১২টি প্যাসিভ ইনকাম আইডিয়া যেগুলি জেকেও করতে পারবেন

Last updated on November 16th, 2023 at 06:35 pm

এই প্যাসিভ ইনকাম আইডিয়া গুলি আপনাকে রাতারাতি ধনী বানাতে না পারলেও অনেক সামান্য পরিমানের পরিশ্রম এবং সময় লাগিয়ে এই মাধ্যমে ভালো মানের টাকা রোজগার করার সুযোগ পেতে পারবেন। প্যাসিভ ইনকামের আসল সুবিধা বা লাভ হলো, আপনি নিজের চাকরি বা ব্যবসার পাশাপাশি নিজের খালি সময়কে কাজে লাগিয়ে এক্সট্রা টাকা ইনকাম করার সুযোগ পাবেন।

আর তাই আজকের এই আর্টিকেলের মধ্যে আমরা, প্যাসিভ ইনকামের এমন সেরা ১২টি আইডিয়া গুলি তুলে ধরেছি যেগুলি জেকেও শুরু করে মাস শেষে কিছুটা এক্সট্রা টাকা ইনকাম করে নিতে পারবেন।

প্যাসিভ ইনকাম কি – What Is Passive Income in Bengali

প্যাসিভ ইনকাম আইডিয়া
Passive income ideas in Bengali.

প্যাসিভ ইনকাম হলো এমন এক ধরণের ইনকামের রাস্তা বা উপায় যেখানে অনেক সামান্য পরিশ্রম এবং সময় লাগিয়ে একজন ব্যক্তি পার্ট-টাইম বা ফুল-টাইম হিসেবে টাকা ইনকাম করে থাকেন। এই ইনকামের ধরণটিকে মূলত একটি সাইড ইনকাম হিসেবে ধরা যেতে পারে।

মানে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একটি ফুল-টাইম চাকরি বা ব্যবসার পাশাপাশি একটি বা একাধিক উপায়ে প্যাসিভ ইনকাম করার মাধ্যমে প্রতি মাসে অতিরিক্ত বা সাইড ইনকাম জেনারেট করা হয়। আর এই ইনকামের ক্ষেত্রে তেমন বিশেষ সময় আপনাকে দিতে হয়না।

প্যাসিভ ইনকাম বলতে আবার এভাবেও বলা যেতে পারে,

এমন যেকোনো কাজ যেটিকে একবার ভালো করে করার পর সেই কাজ থেকে ভবিষ্যতে নিয়মিত ইনকাম করা যেতে পারে। যেমন ধরুন, আপনি কষ্ট করে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করলেন এবং সেই ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন লাগিয়ে ও এফিলিয়েট মার্কেটিং করে নিয়মিত ইনকাম করছেন।

সেরা ১২টি প্যাসিভ ইনকাম আইডিয়া গুলি কি কি?

এখন আপনিও যদি ভাবছেন, চাকরি বা ব্যবসার পাশাপাশি প্যাসিভ ইনকাম করার ক্ষেত্রে কি কি উপায় গুলিকে কাজে লাগানো যাবে, তাহলে এর সঠিক উত্তর আপনারা অবশই পাবেন। কেননা, নিচে আমি আপনাদের সাথে সেরা ১২টি প্যাসিভ ইনকামের উপায় গুলির বিষয়ে বলতে চলেছি।

মনে রাখা দরকার যে, এই প্যাসিভ ইনকামের উপায় গুলি জেকেও কাজে লাগাতে পারবেন এবং নিয়মিত টাকা ইনকাম করার সুযোগ পেতে পারবেন। তবে যেকোনো অন্য কাজের মতোই এক্ষেত্রে আপনাকে কাজের ধরণ, নিয়ম, প্রক্রিয়া এবং কাজের সাথে জড়িত নানান কৌশল গুলির বিষয়ে জ্ঞান অবশই রাখতে হবে।

১. ডিজিটাল প্রিন্টিং পরিষেবা:

আপনার মধ্যে যদি ডিজাইনিং নিয়ে ভালো জ্ঞান রয়েছে বা ডিজাইনিং রিলেটেড সাধারণ জ্ঞান আছে, তাহলে একটি প্রিন্ট-অন-ডিমান্ড স্টোর অবশই খুলতে পারবেন।

এটা অবশই আপনার জন্য একটি অনেক লাভজনক ইনকামের উপায় হয়ে দাঁড়াতে পারে। বর্তমান সময়ে অনেকেই আছেন যারা নিজের পছন্দের ছবি বা ডিজাইন গুলি নানান পণ্য, টিশার্ট, কাপ ইত্যাদিতে প্রিন্ট করিয়ে সেগুলিকে কাস্টমাইজ করতে চান।

এক্ষেত্রে, আপনাকে সামান্য টাকা খরচ করে একটি 3D printing machine কিনে আনতে হয় এবং এর পর এই একটি মেশিন দিয়ে নিয়মিত ইনকাম করতে থাকতে পারবেন।

২. ডিজিটাল পণ্য বিক্রি করুন:

বর্তমান সময়ে ইন্টারনেট এর ব্যবহার প্রত্যেকেই করে থাকেন।

এক্ষেত্রে যেকোনো ধরণের ডিজিটাল পণ্য গুলি অনলাইনে প্রচার করে বিক্রি করানোর কাজটা অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে। কিছু জনপ্রিয় ডিজিটাল পণ্য গুলি হলো, Kindle books, templates, plug-ins, PDF ইত্যাদি।

এগুলিকে কষ্ট করে একবার বানিয়ে নিতে পারলে, লক্ষ লক্ষ গ্রাহকদের কাছে এই একই ডিজিটাল কনটেন্ট বিক্রি করে নিয়মিত প্যাসিভ ইনকাম করার সুযোগ পেতে পারবেন।

এছাড়া, ডিজিটাল পণ্য বিক্রি করার এই কাজটি প্যাসিভ ইনকামের একটি অনেক দারুন ও কার্যকর উপায় বলা যেতেই পারে। কেননা, এই পণ্য গুলির মধ্যে অনেক উচ্চ পরিমানের প্রফিট মার্জিন পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

৩. অনলাইন কোর্স বিক্রি করুন:

অনলাইনে কোর্স বিক্রি করার মাধ্যমে হাজার হাজার লোকেরা নিয়মিত প্যাসিভ ইনকামের সুযোগ পাচ্ছেন। এক্ষেত্রে আপনাকে একটি ট্রেন্ডিং বিষয়ে ভিডিও কোর্স তৈরি করতে হবে এবং সেটিকে সোশ্যাল মিডিয়া, ব্লগ, বিজ্ঞাপন, ওয়েবসাইট ইত্যাদি যেকোনো মাধ্যমে প্রচার করতে হবে।

একবার তৈরি করা আপনার এই একি ভিডিও কোর্স একসাথে হাজার হাজার লোকেদের কাছে বিক্রি করে অনলাইনে নিয়মিত রোজগার করা যাবে। ডিজিটাল মার্কেটিং, এফিলিয়েট মার্কেটিং, ব্লগিং, অনলাইন ইনকাম, গান বা গিটার, এক্সেল, ইত্যাদি এই ধরণের জনপ্রিয় বিষয় সিলেক্ট করে কোর্স বানাতে পারবেন।

৪. এফিলিয়েট মার্কেটিং ব্যবসা:

এফিলিয়েট মার্কেটিং, একটি অনেক জনপ্রিয় এবং কার্যকর উপায় যেটিকে কাজে লাগিয়ে অনেকেই প্যাসিভ ইনকাম করছেন। এখানে আপনাকে নানান কোম্পানি গুলির পণ্য এবং পরিষেবা গুলিকে প্রচার ও বিক্রি করিয়ে কমিশন ইনকাম করার সুযোগ দেওয়া হয়। আপনি নিজের ওয়েবসাইট, সোশ্যাল মিডিয়া পেজ, ব্লগ ইত্যাদির দ্বারা অনেক সহজে এবং অধিক পরিমানে পণ্যের প্রচার চালাতে পারবেন।

৫. ইউটিউবে ভিডিও পাবলিশ করুন:

ইউটিউবে একটি চ্যানেল বানিয়ে কিছুদিন নিয়মিত ভিডিও পাবলিশ করে সেই পাবলিশ করা ভিডিও গুলি দিয়ে চিরকাল টাকা ইনকাম করার সুযোগ পেতে পারবেন।

আপনি আজকে যেই ভিডিওটি আপলোড করবেন, সেই ভিডিওটিতে যতদিন পর্যন্ত ভিউস আসবে, বিজ্ঞাপন বা এফিলিয়েট মার্কেটিং দ্বারা আপনি ইনকাম করতে থাকতে পারবেন। প্যাসিভ ইনকামের নানান আইডিয়া গুলির মধ্যে এটা আমার সব থেকে প্রিয় উপায়।

এমনিতে কিভাবে ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করা যাবে, সেই বিষয়ে আমি আগেই আপনাদের বলেছি। সেই আর্টিকেলে সম্পূর্ণ বিস্তারিত ভাবে বলা হয়েছে।

৬. ঘর/দোকান ভাড়া দিন:

আপনার কাছে যদি কোনো খালি ঘর বা রুম থাকে থাকে তাহলে সেই ঘর ভাড়া হিসেবে দিয়েও প্যাসিভ ইনকাম করা যেতে পারে। এছাড়া, যদি আপনার ঘরে বা এরিয়াতে কোনো খালি জায়গা আছে তাহলে সেখানে ছোট ছোট রুম বানিয়ে দোকান, গোডাউন ইত্যাদি হিসেবে সেগুলি ভাড়া দিতে পারেন। একবার ঘর বানিয়ে সেই ঘর ভাড়া দিয়ে চিরকাল নিয়মিত ইনকাম করতে থাকতে পারবেন।   ৭. অনলাইনে ছবি বিক্রি করুন:

৮. অ্যাপ তৈরি করে ইনকাম:

বর্তমান সময়ে নানান ধরণের অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস তৈরি করে সেগুলিতে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে এবং ইন-অ্যাপ-পারছেজ এর দ্বারা প্রচুর টাকা ইনকাম করা যেতে পারে।

একবার কিছু টাকা লাগিয়ে একটি অ্যাপস তৈরি করতে পারলেই সেই অ্যাপস দিয়ে চিরকাল কোনো কাজ না করেই প্যাসিভ ইনকাম করতে পারবেন। অবশই, কি ধরণের অ্যাপস তৈরি করলে সেটা লোকেরা পছন্দ করবেন সেটা নিয়ে কিছুটা মাথা লাগাতে হবে।

এছাড়া, কিভাবে একটি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ তৈরি করবেন, সে নিয়েও ভাবতে হবে।

অবশই পড়ুন: অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ তৈরি করে কিভাবে আয় করবেন?

৯. সোশ্যাল মিডিয়া থেকে আয়:

Facebook, Instagram ইত্যাদি এই ধরণের social media platform গুলিতে যদি একটি শক্তিশালী ফলোয়ার বেস তৈরি করতে পারেন, তাহলে এই সোশ্যাল মিডিয়া গুলির থেকেও নিয়মিত ইনকামের সুযোগ পাবেন। এমন প্রচুর ব্যক্তিরা রয়েছেন যাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলে হাজার হাজার likes বা followers রয়েছে।

এরা, তাদের সোশ্যাল পেজে নানান ধরণের বিজ্ঞাপন দেখিয়ে, পেইড পোস্ট পাবলিশ করে এফিলিয়েট মার্কেটিং করে, স্পন্সরড পোস্ট ইত্যাদি নানান মাধ্যমে প্যাসিভ ইনকাম করার সুযোগ নিচ্ছেন।

অবশই পড়ুন: 

১০. স্টক মার্কেটে ইনভেস্ট:

স্টক মার্কেটে টাকা লাগিয়ে নিয়মিত ইনকাম করাটা যদিও একটি অনেক ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়, তবে এই মাধ্যমে অনেকেই প্যাসিভ ইনকাম করছেন। স্টক মার্কেট কিভাবে কাজ করে এবং এখানে টাকা লাগানোর আগে আপনাকে কি কি জানা দরকার সেই বিষয়ে খানিকটা রিসার্চ করে প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও কৌশল অর্জন করতেই হবে।

১১. ডোমেইন কেনা/বেচা করা:

হাই অথরিটি থাকা ডোমেইন নাম কেনা বেচার মাধ্যমেও আপনি প্যাসিভ ইনকাম করতে পারবেন।

এক্ষেত্রে আপনাকে এমন ডোমেইন নাম গুলি কিনে রাখতে হয় যেগুলির চাহিদা ভবিষ্যতে বাড়তে পারে। যখনি সেই ডোমেইন নাম গুলির চাহিদা অনেক বাড়বে, অনেকেই আপনাকে সেই ডোমেইন গুলি আপনার থেকে কেনার জন্য অধিক টাকা অফার করবেন।

১২. অনলাইনে ছবি বিক্রি করুন:

 

 

আমরা আজকে কি শিখলাম?

তাহলে বন্ধুরা, আজকের এই আর্টিকেলের দ্বারা আমরা জানলাম প্যাসিভ ইনকাম কি এবং সেরা কিছু প্যাসিভ ইনকাম আইডিয়া গুলির বিষয়ে। এমনিতে, অফলাইনের তুলনায় অনলাইনে প্যাসিভ ইনকামের অন্যান্য প্রচুর উপায় গুলি আপনারা পাবেন। তবে মনে রাখা দরকার যে, টাকা ইনকাম করার জন্য শুরুতে বা প্রথম দিকে আপনাকে কষ্ট ও পরিশ্রম করতে হয় এবং খানিকটা সময় অবশই দিতে হয়। একবার যখন ইনকামের রাস্তা তৈরি হয়ে যাবে তখন কোনো কাজ না করলেও নিয়মিত ইনকাম হতে থাকবে।

 

অবশই পড়ুন:

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error:
Scroll to Top