অনলাইন কোর্স তৈরি ও বিক্রি করে ইনকাম করার সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া!

Last updated on February 21st, 2024 at 12:17 pm

অনলাইনে কাজ করে টাকা ইনকাম করার এমনিতে প্রচুর উপায় গুলির বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। সেটা ব্লগ থেকে টাকা আয় করা হোক বা প্রতিদিন ১০০০ টাকা ইনকাম করার নানা অনলাইন উপায় গুলি হোক, ইন্টারনেট থেকে ইনকামের প্রচুর সুযোগ বৰ্তমানে রয়েছে।

তবে, আজকের এই আর্টিকেলে আমরা একটি আলাদা তবে প্রমাণিত ও লাভজনক উপায়ের বিষয়ে আলোচনা করতে চলেছি। আর সেই উপায়টি হলো, অনলাইন কোর্স তৈরি করে ইনকাম করা।

একটি অনলাইন কোর্স বানিয়ে টাকা আয় করার ক্ষেত্রে আপনাকে কোন কোন ধাপ গুলি অনুসরণ করতে হয়, এক্ষেত্রে কি কি বিষয়ে জানতে হবে ইত্যাদি এই সমস্ত বিষয়ে এই আর্টিকেলে আপনি জানবেন।

দৈনিক ৪০০-৫০০ টাকা ইনকাম করার জনপ্রিয় অনলাইন উপায় গুলির মধ্যে এই অনলাইন কোর্স বিক্রি করে ইনকাম করার উপায়টি আরেকটি।

তবে, যদি আপনি একটি অনেক সাধারণ কোর্স তৈরি করে অনেক কম দামে কোর্সটি অনলাইনে বিক্রি করার কথা ভাবছেন, সেক্ষেত্রে প্রতিদিন ৫০০ থেকে ১০০০ টাকার বেশি লাভ আপনি আয় করতে হয়তো পারবেননা।

কিন্তু, যদি আপনি একটি প্রফেশনাল এবং প্রচুর চাহিদায় রয়েছে এমন বিষয় নিয়ে কোর্স তৈরি করে যুক্তিসঙ্গত দামে কোর্সটি বিক্রি করতে পারেন, সেক্ষেত্রে আনলিমিটেড লাভ আয় করার সম্ভাবনাও অবশই থাকছে।

তাই সত্যি বলতে, নিজের একটি কোর্স তৈরি করে সেটিকে অনলাইনে বিক্রি করে ইন্টারনেট থেকে টাকা ইনকাম করার এই উপায়টি, অনেকের জন্যই একটি লাইফ চেঞ্জিং সুযোগ হিসেবে প্রমাণিত হতে পারে।

তাহলে, কিভাবে অনলাইন কোর্স বানাতে হয়? একটি সেরা অনলাইন কোর্স তৈরি করার জন্য কি কি করতে হয়? চলুন, নিচে ধাপে ধাপে সবটা জেনেনেই।

অবশই পড়ুন:

আর্টিকেল সূচি: show

বর্তমানে অনলাইন লার্নিং ইন্ডাস্ট্রি কতটা জনপ্রিয়?

গত কয়েক বছরের মধ্যে অনলাইন লার্নিং ইন্ডাস্ট্রিটি কিন্তু মারাত্মক এবং অভূতপূর্ব সফলতা এবং গ্রোথ লাভ করা দেখা যাচ্ছে। এর দ্বারা, ঐতিহ্যগত শিক্ষার মডেলের তুলনায় বিশ্বব্যাপী শিক্ষাগত অ্যাক্সেস এর সুযোগ সুবিধায় প্রচুর বৃদ্ধি পেয়েছে।

অনলাইন পড়াশোনা বা ই-লার্নিং এর সফলতা, সুবিধা এবং জনপ্রিয়তার মূল কারণ এবং উপাদান গুলি হলো, প্রযুক্তির অগ্রগতি, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, পড়াশোনা করার ধরণ এর পরিবর্তন, এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে কোনো ধরণের বাধা না থাকার চাহিদা।

ভেবে দেখুন, আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে চাইছেন, ডিজিটাল মার্কেটিং কি এবং কিভাবে করতে হয়, এর কোনো ধরণের জ্ঞান আপনার কাছে নেই।

এক্ষেত্রে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে হলে আপনাকে নিজের বাসা থেকে ৩-৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি এডুকেশনাল ইনস্টিটিউটে গিয়ে সেখানে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা ফিস দিয়ে এডমিশন নিতে হবে।

অন্যদিকে, আপনি ইন্টারনেটে এমন নানান online digital marketing courses গুলি পাবেন, যেগুলি কেবল ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা দিয়েই কিনে নিতে পারবেন এবং পাশাপাশি ঘরে বসে নিজের ফ্রি টাইমে ভিডিওর মাধ্যমে কোর্সটি করতে পারবেন।

এখন বলুন, আপনি হলে কোন কোর্সটি কিনে নিতেন?

আর এভাবেই, জেকেও নিজের ঘরে বসে এতটা কম ফী পেমেন্ট করে নিজের পছন্দমতো প্রিমিয়াম কোর্স গুলি কিনে যেকোনো বিষয়ে শিখতে ও জেনেনিতে পারছেন। এটাই কারণ, যার জন্যে বর্তমান সময়ে অনলাইন কোর্স গুলির জনপ্রিয়তা ও চাহিদা শীর্ষে রয়েছে।

এই অনলাইন কোর্স গুলির জনপ্রিয়তা, সুবিধা এবং চাহিদার উপরে নজর দিয়ে দেখলে, এটা সত্যি একটি দারুন বিসনেস মডেল প্রমাণিত হতেই পারে। মার্কেটে অনেক কোম্পানি এবং ব্যক্তি রয়েছেন, যারা কোর্স সেল করে ইনকাম করার এই ব্যবসার মডেলটিকে কাজে লাগিয়ে প্রচুর টাকা ইনকাম করতে পারছেন।

অনলাইন কোর্স তৈরি করে টাকা ইনকাম করার সম্ভাবনা:

আমি উপরে আগেই বলেছি, একটি অফলাইন কোর্স এর তুলনায় অনলাইন কোর্স এর চাহিদা এবং জনপ্রিয়তা এতটা বেশি কেন।

তবে, যখন অনলাইনে কোর্স সেল করে ইনকাম করার কথা চলে আসছে, সেক্ষেত্রে এখানে ইনকামের সম্ভাবনা কতটা রয়েছে বা ইন্টারনেট থেকে টাকা আয় করার এই প্রক্রিয়া কতটা কার্যকর হতে পারে, সেটাও আপনাকে জেনে রাখতে হয়।

একইভাবে, অনলাইন কোর্স বানিয়ে টাকা আয় করার এই ব্যবসার আইডিয়াটি বর্তমানে প্রচুর স্টার্টআপ এবং ব্যক্তিদের জন্য উল্লেখযোগ্য সুযোগ উপস্থাপন করতে সফল হয়েছে।

মনে রাখা দরকার যে, অনলাইন কোর্স সেলিং ব্যবসাটিতে আর্থিক সাফল্যের সম্ভাবনা বিভিন্ন মূল কারণ এবং উপাদান গুলির উপর নির্ভর করে থাকে। সেগুলি হলো,

