যদি আপনারা এর মধ্যেই ফ্রিল্যান্সিং কাজ শুরু করে নিজের খালি সময়ে কাজ করে অনলাইনে পার্ট-টাইম ইনকাম করতে চাইছেন, তাহলে আপনারা অবশই কিছু জনপ্রিয় ও চাহিদা থাকা ফ্রিল্যান্সিং কাজ গুলোর বিষয়ে জেনেনিতে চাইবেন। কেননা, বর্তমান সময়ে এই কাজ গুলো জানা থাকলে অনেক তাড়াতাড়ি যেকোনো freelancing marketplace থেকে কাজ পাওয়া অনেক সোজা।
বর্তমান সময়ে ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি ? এই প্রশ্নটি করলে আমাদের কাছে মূলত ১১ থেকে ১২টি এমন কিছু কাজ গুলো থেকে থাকে যেগুলো জানা থাকলে কাজ তো তাড়াতাড়ি পাবেনই তবে এর সাথে ক্লায়েন্ট এর থেকে অধিক ফি (fee) চার্জ করা যাবে।
তাহলে একজন freelancer হিসেবে কোন কোন কাজ গুলো জানা থাকলে অনলাইনে তাড়াতাড়ি কাজ পাবেন ?
অধিক রোজগার করার ক্ষেত্রে কিছু চাহিদা থাকা ফ্রিল্যান্সিং কাজ গুলো কি কি ? চলুন নিচে জেনেনেই।
কোন ফ্রিল্যান্সিং কাজের চাহিদা বেশি ?
সেরা ও চাহিদা থাকা online freelance jobs গুলোর দ্বারা একজন freelancer নিজের হিসেবে জীবন কাটাতে পারেন। নিজের সুবিধা মতো কাজ নেওয়া, সুবিধামতো জায়গাতে বসে কাজ করা এবং ইচ্ছে না হলে কাজ নাকরা, সবটাই আপনার নিজের নিয়ন্ত্রণে থাকছে।
তবে এর জন্যে আপনাকে এমন একটি বা একাধিক চাহিদামূলক ফ্রিল্যান্সিং কাজ (freelancing work) জানা থাকতে হবে যার দ্বারা আপনি অনলাইন মার্কেটে থেকে কাজ তুলতে পারবেন।
তবে, ইন্টারনেটের অবদানের ফলে আজকাল যেকোনো একটি নতুন কৌশল শেখা আমাদের জন্যে অনেক সহজ ও সুবিধাজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নিচে আমি যেগুলো চাহিদামূলক ফ্রীল্যানসিং ওয়ার্ক গুলোর বিষয়ে বলতে চলেছি, সেগুলো যদি আপনারা শিখতে চান, তাহলে অনলাইনে কিছু মাসের মধ্যে শিখে নিতে পারবেন।
১. Web designer / web developer
যদি আপনি একজন freelancer এবং বিভিন্ন freelancing marketplace গুলোতে নিয়মিত কাজ খুঁজে থাকেন, তাহলে web designing-এর সাথে রিলেটেড অনেক কাজ গুলো দেখতে পাবেন। আজ প্রত্যেক কোম্পানি বা সংগঠন গুলোর নিজের একটি ওয়েবসাইট এর প্রয়োজন হয়ে থাকে।
আর এই কাজের জন্যে প্রয়োজন হয় একজন দক্ষ ওয়েব ডিজাইনারের। এই ধরণের কাজ গুলো নিয়মিত পেতে থাকবেন এবং সঠিক ভাবে কাজ করে সঠিক সময়ে জমা দিতে পারলে নিয়মিত অনলাইনে প্রচুর ইনকাম করা যাবে। ওয়েব ডিজাইনিং আপনারা অনলাইনে কেবল ২ মাসের মধ্যে শিখে নিতে পারবেন।
২. Graphic designer
গ্রাফিক্স ডিজাইনিং এর কাজে গুলোর চাহিদা অনলাইন মার্কেটে এখন সাংঘাতিক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। Marketing, advertising, reports, catalogs, brochures, newsletters, business cards, websites, product packaging, outdoor signage ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে কোম্পানি গুলো একজন দক্ষ freelance graphics designer হায়ার করে থাকেন। এছাড়া, গ্রাফিক্স ডিজাইনিং শিখতে বেশি সময় আপনার লাগবেনা। এই কাজের ক্ষেত্রে আপনাকে মূলত, Photoshop এবং Illustrator এর দক্ষতার (skills) প্রয়োজন হবে।
৩. Freelance writer
একজন দক্ষ freelance writer বা content writer-এর চাহিদা এখনের সময়ে সাংঘাতিক পরিমানে বৃদ্ধি পেয়েছে। ওয়েবসাইট, ব্লগ, কোম্পানি পেজ, সোশ্যাল মিডিয়া ইত্যাদি বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্ম গুলোর জন্যে আজ ফ্রিল্যান্স কনটেন্ট রাইটার দের হায়ার করা হচ্ছে। এখানে আপনাকে সুন্দর ভাবে SEO optimized article লিখার কৌশল এর প্রয়োজন হবে। তবে একজন ফ্রীল্যান্সার হিসেবে এই কাজ করে বিশ্বজুড়ে প্রচুর লোকেরা নিয়মিত প্রচুর টাকা অনলাইনে ইনকাম করছেন।
