ফেসবুক থেকে কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায়: ৯টি উপায়ে – (২০২৪)

ফেসবুক থেকে কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায়! ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করার উপায় গুলো কি কি? আজকের আর্টিকেলের মধ্যে আমরা এই বিষয়ে সম্পূর্ণ বিস্তারিত ভাবে জানবো। আমাদের এই আর্টিকেলে, ফেসবুক থেকে টাকা আয় করার সমস্ত লাভজনক এবং জনপ্রিয় উপায়গুলো নিচে তালিকাভুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।

ফেসবুক থেকে কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায়
How To Earn Money From Facebook?

ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিকশিত এই বিশ্বে, ফেসবুক, অনলাইনে অর্থ উপার্জনের একটি পাওয়ার হাউস হিসাবে প্রমাণিত হচ্ছে। আর মজার বিষয়টি এটাই যে, এখন ফেসবুকের মাধ্যমে আপনিও চাইলে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

একজন স্টুডেন্ট, মহিলা বা যেকোনো ব্যক্তি যে নিজের খালি সময়ে অনলাইনে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে টাকা ইনকাম করতে চাইছেন তারা অবশই ফেসবুক থেকে একাধিক টাকা আয় করে নিতে পারবেন।

Facebook Ads revenue, affiliate marketing, Facebook Shop করা থেকে Facebook Marketplace সেটআপ করে সেখান থেকে টাকা আয় করা, ফেসবুক থেকে আয়ের জন্য বিভিন্ন উপায় গুলো আপনারা কাজে লাগানো যেতে পারে।

সূচিপত্র:

ফেসবুক থেকে কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায়? ইনকামের ৯টি উপায়

২০২৪ সালে, Facebook থেকে টাকা ইনকাম করার উপায় বলতে সে নানান উপায় গুলোই রয়েছে। সত্যি বলতে ফেসবুক এখন আর শুধুমাত্রই একটি অনলাইন সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম হয়ে থাকেনি যেখানে শুধুমাত্র অনলাইন চ্যাটিং বা ছবি/ভিডিও শেয়ার করার মতো কাজ গুলো করা হতো, বর্তমানে এটি এমন একটি জায়গা বা সুযোগ যেখান থেকে নিয়মিত অর্থ উপার্জন করা যেতে পারে।

কিভাবে? চিন্তা করতে হবেনা, আজকের আর্টিকেলের মধ্যে সবটাই একে একে জেনেনিতে পারবেন। ফেসবুক থেকে ইনকাম করার এমনিতে আলাদা আলাদা উপায় গুলো রয়েছে।

উদাহরণ স্বরূপ, ধরুন আপনি কোনো ধরণের ডিজিটাল বা যেকোনো ধরণের প্রডাক্ট বা পরিষেবা অনলাইন মাধ্যমে বিক্রি করিয়ে রোজগার করতে চাইছেন, সেক্ষেত্রে Facebook Ads বা Facebook marketplace ব্যবহার করতে পারবেন আপনি। এছাড়া, ফেসবুকের মধ্যে আপনি নিজের একটি অনলাইন শপ ও সেটআপ করে নেওয়া যাবে।

আয় করার উপায়:আনুমানিক ইনকাম:
১. ফেসবুক মার্কেটপ্লেস থেকে উপার্জনপ্রায় ৫,০০০ – ৫০,০০০ ইনকাম করা যায়।
২. একটি ফেসবুক পেজ তৈরি করেমাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা আয়
৩. ফেসবুকে ভিডিও কনটেন্ট মনেটাইজ করুন২,০০০ থেকে ১৫,০০০ ইনকাম।
৪. পেইড সোশ্যাল মিডিয়া প্রমোশনমোটামোটি ৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার।
৫. নিজের কোনো পণ্য বিক্রি২ হাজার থেকে ২০ হাজার আয়।
৬. কোম্পানির ফেসবুক পেজ ম্যানেজআনলিমিটেড ইনকাম করা যায়।
৭. ফেসবুকে পেইড ইভেন্ট চালানো২০ থেকে ৫০ হাজার উপার্জন।
৮. নিজের ব্লগ/ওয়েবসাইটে ট্রাফিক প্রেরণ করাআনলিমিটেড ইনকামের সুযোগ আছে।
৯. পেইড সাবস্ক্রিপশন যুক্ত করাযত সাবস্ক্রাইব হবে টোটো ইনকাম।