  • আপনার মধ্যে একটি বা একাধিক বিষয়ে বিশেষ জ্ঞান এবং দক্ষতা থাকতে হবে। তাহলেই আপনি সেই বিষয়টি নিয়ে অনলাইন কোর্স তৈরি করতে পারবেন।
  • একাডেমিক বিষয়, পেশাদার দক্ষতা, বা কোনো শখ, আপনার কোর্স এর বিষয় যেটাই হোক না কেন, সেই কোর্স এর যথেষ্ট চাহিদা অনলাইনে থাকতে হবে।
  • আপনার কোর্সটি যাতে প্রত্যেক বর্গের লোকেরা বা ছাত্ররা কিনে নিতে পারেন, সেই হিসেবে তার দাম (course fee) সেট করতে হবে।
  • একইভাবে, one-time payments, subscription-based models, ইত্যাদির মতো প্রাইস মডেল থাকতে হয়।
  • এভাবে, আলাদা আলাদা প্রাইস মডেলের দ্বারা দর্শকদের/ছাত্রদের পছন্দ এবং আর্থিক ক্ষমতার বিষয়টাও নজরে রাখা হয়।
  • কোর্স বিক্রির জন্য কোথায় টার্গেটেড অডিয়েন্স পাবেন, সেই জ্ঞান থাকতে হবে।
  • সঠিক অনলাইন মার্কেটিং এর কৌশলটি, অনলাইনে কোর্স বানিয়ে টাকা আয় করার ক্ষেত্রে সাংঘাতিক জরুরি।
  • অনলাইন কোর্স সম্পূর্ণ ভাবে তৈরি হয়ে গেলে, কোনো অতিরিক্ত খাটুনি না করেই শুধুমাত্র বিক্রি করার মাধ্যমে ইনকাম স্কেল করা যায়।
  • অটোমেশন এবং উন্নত প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে এক সাথে হাজার হাজার ছাত্রদের কাছে পৌঁছে যেতে পারবেন। এতে, আয়ের সম্ভাবনা বাড়বে।
  • ভালোভাবে ডিজাইন করা অনলাইন কোর্সগুলো সময়ের সাথে সাথে ভালো মানের প্যাসিভ ইনকাম করে দিতে পারে।
  • একবার একটি কোর্স বানিয়ে বছরের পর বছর সেই একই কোর্স বিক্রি করে নিয়মিত ইনকাম করা যায়।

উপরে আমি এমন বেসিক এবং দরকারি উপাদান গুলির বিষয়ে বলেছি যেগুলি অনলাইনে কোর্স বিক্রি করে ইনকাম করার ক্ষেত্রে আর্থিক সাফল্যের সম্ভাবনা নিশ্চিত করতে পারে।

কিভাবে একটি অনলাইন কোর্স তৈরি করবেন?

কোর্স তৈরি ও বিক্রি করে ইনকাম
How to create and sell courses online and earn money.

একটি অনলাইন কোর্স তৈরি করার জন্য শুরুতেই আপনাকে একটি পরিষ্কার ধারণা এবং পরিকল্পনার সাথে কাজ করতে হবে। তাহলে, কোর্স বানানোর জন্য আপনাকে কি কি করতে হবে? চলুন জেনেনেই।

১. আপনার দক্ষতা এবং বিষয়টি বোঝা:

আমি আগেও বলেছি, যেকোনো ধরণের কোর্স কেবল তখনই ভালো হবে এবং সেটি লোকেরা কেবল তখনই পছন্দ করবেন যখন সেই কোর্সের মধ্যে প্রচুর নলেজ এবং ভ্যালু থাকবে।

আর এটা কেবল তখনই সম্ভব যখন আপনি আপনার পছন্দের এমন একটি বিষয় নিয়ে কোর্স তৈরি করবেন যেই বিষয়ে আপনার প্রচুর অভিজ্ঞতা, জ্ঞান এবং দক্ষতা রয়েছে।

এতে কোর্স তৈরি করতেও ভালো লাগবে এবং যারা কোর্স কিনবেন তারাও অবশই আপনার থেকে প্রচুর ভ্যালু ও জ্ঞান লাভ করার সুযোগ পাবেন।

আপনাকে এটাও মনে রাখতে হবে যে, কোর্স এমন একটি বিষয় সিলেক্ট করেই তৈরি করতে হবে যেই বিষয়টি নিয়ে মার্কেটে প্রচুর ডিমান্ড রয়েছে। কেননা, ডিমান্ড থাকলেই তো লোকেরা আপনার সেই কোর্স কিনবেন।

২. কোর্স নিয়ে পরিকল্পনা:

একটি অনলাইন কোর্স তৈরি করার আগে আপনাকে অবশই কোর্স এর উদ্দেশ্য এবং পরিকল্পনা নিয়ে নিশ্চিত হতে হবে।

কোর্স এর মধ্যে কোন কোন বিষয়ে আলোচনা করবেন, কি কি মডিউল এবং পাঠ কোর্সে যুক্ত থাকবে, এবং কোর্সের বিষয়বস্তু গুলি কার্যকরভাবে গঠন করার মতো বিষয় গুলি আগের থেকে ঠিক করতে হবে।

মনে রাখবেন, মডিউল এবং লেসন ভিডিও গুলি ছোট ছোট অংশে বিভক্ত করতে হবে। এতে, জেকেও নিজের খালি সময়ে অল্প অল্প করে কোর্সের কনটেন্ট গুলি দেখতে ও বুঝতে পারবেন।

এগুলো করতে খানিকটা সময় যাবে যদিও, একটি সেরা এবং কার্যকর অনলাইন কোর্স তৈরি করতে হলে এগুলি নিয়ে পরিকল্পনা রাখতেই হবে।

৩. উচ্চ-মানের কোর্স কনটেন্ট তৈরি করা:

খালি শর্ট-কাট ভাবে টিউটোরিয়াল ভিডিও বানিয়ে রাখলেই কিন্তু কাজ হবেনা।

একটি উচ্চ মানের অনলাইন কোর্স বানাতে হলে আপনাকে প্রত্যেকটি লেসন এবং মডিউলে সেরা নলেজ এবং জ্ঞান দিতে চেষ্টা করতে হবে। videos, slides, quizzes, infographics ইত্যাদি এই ধরণের নানান কনটেন্ট গুলি ব্যবহার করতে হবে।

ভিডিওতে আপনি কিভাবে কথা বলছেন, বিষয় গুলি কিভাবে বুঝাচ্ছেন, ছবি, স্ক্রিনশট, স্ক্রিন রেকর্ডিং এই ধরণের মিডিয়া গুলি যুক্ত করছেন কি না, সবটা দেখতে হবে। মনে রাখবেন, থিওরির পাশাপাশি প্রাকটিক্যাল লেসন গুলিও সমান ভাবে ভালো এবং উচ্চমানের হতে হবে।

আকর্ষক এবং ইন্টারেক্টিভ কোর্স ভিডিও তৈরি করাটা, অনলাইন কোর্সের সাফল্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয়।

৪. কোর্স তৈরি করতে কি কি লাগবে?

অনলাইনে কোর্স বিক্রি করে টাকা ইনকাম করার জন্য আপনার কাছে একটি সেরা, আকর্ষক, এবং লোকেদের কাজে লাগবে এমন একটি কোর্স তৈরি করা থাকতে হবে।

একটি ভিডিও কোর্স বানাতে এমনিতে এমন বিশেষ কিছুই লাগেনা। আপনি ১০ বাই ১০ এর একটি রুমে বসেই নিজের কোর্স সম্পূর্ণ ভাবে তৈরি করে নিতে পারবেন।

অবশই, যেকোনো ধরণের ভিডিও কোর্স বানানোর জন্যে আপনার কাছে কিছু জরুরি জিনিস থাকতেই হয়ে। যেমন, একটি ভালো ভিডিও রেকর্ডার ক্যামেরা বা হাই কোয়ালিটি ভিডিও রেকর্ডিং করা যাবে এমন একটি স্মার্টফোন।

এছাড়া, নানান প্রযুক্তিগত টিউটোরিয়াল এবং স্লাইড উপস্থাপনা গুলির ক্ষেত্রে আপনার একটি স্ক্রিন রেকর্ডিং সফটওয়্যার এর প্রয়োজনও হবে। এক্ষেত্রে, আপনি ইন্টারনেটে নানান ফ্রি এবং পেইড screen recording software গুলি পেয়ে যাবেন।

অনলাইন কোর্স তৈরির সময় কাজে লাগা সবচেয়ে জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ জিনিস গুলির মধ্যে একটি হলো মাইক্রোফোন। একটি ভালো ও হাই কোয়ালিটি মাইক্রোফোনের দ্বারা স্পষ্ট এবং ক্লিয়ার ভয়েস রেকর্ড করা যাবে।

এগুলি ছাড়াও, ভিডিও কোর্স তৈরির সময় আপনার একটি ভালো ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার, লাইট সেটআপ, একটি ল্যাপটপ বা পিসির দরকার হবে।

৫. কিভাবে বানাতে হবে কোর্স?