৪. App developer
আপনারা যদি mobile apps তৈরি করতে জানেন, তাহলে অনলাইনে প্রচুর কাজ পাবেন। আজকের বেশিরভাগ ব্যবসা বা কোম্পানিগুলো নিজেদের apps তৈরি করে থাকেন। আলাদা আলাদা কাজের জন্যে আলাদা আলাদা রকমের apps থেকে থাকে। বর্তমানে সবচেয়ে অধিক চাহিদা থাকা ও সবচে অধিক টাকা ইনকাম করার মতো ফ্রীল্যানসিং কাজ গুলোর মধ্যে একটি হলো, app তৈরি করার কাজ। আপনারা প্রায় ১ বছর সময় হাতে নিয়ে app development-এর কাজ শিখতে পারবেন।
৫. Software Developer
একজন সফটওয়্যার ডেভেলপার হিসেবে ফ্রীল্যানসিং কাজ করে আপনারা প্রচুর টাকা ইনকাম করার সুযোগ পাবেন। এই কাজে আপনাদের আলাদা আলাদা সফটওয়্যার প্রোগ্রাম গুলোকে ডিজাইন এবং ডেভেলপ করতে হবে। এর জন্যে আপনার coding, debugging, testing-এর অবশই থাকতে হবে।
এছাড়া, এই কাজে HTML, PHP, XML ইত্যাদিরও প্রয়োজন হবে। যদি একজন software developer হিসেবে আপনার ভালো অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা রয়েছে, তাহলে প্রচুর কাজ নিয়মিত পাবেন।
৬. Accountant
একজন accountant এর কাজ হলো ব্যক্তি বা কোম্পানির আর্থিক লেনদেন এবং অন্যান্য আর্থিক রেকর্ড গুলো নিয়মিত বজায় রাখা। এছাড়া, ledger accounts, balance sheets এবং P&L statements-তৈরি এবং financial reports তৈরি করার মতো কাজ গুলো আপনার করতে হবে। এই কাজ পাওয়ার জন্যে আপনার একটি bachelor’s degree-র প্রয়োজন অবশই হবে।
৭. Video editing
একজন ফ্রীল্যান্সার হিসেবে ভিডিও এডিটিং এর কাজ করেও অনেক উপার্জন করা সম্ভব। আজকাল প্রায় প্রত্যেক কোম্পানি, সংগঠন ইত্যাদির একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে থাকে। আর ভিডিও তৈরি করার পর সেগুলো এডিট করার জন্যে তারা আলাদা ভাবে একজন freelance video editor খুঁজে থাকেন। তাই, যদি আপনার ভিডিও এডিটিং নিয়ে অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা রয়েছে, তাহলে এই অধিক চাহিদা থাকা freelancing work আপনারা করতে পারেন।
৮. Social Media Managers
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হিসেবে আপনাকে ক্লায়েন্ট এর হয়ে তাদের official social media page / account গুলো পরিচালনা করতে হবে। পোস্ট লিখে পাবলিশ করা, কমেন্ট এর রিপ্লায়, শ্রোতাদের সাথে সংযোগ স্থাপন করা ইত্যাদি এই ধরণের কাজ গুলো আপনার করতে হবে।
৯. Voiceover
একজন ভয়েস ওভার আর্টিস্ট হিসেবে আপনাকে আপনাকে ক্লায়েন্ট এর হয়ে নিজের ভয়েস দিয়ে ভয়েস রেকর্ড করে অডিও কনটেন্ট তৈরি করতে হয়। সেটা হতে পারে কোনো পডকাস্ট বা ওয়েবসাইট কনটেন্ট বা মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে তৈরি করা মিডিয়া।
১০. Translation work
এরকম অনেক কোম্পানি বা সংগঠন গুলো রয়েছে যারা ফ্রীল্যান্সার দের দিয়ে বিভিন্ন অনুবাদ (translation) কাজ গুলো করে থাকেন। এখানে আপনাকে ইংরেজি থেকে বাংলা বা বাংলা থেকে ইংরেজি বা অন্যান্য কোনো ভাষাতে টেক্সট ফাইল গুলো অনুবাদ করতে দেওয়া হয়।
উপসংহার
তাহলে বন্ধুরা, ওপরে আমি আপনাদের কিছু অধিক চাহিদা থাকা ফ্রিল্যান্সিং ওয়ার্ক গুলোর বিষয়ে বললাম। আশা করছি আমাদের আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের অবশই পছন্দ হয়েছে। আর্টিকেলের সাথে জড়িত কোনোধরনের প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকলে কমেন্ট করে অবশই জানাবেন।
অবশই পড়ুন: