত্রে আপনাকে আপনার নাম, contact details এবং অন্যান্য জরুরি তথ্য গুলো দিয়ে দিতে হবে।
এভাবে, একটি ফ্রি একাউন্ট তৈরি করার পর, stock image website গুলিতে আপনি আপনার ছবি গুলো আপলোড করতে পারবেন। এখন, যখনি কোনো user আপনার আপলোড করা কোনো ছবি ডাউনলোড করে নিবে, আপনাকে সেই ইমেজ ওয়েবসাইট থেকে কিছু টাকা দিয়ে দেওয়া হবে।
অনলাইন ছবি বিক্রি করে কত টাকা আয় করতে পারবেন?
এই প্রশ্নের উত্তর আলাদা আলাদা বিষয় গুলোর উপর নির্ভর করে আলাদা আলাদা হতে পারে। আপনি কি নিয়মিত নতুন নতুন ছবি গুলো তুলছেন এবং আপলোড করছেন? আপনার আপলোড করা ছবি লোকেরা কি মরিমানে কিনে নিচ্ছেন বা ডাউনলোড করছেন? প্রতিটি ছবি ডাউনলোড এর জন্য আপনাকে কত টাকা দেওয়া হচ্ছে? এই বিষয় গুলোর উপর আপনার টোটাল ইনকাম নির্ভর করছেন।
আসলে ছবি বিক্রি করে আপনি কত টাকা ইনকাম করবেন সেটা মূলত প্রত্যেক ছবির ওপরে আপনাকে কতটা টাকা দেয়া হবে, সেটার উপর নির্ভর করবে। অবশই মনে রাখতে হবে, আলাদা আলাদা ছবি বিক্রির ওয়েবসাইট গুলি প্রতিটি ছবি বিক্রির বিপরীতে আলাদা আলাদা পরিমান কমিশন বা ইনকামের সুযোগ আপনাকে দিবে।
বর্তমান সময়ে অনলাইনে উপলব্ধ কিছু সেরা ও জনপ্রিয় ইমেজ সেলিং সাইট গুলি আপনাকে প্রত্যেক ছবির বিক্রির জন্য প্রায় $0.25 থেকে $0.35 র মধ্যে টাকা দিয়ে থাকে। শুনতে অনেক কম মনে হলেও, আপনি কিন্তু আপলোড করা প্রতিটি ছবি বার বার একাধিক ক্লায়েন্টদের কাছে বিক্রি করতে পারবেন। মানে, যতবার আপনার আপলোড করা অন্য অন্য বা একই ছবি বিক্রি হবে এবং ডাউনলোড করা হবে, আপনাকে ততবার টাকা দেয়া হবে।
তাই, অনলাইন ছবি বিক্রি করে মাসে কত টাকা আয় করা যাবে, এই প্রশ্নের উত্তর নির্ভর করবে, “আপনি মাসে কতটা ছবি বিক্রি করেছেন” এবং “প্রত্যেক ছবিতে আপনাকে কত টাকা দেয়া হয়েছে” এই বিষয় গুলোর উপর।
টাকা আয় করার জন্য কতটা সময় লাগবে?
ওয়েবসাইট গুলিতে ছবি বিক্রি করে আয় করার জন্য আপনার কিছু সময় অবশই দিতে হবে। কারণ, প্রথম অবস্থায় আপনি বেশি পরিমানে ছবি তুলে আপলোড করতে পারবেননা। তাই, আপনার ছবি বিক্রি বা ডাউনলোড হওয়ার সুযোগ অনেক কম থাকবে।
তবে, কিছু দিন নিয়মিত ভাবে ভালো high quality images তুলে আপলোড করার পর, যখন আপনার একাউন্টে ভালো পরিমানে আলাদা আলাদা বিষয়ে ছবি থাকবে, তখন কিছু পরিমানে আপনার ছবি গুলি বিক্রি হওয়া শুরু হয়ে যাবে। ফলে, আপনার ইনকামও প্রায় চালু হয়ে যাবে। তাই, এই মাধ্যমে অনলাইন ইনকাম শুরু হওয়ার জন্য প্রায় ৫ থেকে ৬ মাসের সময় লেগে যেতে পারে।
তবে, আপনি যদি লোকেদের মধ্যে অনেক চাহিদা থাকা এবং ভালো কোয়ালিটির ছবি তুলে আপলোড করতে পারেন, তাহলে অনেক কম সময়ের মধ্যেই ইনকাম শুরু হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
আপনার আপলোড করা ছবি কে কিনবে?
আমি ওপরেও আগেই বলেছি যে, আজ ইন্টারনেট এবং ডিজিটাল মার্কেটিং এর সময়। এবং, বর্তমানে এমন নানান কোম্পানি, ব্লগার, ওয়েবসাইটের মালিক বা অনলাইন ম্যাগাজিন কোম্পানি গুলি কন্টেন্ট প্রমোশন, মার্কেটিং, বিজ্ঞাপন (advertisement) এবং আরো নানান কারণে, এই ধরণের স্টক ইমেজ গুলি লোকেরা কিনে ব্যবহার করেন।
তাই, তারাই আপনার ছবি গুলি কেনার চাহিদা রাখবেন। অবশই, ইন্টারনেটে অনেক ফ্রি ইমেজ ওয়েবসাইট রয়েছে, যেগুলির থেকে ফ্রীতে ছবি ডাউনলোড করে ব্যবহার করা যাবে। তবে, হাজার হাজার এরকম অনেক ব্লগ বা কনটেন্ট রাইটার রয়েছেন, যারা নিজেদের কনটেন্ট বা আর্টিকেল গুলিতে একটি প্রিমিয়াম ও ভালো কোয়ালিটির ছবি ব্যবহার করেন।
তাই, আপনি যদি অনেক ভালো এবং হাই কোয়ালিটির ছবি তুলে আপলোড করতে পারেন, তাহলে অবশই এই ধরণের বিভিন্ন ব্লগার, কনটেন্ট রাইটার বা কোম্পানি গুলি, “ইমেজ ওয়েবসাইট” গুলির মাধ্যমে, আপনার আপলোড করা ছবি কিনে নিবেন।
অনলাইনে ছবি বিক্রি করে টাকা ইনকাম করার সেরা ওয়েবসাইট গুলো। Websites To Earn Money By Selling Photos
১. iStock
এই প্ল্যাটফর্মে ফটো বিক্রির জন্য আঁটোসাঁটো বিধিনিষেধ নেই। বহু ওয়েবসাইট শুধুমাত্র এক্সক্লুসিভ ফটো বিক্রি করার অপশন দেয়। যার ফলে অনেকেই একটাই ফটো অন্য এজেন্সির কাছে বিক্রি করতে পারেন না। তবে, এই ওয়েবসাইটে আপনি সংশ্লিষ্ট কড়া নিয়ম থেকে মুক্তি পাবেন। আইস্টকে (istock) ফটো এক্সক্লুসিভ হওয়ার দরকার নেই। অর্থাৎ এক্ষেত্রে আপনি একই ফটো অন্য এজেন্সির কাছে বিক্রি করার অপশন পাবেন। এই ওয়েবসাইটে কমিশনের হার ১৫ থেকে ৪৫ শতাংশ, যা কন্ট্রিবিউটারের সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতে ঠিক করা হয়। শুরুতে আবেদনের জন্য কিছু স্যাম্পল ফটো জমা দিলে, তবেই আপনি কাজ পাওয়া শুরু করবেন।
২. Unsplash+
গেটির মালিকানাধীন ফ্রী স্টক ফটো সাইট হল আনস্প্ল্যাশ। এই প্ল্যাটফর্মে টাকা উপার্জনের পদ্ধতিটা একটু আলাদা। ওয়েবসাইটিতে সাবমিট করা ফটো বিক্রির ভিত্তিতে ফটোগ্রাফাররা টাকা পান না। কন্ট্রিবিউটারদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে UnSplash+ Program-এর মাধ্যমে ফটোগ্রাফারদের বিশেষ মঞ্চ দেয় এই ওয়েবসাইট।
এর অংশ হলে ভিন্ন ভিন্ন প্রকৃতির ব্রিফ ও অনুরোধের ভিত্তিতে টাকার মুখ দেখার সুযোগ মেলে। প্রোগ্রামের অংশ হওয়ার জন্য আবেদন জানাতে হবে। আবেদন গৃহীত হলে কাস্টোমারদের তরফে প্রস্তুত করা ব্রিফ দেখতে পায় ফটোগ্রাফাররা। যোগ্যতা অনুযায়ী ব্রিফ বেছে নিয়ে ফটো আপলোড করলেই কেল্লাফতে! স্পষ্ট ভাষায় টাকা পাওয়া যাবে। এই প্ল্যাটফর্মে ফটো প্রতি ৫ ডলার থেকে শুরু করে ৩০ ডলার পর্যন্ত পাওয়ার সুযোগ পাওয়া যায়।
৩. Picfair
ফটো পোর্টফোলিও বানিয়ে দাম থেকে শুরু করে বিক্রি সবকিছু নিজের নিয়ন্ত্রণে চান? উত্তর হ্যাঁ হলে পিকফেয়ার রয়েছে আপনার জন্যই! এই প্ল্যাটফর্মের বিশেষ ব্যাপার হল, এক্ষেত্রে ডিজিটাল ডাউনলোডের পাশাপাশি আপনি প্রিন্টের দামও কন্ট্রোল করতে পারবেন। এদিকে পেমেন্ট প্রসেসিংয়ের ঝামেলা আপনাকে নিতে হবে না। এর পুরো দায়িত্ব থাকবে পিকফেয়ারের কাঁধে।
একইসঙ্গে ডিজিটাল ফোটো লাইসেন্সের ব্যবস্থা এবং প্রিন্ট প্রস্তুত ও শিপিংয়ের দায়িত্ব সামলে নেয় এই ওয়েবসাইট। বেশি আয় করতে চাইলে প্লাস প্ল্যানের সদস্য হতে হবে। এক্ষেত্রে বছরে একবারই বিল মেটাতে হবে। প্রত্যেক মাসে খরচ হবে মাত্র ৫ ডলার। যদিও আপনার কাজ এখানেই শেষ হচ্ছে না। মোটামুটি ১০ হাজারের মতো ফটো আপলোড করে কাস্টম পিকফেয়ার স্টোর বানাতে হবে। এই স্টোর থেকেই আপনার তোলা ফটো বিক্রি হবে এবং আপনার টাকা ইনকামের নতুন দুয়ার খুলবে।
৪. Snapped4U
রাঁধুনি-টিচার থেকে শুরু করে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার, প্রত্যেক পেশারই ক্যাটাগরি ও সাব-ক্যাটাগরি আছে। অর্থাৎ বিষয় অনুযায়ী একটা পেশার অধীনে ভিন্ন ভিন্ন প্রকৃতির কাজ থাকতে পারে। ফটোগ্রাফির ক্ষেত্রেও এই রীতি কার্যকরী। এক্ষেত্রেও ফটো তোলার বিষয় অনুযায়ী ফটোগ্রাফারদের বিভাগ আলাদা। কেউ পোর্ট্রেট তোলেন, তো কেউ ইভেন্ট ফটোগ্রাফার। কেউ আবার শুধুমাত্র বিয়ে বাড়ির ফটো তোলেন, তো কেউ ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফার।
এবার, আপনার মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, যে এইসব বিষয় কেন টেনে আনা হচ্ছে? এর উত্তর হল, পোর্ট্রেট ও ইভেন্ট ফটোগ্রাফারদের বিশেষ সুযোগ দিচ্ছে ‘স্ন্যাপড ফর ইউ’ (Snapped4U)। এই প্ল্যাটফর্ম ফটোর দাম ঠিক করার অধিকার ফটোগ্রাফারদের হাতে দিয়ে ক্লায়েন্টদের কাছে সরাসরি ফটো বিক্রি করে আয়ের সুযোগ এনে দিচ্ছে।
জানিয়ে রাখি, এক্ষেত্রে ২০ ডলার পর্যন্ত ফটোর মূল্য নির্ধারণ করার অধিকার দিয়েছে ওয়েবসাইটটি। উল্লেখ্য, ইভেন্টে অংশগ্রহণ করা বা পোর্ট্রেটের জন্য বসা ব্যক্তিরাই শুধুমাত্র ফটোগ্রাফারদের কাছ থেকে ফটো কেনার সুযোগ পাবেন। ল্যান্ডস্কেপ, ট্রাভেল বা স্টিল-লাইফ ফটো কোনোভাবেই উক্ত প্ল্যাটফর্মে গ্রহণযোগ্য নয়।
জানিয়ে রাখছি যে, এই সাইটে সাইন-আপের সময়ে ১০ ডলার টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। আবার, প্রত্যেক বিক্রিতে ১০-১২% কমিশন কেটে নেয় ওয়েবসাইটটি। বাকি পড়ে থাকা টাকা প্রত্যেক মাসের প্রথম ও ১৫-তম তারিখে ফটোগ্রাফারের পেপাল (PayPal) অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
৫. Foap
বিভিন্ন ব্র্যান্ড বা কোনো বিশেষ ব্যক্তির কাছে ফটো বিক্রি করতে চাইলে Foap একটি দারুণ প্ল্যাটফর্ম। এই ওয়েবসাইটের হাত ধরে ফটোগ্রাফাররা বাণিজ্যিক গুণমান সম্পন্ন ফটো কোনো মধ্যস্থতা ছাড়াই সরাসরি বিক্রি করার সুযোগ পান। এই প্ল্যাটফর্মে “missions” বলে একটা বিষয় আছে। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের তরফে এই মিশন লঞ্চ করা হয়।
মিশনের মাধ্যমে ব্র্যান্ডগুলো কাজের বিজ্ঞাপন সহ পুরস্কার ঘোষণা করে থাকে। এক্ষেত্রে আয়ের পরিমাণ ১০০ ডলার থেকে ২০০০ ডলার হতে পারে। কোনো ব্যক্তিকে ফটো বিক্রি করলে প্ল্যাটফর্মটি ৫০% কমিশন নিয়ে থাকে। এখনও পর্যন্ত প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, Foap প্রায় ৩ মিলিয়ন ক্রিয়েটরের টাকা ইনকামের পথ সুগম করেছে।
৬. EyeEm
মার্কেটপ্লেসরূপে প্রকাশ্যে আসা ফটো কমিউনিটির নাম EyeEm। কোনো ছবির প্রয়োজন পড়লে এই প্ল্যাটফর্ম ফটোগ্রাফারদের মিশনে ইনভাইট করে টাকা উপার্জনের সুযোগ তৈরি করে দেয়। এই ওয়েবসাইটে টাকা আয়ের পদ্ধতি অনেকটা Foap-এর মতোই। এক্ষেত্রেও প্ল্যাটফর্মটি প্রতি বিক্রি পিছু ৫০% কমিশন কেটে থাকে। বাকি টাকা পেপালের মাধ্যমে পেয়ে যান ফটোগ্রাফাররা।
৭. Envato Elements
অন্য ফটোগ্রাফি রিলেটেড ওয়েবসাইটদের একটু আলাদা Envato Elements। এই স্টক ফটোগ্রাফি সাইটে বিক্রি নয়, সাবস্ক্রিপশনের ভিত্তিতে টাকা ইনকাম করে থাকেন ফটোগ্রাফাররা। এই প্ল্যাটফর্মের নামে app ও ডোমেন উভয়ই আছে। কেউ app-এ আপলোড করেন, আবার কেউ Envato Elements-এর ডোমেনযুক্ত ফটোগ্রাফারদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে। সাবস্ক্রিপশন থেকে অর্জিত টাকার ২৫ থেকে ৫০ শতাংশ পেয়ে থাকেন কন্ট্রিবিউটাররা।
অনলাইনে কিভাবে ছবি বিক্রি করে টাকা ইনকাম করা যায়?
শুধুমাত্র ওয়েবসাইটে অ্যাকাউন্ট বানালেই হয় না। এক্ষেত্রে ভালোভাবে স্ট্র্যাটেজি রেডি করে ময়দানে নামতে হয়। বেশ কিছু অকথিত নিয়ম আছে, যা মেনে চললে শুধুমাত্র ফটো বিক্রি করে বিপুল আয় করা যায়। নিম্নে এমনই কিছু টিপস আলোচনা করা হল।
১. ফটোগ্রাফির নিচ:
ছবি তোলার সময় সমস্ত রকমের ফটোয় স্কিল দেখানোর চেষ্টা না করাই ভালো। এতে মার্কেটে আপনি কাজ হারাতে পারেন। কারণ, এই স্বভাব অনেকক্ষেত্রেই মানুষের অস্থির মানসিকতাকে দর্শায়। যার ফলে আপনার দর কমতে পারে ফটোগ্রাফার হিসাবে। এই অবস্থায় একটি নির্দিষ্ট নিচ বেছে নেওয়া খুবই দরকার। বিষয়টা ফুড, ফ্যাশন, ট্র্যাভেল, প্রাকৃতিক, ওয়েডিং যাই হোক না কেন। কমফোর্ট ও যোগ্যতা অনুযায়ী নিচ সেট হয়ে গেলেই একটা সময় পরে আপনি নির্দিষ্ট নিচের অধীনে একাধিক কাস্টোমার পেতে থাকবেন।
২. ইন্সটাগ্রামকে করুন হাতিয়ার:
বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের ছড়াছড়ি। এই সোশ্যাল মিডিয়াকেই হাতিয়ার করতে পারলে আয় বাড়বে বহুগুণ। ইউটিউবার্স বা ব্লগার্সদের মতো ফটোগ্রাফারদেরও নির্দিষ্ট অডিয়েন্স তৈরি করতে হবে। এই কাজের জন্য ইনস্টাগ্রাম খুবই উপকারী। নির্দিষ্ট নিচের অধীনে নিয়মিত ফটো পোস্ট করতে থাকলে আপনার ভিজিবিলিটি বাড়বে।
ফলে আপনার তথা আপনার ব্র্যান্ডের নাম দ্রুত গতিতে ছড়াবে এবং আপনি তুলনামূলকভাবে সহজেই অডিয়েন্সদের মধ্যে পোটেন্সিয়াল ক্লায়েন্ট খুঁজে পাবেন। পোস্ট করার সময় সঠিক হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করতে ভুললে চলবে না। আপনি ইনস্টাগ্রামের পাশাপাশি ফেসবুকও ব্যবহার করতে পারেন।
৩. ওয়েবসাইটে দিন বাণিজ্যের ছোঁয়া:
পোটেন্সিয়াল ক্লায়েন্টসদের প্রকৃত ক্লায়েন্টসে রূপান্তরিত করার জন্য অনেকেই ফটো বিক্রির প্ল্যাটফর্ম বাদে নিজস্ব ওয়েবসাইট বানিয়ে থাকেন এবং এই সমস্ত ওয়েবসাইটে নিজের তোলা ছবি আপলোড করে নিজের কাজের নমুনা দেখিয়ে থাকেন।
এতে ‘Buy Button’ দেওয়ার মাধ্যমে ইকমার্সের ছোঁয়া দিতে পারলে ক্লায়েন্টসদের ফটো পছন্দ হলে কেনার জন্য অন্য কোথাও দৌড়াতে হবে না। ফলে কেনার প্রক্রিয়া আরও সহজ হবে এবং আপনার ফটো বিক্রির সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।
৪. মার্কেট না বুঝলে লাখ টাকার ক্যামেরা কিনেও লাভ নেই!
সমস্ত ফটোগ্রাফিক ইন্সট্রুমেন্ট কেনা হয়ে গেলে, ফটোগ্রাফি সংক্রান্ত ওয়েবসাইটে অ্যাকাউন্ট সেটআপ হয়ে গেলে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাকাউন্ট সাজানো হয়ে গেলেও একটা বিশেষ বিষয় বুঝতে না পারলে, ইমেজ সেল করে নিয়মিত ইনকাম কার্যত অসম্ভব!
এইজন্য আপনাকে আগে ঠিক করতে হবে আপনি কোন মার্কেটকে টার্গেট করতে চান। মার্কেট চিনতে পারলে আপনি বুঝতে পারবেন আপনি কাকে ফটো বিক্রি করতে চান, আপনার ক্লায়েন্টস কী ধরণের ফটো পছন্দ করবে এবং তারা কী ধরনের ফটো কিনবে।
FAQ’s On Earn Money Selling Images Online:
অনলাইনে ছবি বিক্রি করে কত টাকা আয় করা যাবে, সেটা সম্পূর্ণভাবে একাধিক উপাদান গুলির উপর নির্ভর করে থাকে। যেমন, আপনি কোন ওয়েবসাইটে ছবি বিক্রি করছেন, আপনাকে কত টাকা কমিশন হিসেবে দেওয়া হচ্ছে, আপনি নিয়মিত কত গুলি ছবি আপলোড করছেন, লোকেরা আপনার আপলোড করা ছবি কি পরিমানে পছন্দ করছেন এবং কিনছেন, ইত্যাদি।
না, মূলত আপনাকে এমন ভাবে ছবি গুলি তুলতে হবে যাতে ছবি গুলি অনেক হাই কোয়ালিটির এবং শার্প থাকে। তাই, দেখতে গেলে একটি high-quality images আমরা আমাদের smartphone দিয়েও কিন্তু তুলতে পারি।
মোবাইল ফটোগ্রাফি করে আয় করতে চাইছেন বা নিজের কাছে থাকা প্রফেশনাল DSLR camera দিয়ে ছবি তুলে সেগুলি বিক্রি করতে চাইছেন, দুটো ক্ষেত্রেই তাড়াতাড়ি এবং সহজে ছবি বিক্রি করে আয় করতে হলে nature, electronics, এবং business-related subjects গুলির উপরে ছবি তুল্লে ভালো।
অনলাইনে প্রচুর ইমেজ সেলিং ওয়েবসাইট গুলো পেয়ে যাবেন। এগুলোর মধ্যে কিছু সেরা এবং জনপ্রিয় সাইট গুলো হলো, Shutterstock, Alamy, 500px, Picfair, Unsplash, iStock, এবং আরো আছে।
অবশই পড়ুন:
Nice
ধন্যবাদ ভাই এই তথ্য দেয়ার জন্য