যদি উপরে বলে দেওয়া বিষয় গুলি ভালো ভাবে পড়েছেন, তাহলে অবশই বুঝতে পড়েছেন যে অনলাইন কোর্স তৈরি করা মানে, আপনাকে নানান লেসন, উপদেশ, পাঠ গুলিকে ছোট ছোট ভিডিও তৈরি করার মাধ্যমে বানাতে হয়।

বিষয়টা, খানিকটা নিজের ইউটিউব চ্যানেলের জন্য ভিডিও বানানোর মতোই, তবে এক্ষেত্রে আপনি নিজের কোর্স ভিডিওতে আপলোড দিচ্ছেননা। তৈরি করা আপনার ছোট ছোট ভিডিও লেসন গুলি একত্রিত করে একটি মূল্যবান কোর্স হিসেবে আপনাকে অনলাইন বিক্রি করতে হবে।

ক্যামেরার সামনে বসে থিওরি লেকচার গুলি রেকর্ড করুন, এবং একটি ল্যাপটপ বা কম্পিউটারে স্ক্রিন রেকর্ড করে প্রাকটিক্যাল লেসন, চার্ট, গ্রাফিক্স ইত্যাদি রেকর্ড করতে হয়।

এভাবেই আপনাকে কাজ করতে হবে এবং তৈরি করতে হবে একটি সেরা অনলাইন কোর্স।

কিভাবে তৈরি করা অনলাইন কোর্স বিক্রি করবেন?

উপরে বলে দেওয়া ধাপ গুলি অনুসরণ করে একটি সেরা, মূল্যবান এবং আকর্ষক অনলাইন কোর্স তৈরি করার পর, এখন তৈরি করা কোর্সটি আপনাকে বিক্রি করতে হবে। এক্ষেত্রে, আপনি বিভিন্ন কৌশল এবং পদক্ষেপ গুলি এপ্লাই করতে পারেন।

১. একটি আকর্ষণীয় প্রাইস স্ট্রাকচার:

আপনার কোর্স তখনই অধিক বিক্রি হবে যখন সেটা একটি উপযুক্ত এবং উচিত দামে বিক্রি করা হবে।

মনে রাখবেন, ১০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে থাকা যেকোনো কোর্স অনলাইনে অনেক তাড়াতাড়ি বিক্রি হয়ে যায়। কেননা, আপনার কোর্সটি কিরকম হবে এবং সেখানে সঠিক জ্ঞান এবং লেসন গুলি পাওয়া যাবে কি না সেটা আগের থেকে কেও অবশই জানবেনা।

তাই, অনেক সামান্য দাম থাকলে, একটি অনলাইন কোর্স কিনে নিতে অনেকেই কিন্তু অনেক বেশি ভাবেননা।

তবে আপনাকে আপনার কোর্সটি বিক্রি করে লাভ আয় করার বিষয়টাও মনে রাখতে হবে। মার্কেটিং এর খরচ, কোর্স তৈরির খরচ ইত্যাদি নানান খরচ গুলি বাদ দিয়ে কিছুটা প্রফিট এর সাথে আপনাকে প্রতিটি কোর্স বিক্রি করতে হয়।

ধরুন, আপনি গিটার শেখানো নিয়ে অনলাইন কোর্স তৈরি করলেন। এখন, আপনি আপনার কোর্সটি কেবল ২৫০ টাকায় অনলাইন মাধ্যমে ২০০০ লোকেদের কাছে বিক্রি করলেন। কত টাকা ইনকাম করলেন? হিসাব করে দেখুন দেখি। হ্যা, ৫ লক্ষ টাকা।

২৫০ টাকা দেখতে অনেক ছোট মনে হবে, তবে যদি একসাথে হাজার হাজার লোকেদের কাছে কোর্স বিক্রি করে প্রতি বিক্রিতে ২৫০ পেয়ে থাকেন, তাহলে ২৫০ থেকে ৫ লক্ষ হতে সময় লাগবেনা।

২. নিজের ওয়েবসাইট/ব্লগ সেটআপ:

আপনি অনেক সহজে নিজের একটি blog site বা course selling e-commerce ওয়েবসাইট তৈরি করে নিজের কোর্স বিক্রি করতে পারবেন। আপনি সরাসরি SEO-এর মাধ্যমে search engine থেকে ফ্রি ট্রাফিক এবং প্রচুর সম্ভাব্য গ্রাহক পেতে পারবেন।

মনে রাখবেন, একটি WordPress ওয়েবসাইট আপনি নিজেই তৈরি করতে পারবেন। এছাড়া, ওয়ার্ডপ্রেস এর মাধ্যমে আপনি যেকোনো ধরণের ব্লগ বা ওয়েবসাইট কিছু সময়ের মধ্যেই তৈরি করে নিতে পারবেন।

৩. ফেসবুক পেইড মার্কেটিং:

ফেসবুকে যেকোনো ধরণের বিষয়ে রুচি রাখা লক্ষ লক্ষ ইউসার আপনারা পাবেন।

বাচ্চা থেকে শুরু করে ছাত্রছাত্রী, বয়স্ক লোক, মহিলা, এবং নানান ধরণের মানুষ এই সোশ্যাল মিডিয়াতে সক্রিয় থাকেন। তাই, আপনি চাইলে ফেসবুককে কিছু টাকা দিয়ে পেইড মার্কেটিং করতে পারবেন।

ফেসবুক মার্কেটিং এর দ্বারা আপনি যেকোনো ধরণের কোর্স উপযুক্ত এবং সম্ভাব্য গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দিতে পারবেন। Facebook paid marketing-এর দ্বারা নিজের কোর্স এর বিজ্ঞাপন দেখিয়ে অনেক তাড়াতাড়ি এবং সহজেই প্রচুর গ্রাহক পেতে পারবেন।

৪. ইউটিউব পেইড ভিডিও মার্কেটিং:

ফেসবুকের মতোই ইউটিউব একটি অনেক জনপ্রিয় এবং বহুল ব্যবহৃত একটি সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম। তবে এখানে কেবল ভিডিও কনটেন্ট গুলি শেয়ার করা যায়।

এক্ষেত্রে, আপনি একটি ফ্রি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করে নিজের অনলাইন কোর্স এর সাথে রিলেটেড ভিডিও গুলি বানিয়ে শেয়ার করতে পারবেন। এতে, আপনার কোর্স এর বিষয়ে অনেকেই জেনেনিতে পারবেন এবং কোর্স এর জনপ্রিয়তা বাড়বে।

একইভাবে, ইউটিউবেও কিন্তু পেইড মার্কেটিং করার সুবিধা রয়েছে। আপনি গুগল/ইউটিউবকে কিছু টাকা দিয়ে নিজের কোর্স এর পেইড প্রচার চালাতে পারেন।

এতে, অনেক তাড়াতাড়ি এবং ঝটপট প্রচুর লোকেরা আপনার কোর্স এর বিষয়ে জেনেনিতে পারবেন।

৫. এফিলিয়েট মার্কেটিং মডেল:

অনলাইন কোর্স বিক্রি করে তাড়াতাড়ি ইনকাম করতে হলে, এই এফিলিয়েট মার্কেটিং প্রক্রিয়ার সাহায্য নিতে পারেন।

এফিলিয়েট মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে আপনাকে মূলত কমিশন স্ট্রাকচারে কাজ করতে হয়। মানে, আপনার কোর্স যেই ব্যক্তিদের দ্বারা বিক্রি করা হবে তাদেরকে আপনি কিছু টাকা কমিশন হিসেবে দিতে হবে।

কমিশন স্ট্রাকচার ভালো থাকলে, নানান ব্লগার এবং ইউটিউবাররা এমনিতেই আপনার প্রোডাক্ট তাদের অনলাইন প্লাটফর্মের মাধ্যমে শেয়ার এবং প্রচার করবেন।

৬. ইনস্টাগ্রাম মার্কেটিং:

বর্তমান সময়ে যেকোনো নতুন প্রোডাক্ট বা পরিষেবার ঝটপট প্রচার চালানোর জন্য বা সেগুলিকে বিক্রি করার জন্য ইনস্টাগ্রাম একটি অনেক দারুন এবং কার্যকর উপায় হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।

আপনি চাইলে নিজের একটি ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইল তৈরি করে সেখানে নিজের কোর্স এর বিষয়ে কনটেন্ট পোস্ট করতে পারবেন।

এছাড়া, ১০ হাজার থেকে অধিক ফলোয়ার থাকা নানান এডুকেশনাল ইনস্টাগ্রাম পেজের মালিকদের সাথে যোগাযোগ করে তাদেরকে সামান্য টাকা দিয়েও নিজের কোর্সের প্রচার চালাতে পারবেন।

এমনিতে, ফেসবুক এবং ইউটিউবের মতোই, ইনস্টাগ্রামেও পেইড মার্কেটিং করা যায়। মানে, টাকা দিয়ে ইনস্টাগ্রামে ঝটপট কোর্স প্রচার করা যাবে।

তবে, সামান্য বা কয়েক হাজার ফলোয়ার থাকা ইনস্টাগ্রাম পেজের মালিকদের অনেক সামান্য টাকা দিয়ে কোর্সের প্রচার চালানোর উপায়টি কিন্তু এক্ষেত্রে অনেক কাজে আসে।

অনলাইনে কোর্স সেল করে কত টাকা ইনকাম করা যাবে?

এই প্রশ্নের উত্তর এতটা সোজা না যদিও আমি চেষ্টা করবো যাতে সহজেই বুঝিয়ে দিতে পারি।

যদি আপনি এমন একটি বিষয় নিয়ে অনলাইন কোর্স তৈরি করছেন যেটার চাহিদা প্রচুর এবং অনেকেই এই বিষয়ে শিখতে ও জানতে চান, সেক্ষেত্রে আপনার কোর্স প্রচুর পরিমানে বিক্রি হতে পারে।

এছাড়া, লোকেরা যখন বাজেটের মধ্যে থেকে উপযুক্ত এবং যথেষ্ট মূল্য দিয়ে আপনার কোর্স কিনে নিতে পারবেন, সেক্ষেত্রে প্রচুর লোকেরাই আপনার কোর্স কিনতে আগ্রহী হবেন।

তাই, যদি আপনি অনলাইন কোর্স সেলিং ব্যবসার প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এবং টেকনিক গুলি নজরে রেখে সেই হিসেবে কাজ করে থাকেন তাহলে এই মাধ্যমে আনলিমিটেড টাকা ইনকামের সুযোগ রয়েছে।

ধরুন আপনি একটি কোর্স তৈরি করলেন, কোর্সটি আপনি ২০০ টাকা করে বিক্রি করছেন। ১ বছরের মধ্যে যদি ৫০০০ জন আপনার কোর্স কিনে থাকেন তাহলে ৫০০০*২০০= ১০,০০,০০০/- টাকা আপনি ইনকাম করে নিতে পারলেন।

এভাবেই, অনেক কম দামের কোর্স গুলিও যদি হাজার হাজার লোকেদের বিক্রি করা হয়, সেক্ষেত্রেও লক্ষ লক্ষ টাকা সহজেই ইনকাম করা যায়।

অনলাইন কোর্স বানিয়ে টাকা আয়:

তাহলে বন্ধুরা, আজকের আর্টিকেলের মধ্যে আমরা, কিভাবে একটি কোর্স বানিয়ে অনলাইনে বিক্রি করে টাকা ইনকাম করা যায় তার প্রতিটি ধাপ গুলি জানলাম। ইন্টারনেট থেকে টাকা ইনকাম করার এই উপায়টিতে আপনাকে শুরুতে কোর্স তৈরি করার সময় খানিকটা কষ্ট করতে হয়।

তবে, একবার কোর্স সম্পূর্ণ তৈরি হয়ে গেলে, সেই একই কোর্স বিক্রি করে পুরো বছর টাকা আয় করে নিতে পারবেন। এছাড়া, কোর্স তৈরি এবং সেলিং এর অভিজ্ঞতা একবার হয়ে গেলে, চিরকাল নতুন নতুন কোর্স বানিয়ে অনলাইন মাধ্যমে ইনকাম করতে থাকতে পারবেন।

আশা করছি আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি আপনাদের পছন্দ হয়েছে। আর্টিকেলের সাথে রিলেটেড কোনো ধরণের প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকলে, নিচে কমেন্ট করে অবশই জানিয়ে দিবেন।

অবশই পড়ুন:

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error:
Scroll to Top