যদি আপনি ফেসবুকে প্রচুর জনপ্রিয়তা লাভ করেছেন, আপনার প্রচুর লাইক, ফেসবুক ফ্রেন্ড বা ফলোয়ার্স আছে, সেক্ষেত্রে নানান ব্র্যান্ড/কোম্পানি গুলোর পণ্যগুলোর বিষয়ে নিজের পোস্ট গুলোতে উল্লেখ করেও ফেসবুক দিয়ে টাকা ইনকাম করা যায়।

এছাড়াও, যদি আপনি নিজের ফেসবুক আইডিতে নিয়মিত ভালো ভালো আর্টিকেল বা ভিডিও কনটেন্ট গুলো আপলোড করে থাকেন, সেক্ষেত্রেও সেই কনটেন্ট গুলোর সাথে ফেসবুক বিজ্ঞাপন (Facebook Ads) দেখিয়েও টাকা ইনকাম করা যেতে পারে।

আজকের আর্টিকেলের মধ্যে আমি, ফেসবুক থেকে কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায় তার কিছু সেরা ও কার্যকর উপায় গুলোর বিষয়ে বলতে চলেছি। এই উপায় গুলোকে কাজে লাগিয়ে ফেসবুক থেকে অর্থ উপার্জন করাটা সত্যি অনেক সহজ এবং সম্ভব।

ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করার উপায় গুলোর বিবরণ: সহজে বুঝে নিন

নিজের ফেসবুক আইডি থেকে ইনকাম করার কি কি আসল এবং কার্যকর উপায় গুলো বর্তমান সময়ে উপলব্ধ রয়েছে, সেই বিষয়ে উপরে একে একে বলে দেওয়া হয়েছে। চলুন, এবার আমরা নিচে সরাসরি প্রতিটি উপায় গুলোর বিষয়ে বিস্তারিত জেনেনেই।

এটা অবশই মনে রাখা জরুরি যে, ফেসবুক দিয়ে টাকা ইনকাম করার প্রতিটি উপায় হয়তো আপনার পছন্দ হবেনা। এক্ষেত্রে, আপনার যেই ইনকামের উপায়টি সব থেকে অধিক পছন্দ হবে বা যেই উপায়টির সাথে আপনি আগের থেকে কিছুটা পরিচিত, সেটাই ব্যবহার করার পরামর্শ আমি আপনাকে দিবো।

১. ফেসবুক মার্কেটপ্লেস থেকে ইনকাম:

আমার হিসেবে, ফেসবুক থেকে টাকা আয় করার সব থেকে দ্রুততম, সোজা এবং কার্যকর উপায় গুলোর মধ্যে একটি হলো, Facebook Marketplace। ফেসবুকের এই প্লাটফর্মটি ব্যবহার করে আপনি অনেক সহজেই দৈনিক ৪০০-৫০০ টাকা ইনকাম করতে থাকতে পারবেন।

কিভাবে? চলুন নিচে বিষয়টা স্পষ্টভাবে জেনেনেই।

Facebook marketplace হলো, ফেসবুকের তরফ থেকে দিয়ে দেওয়া এমন একটি অনলাইন প্লাটফর্ম যেখানে গিয়ে যেকোনো ফেসবুক ইউজার তাদের পছন্দমতো products এবং services গুলোকে অন্যান্য ফেসবুক ইউজারদের কাছে প্রচার ও সরাসরি বিক্রি করতে পারবেন।

একজন সেলার হিসেবে এখানে আপনি যেকোনো ধরণের পণ্য গুলো বিক্রি করতে পারবেন। জামা-কাপড়, ইলেকট্রনিক্স, মোবাইল, কম্পিউটার, জুতা বা যেকোনো ধরণের পণ্য। এছাড়া, ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে পণ্য বিক্রি করার জন্য, একজন বিক্রেতা হিসাবে আপনাকে কোনো ধরণের নির্দিষ্ট প্রয়োজনীয়তাগুলো পূরণ করতে হবে না।

মানে, সরাসরি যেকোনো পণ্য এই প্লাটফর্ম দ্বারা বিক্রি করা যাবে।

মনে রাখবেন, চাহিদায় থাকা বা ট্রেন্ডিং প্রোডাক্ট গুলো সিলেক্ট করে যদি এই কাজ শুরু করা যেতে পারে, তাহলে ফেসবুক মার্কেটপ্লেস থেকে ৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা ইনকাম করাটা কোনো বড় ব্যাপার মোটেও না।

Facebook Marketplace থেকে ইনকামের সুবিধা:

  • ফেসবুক মার্কেটপ্লেস দ্বারা বিশ্বজুড়ে অসংখ্য নতুন নতুন গ্রাহকদের সাথে সংযুক্ত হতে পারবেন।
  • অন্যান্য ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম গুলোর মতো এখানে আপনাকে কোনো ধরণের টাকা দিতে হয়না। এটা সম্পূর্ণ ফ্রি।
  • স্থানীয় গ্রাহকদের খুঁজে পাওয়া এবং তাদের কাছে পণ্য বিক্র ও ডেলিভারি করার প্রক্রিয়াটি অনেক সহজ হয়ে যায়।
  • প্রোডাক্ট লিস্ট করার প্রক্রিয়াটি অনেকটাই সোজা। প্রতিটি পণ্যের ছবি এবং ডেসক্রিপশন সহজে যুক্ত করা যায়।
  • বিক্রেতা এবং গ্রাহক, সরাসরি ফেসবুকের দ্বারা যোগাযোগ করতে পারেন।

২. একটি ফেসবুক পেজ থেকে টাকা ইনকাম:

যেকোনো বিষয়ে একটি ফেসবুক পেজ তৈরি করে যদি সেই পেজে ১০ থেকে ২০ হাজার মতো ফলোয়ার্স নিয়ে আসতে পারেন, তাহলে তৈরি করা নিজের ফেসবুক পেজ থেকেও নানান উপায়ে অর্থ উপার্জন করে নিতে পারবেন।

ইনকাম করার জন্য কি করতে হবে আপনাকে?

সবচেয়ে আগেই আপনাকে নিজের একটি ফেসবুক পেজ তৈরি করে নিজের একটি শক্তিশালী ফলোয়ার বেস তৈরি করুন। শুরুতে মোটামোটি ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার ফলোয়ার্স থাকলে ভালো। এবার, পেজে যুক্ত থাকা ফলোয়ার্স/শ্রোতাদের পছন্দ বা ইন্টারেস্ট এর উপর লক্ষ্য রেখে নিয়মিত আকর্ষক কনটেন্ট (আর্টিকেল, ইমেজ, ভিডিও, গ্রাফিক্স) গুলো পোস্ট করতে থাকুন।

এতে আপনার পেজের ফলোয়ার্স সংখ্যা এবং ব্যস্ততা দুটোই ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করবে। এবার আপনি আপনার পেজে একটিভ থাকা ইউজার/ফলোয়ার্সদের কাজে লাগিয়ে এফিলিয়েট মার্কেটিং, Facebook Ad Breaks, E-book, নিজের অনলাইন কোর্স বিক্রি, ডিজিটাল পণ্য বিক্রি, ইত্যাদি নানান মাধ্যমে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

ফেসবুক পেজ থেকে আয় করার সুবিধা গুলো:

  • নিজের পেজে, ছোট-বড় ব্র্যান্ড/কোম্পানি গুলোর পণ্যগুলো প্রচার করে ইনকাম করতে পারবেন।
  • একবার ১০ থেকে ১৫ হাজার ফলোয়ার্স হয়ে গেলে ইনকামের একাধিক উপায় গুলো কাজে লাগানো যায়।
  • নিজের ভিডিও কোর্স বানিয়ে সরাসরি ফেসবুক পেজ দ্বারা বিক্রি করতে পারবেন।
  • ফেসবুক পেজ থেকে ব্লগ সাইটে ট্রাফিক প্রেরণ করে গুগল এডসেন্স থেকে ইনকাম করা যাবে।
  • ফলোয়ার্স বাড়তে থাকলে ইনকামের পরিমাণও বাড়তে পারে।
  • স্থানীয় দর্শকদের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক দর্শকদের সাথেও সংযুক্ত হওয়া যাবে।

৩. ফেসবুকে ভিডিও কনটেন্ট মনেটাইজ করুন:

facebook থেকে টাকা আয় করার উপায়

আপনি কি জানেন, এখন ইউটিউবের মতোই ফেসবুকেও ভিডিও আপলোড করে টাকা ইনকাম করা যেতে পারে? বিষয়টা আপনি এখনো ভালোভাবে জানেননা হয়তো।

আসলে এক্ষেত্রে সবচেয়ে আগেই আপনাকে নিজের ফেসবুক পেজের মধ্যে মজার মজার এবং ইউজাররা দেখে পছন্দ করেন, এমন ভিডিও গুলোকে নিয়মিত আপলোড করতে হবে। ভিডিও তৈরি বা আপলোড করার ক্ষেত্রে আপনারা যেকোনো টপিক সিলেক্ট করতে পারেন। যেমন, কোনো ফানি ক্লিপ, খাওয়ার বানানোর ভিডিও, টিউটোরিয়াল ভিডিও বা যেকোনো ধরণের শিক্ষামূলক ভিডিও।

এবার দ্বিতীয় ধাপে আপনাকে জয়েন করতে হবে, Facebook In-stream ads Program-টি। এতে, আপনি ফেসবুকে আপলোড করা আপনার প্রতিটি উপযুক্ত ভিডিওতে In-stream ads (বিজ্ঞাপন) দেখিয়ে নিয়মিত টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

মনে রাখবেন: In-stream ads গুলো হলো কিছু ছোট ছোট বিজ্ঞাপন যেগুলোকে আপনার ভিডিওগুলির মাঝে মাঝে দর্শকদের দেখানো হবে। সব থেকে মজার বিষয় এটাই যে, আপনার ভিডিও গুলোতে দেখানো এই ছোট ছোট বিজ্ঞাপন (In-stream ads) গুলোর জন্য আপনাকেও বিজ্ঞাপন থেকে ইনকাম হওয়া টাকার কিছুটা অংশ ফেসবুক দ্বারা দিয়ে দেওয়া হবে।

এছাড়া, In-stream ads (বিজ্ঞাপন) গুলোতে যত অধিক ভিউ হবে, ততটাই অধিক ইনকাম করতে পারবেন আপনি।

তাই, যদি আপনার ফেসবুক পেজে প্রচুর সংখ্যায় ফলোয়ার্সরা রয়েছেন এবং আপনি নিয়মিত ভালো ভালো এবং শ্রোতাদের পছন্দমতো ভিডিও গুলো বানিয়ে আপলোড দিচ্ছেন, তাহলে ফেসবুক In-stream ads থেকে প্রতিমাসে ২,০০০ থেকে ১৫,০০০ টাকা আরামে ইনকাম করে নিতে পারবেন।

ফেসবুক In-stream ads দ্বারা ইনকাম করার জন্য প্রয়োজনীয়তা গুলো:

আপনার ফেসবুক পেজে আপলোড করা ভিডিও গুলো Facebook In-stream ads-দ্বারা মনেটাইজ করা যাবে কি না সেই সিদ্ধান্ত নিবে ফেসবুক, আর এর জন্য সবচেয়ে আগেই আপনার পেজটিকে কিছু সাধারণ প্রয়োজনীয়তা গুলো অবশই পূরণ করতে হবে।

  • আপনার ফেসবুক পেজে কমেও ১০ হাজার ফলোয়ার্স থাকতে হবে।
  • গত ৬০ দিনে মিনিমাম ৬ লক্ষ মিনিট এর ভিডিও ভিউ।
  • ৬ লক্ষ মিনিট এর ভিউ এর মধ্যে কমেও ৬০ হাজার মিটিত লাইভ ভিডিও থেকে হতে হবে।
  • আপনার ফেসবুক পেজে কমেও ৫টি একটিভ ভিডিও থাকতে হবে।

৪. পেইড সোশ্যাল মিডিয়া প্রমোশন:

ফেসবুক এর মতো এতটা জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম এর মধ্যে যেকোনো ব্র্যান্ড, কোম্পানি বা ব্যক্তি তাদের পণ্য এবং পরিষেবা গুলোর প্রচার অবশই করতে চান। এবার, আপনার ফেসবুক পেজ বা গ্রুপ এর মধ্যে যদি ১০ থেকে ৫০ হাজারের মধ্যে ফলোয়ার্স যুক্ত রয়েছে, সেক্ষেত্রে আপনিও এই ধরণের প্রচুর অফার গুলো পাবেন।

কোম্পানি গুলো আপনাকে তাদের ব্র্যান্ড বা পণ্যের সাথে রিলেটেড কনটেন্ট পোস্ট করতে বলে থাকেন। এতে, কোম্পানি গুলোর পণ্য বা পরিষেবাগুলো কিছুক্ষণের মধ্যেই কয়েক হাজার লোকেদের সামনে প্রচার করা যায় এবং এক্ষেত্রে প্রতিটি পেইড প্রমোশন বা পেইড পোস্ট এর জন্য আপনি কোম্পানি গুলোর থেকে মোটা টাকা আদায় করে নিতে পারেন।

ফেসবুক এর পাশাপাশি, ইনস্টাগ্রাম রিল থেকে টাকা ইনকাম করার ক্ষেত্রেও এই পেইড সোশ্যাল মিডিয়া প্রোমোশন এর উপায়টি প্রচুর কার্যকর এবং লাভজনক হিসেবে প্রমাণিত হয়ে এসেছে। এই একই প্রক্রিয়াটিকে আবার পেইড স্পনসরশিপ বলেও বলা হয়ে থাকে।

৫. নিজের কোনো পণ্য বিক্রি করে ইনকাম:

এখন আপনারা এটা তো অনেক ভালো করেই বুঝে গিয়েছেন যে, নিজের ফেসবুক আইডি থেকে ইনকাম করার ক্ষেত্রে একটি ফেসবুক পেজ এবং পেজে হাজার হাজার ফলোয়ার্স থাকাটা অনেক জরুরি এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।

এবার, যদি আপনি একটি FB পেজ তৈরি করেছেন এবং আপনার পেজে হাজার হাজার ফলোয়ার্স আছে, সেক্ষেত্রে আপনি নিজের কোনো পণ্য বা পরিষেবা ফেসবুক এর মাধ্যমে বিক্রি করে নিয়মিত প্যাসিভ ইনকাম করতে থাকতে পারবেন।

উদাহরণ সরুন: আমার একটি ফেসবুক পেজ আছে যেখানে আমি ব্লগ তৈরি, SEO, ওয়েবসাইট ডিজাইন, ইত্যাদি এই ধরণের টপিক গুলো নিয়ে কনটেন্ট পাবলিশ করে থাকি। এবার, কিছুদিন আগেই আমি আমার ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট করেছি যেখানে বলা হয়েছিল যে, “শুধুমাত্র ৩৫০০ টাকা দিয়ে তৈরি করে নিন নিজের কোম্পানির জন্য একটি দারুন ওয়েবসাইট”।

এবার, আপনি বিশ্বাস করবেন কি না সেটা আপনার উপর, তবে সেই একটি পোস্ট থেকে আমি ৭টি ক্লায়েন্ট পেয়ে গিয়েছি। মনে রাখবেন, আমার ফেসবুক পেজের মধ্যে তুলনামূলক ভাবে প্রচুর কম সংখ্যায় ফলোয়ার্স রয়েছে। আবার তাতেই আমি ৭টি ক্লায়েন্ট/অর্ডার পেয়ে গিয়েছি। যদি আমার পেজে কমেও ১০ থেকে ২০ হাজার ফলোয়ার্স থাকতো, তাহলে সেই একটি পোস্ট থেকেই প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ অর্ডার পেয়ে যেতাম।

তাই, এখানে বলার মানে এটাই যে, ফেসবুকে একটিভ থাকা শ্রোতাদের কাছে আপনি নানান পণ্য এবং পরিষেবা গুলো বিক্রি করেও ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করে নিতে পারবেন।

৬. কোম্পানির ফেসবুক পেজ ম্যানেজ:

একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে ফেসবুকে টাকা ইনকাম করার উপায় এমনিতে প্রচুর রয়েছে, আর উপরে আমি এদেরমধ্যে বেশিরভাগ উপায় গুলোর বিষয়েই আপনাদের বলেছি।

তবে এমন অনেকেই আছেন যারা শুধুমাত্র নানান কোম্পানি/ব্র্যান্ড এবং Facebook Influencer-দের ফেসবুক পেজ গুলো ম্যানেজ করে নিয়মিত কিছু অতিরিক্ত টাকা উপার্জন করে নিচ্ছেন।

এবার, আপনার কাছে যদি অধিক ফ্রি টাইম থেকে থাকে, তাহলে এক্ষেত্রে আপনিও একাধিক ব্র্যান্ড এর পেজ গুলোকে একসাথে ম্যানেজ করে এই কাজ থেকে আনলিমিটেড টাকা ইনকাম করে নিতে পারবেন। তবে মনে রাখবেন, যেকোনো brand বা influencer আপনাকে এমনিতে এই কাজ দিয়ে দিবেনা।

এক্ষেত্রে, আপনার কাছে ফেসবুক পেজ ম্যানেজ করার দারুন দক্ষতা এবং ফেসবুক মার্কেটিং সম্পর্কিত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। আসলে, বড় বড় কোম্পানি গুলো তাদের ব্র্যান্ড এর সোশ্যাল মিডিয়া পেজ গুলোকে পরিচালনা করার ক্ষেত্রে ইন-হাউস কর্মীদের তুলনায় ঘরে থেকে কাজ করানো যাবে এমন ফ্রিল্যান্সারদের দ্বারা এই কাজ গুলো করিয়ে থাকেন।

৭. ফেসবুকে পেইড ইভেন্ট চালানো:

ফেসবুকের মধ্যে Facebook paid events নামের একটি নতুন ফীচার যুক্ত করা হয়েছে। এই ফীচারের দ্বারা আপনি আপনার ফেসবুক পেজ থেকেই একটি অনলাইন ইভেন্ট (লাইভ স্ট্রিম) সেটআপ এবং ইভেন্ট এর সময়সূচী নির্ধারিত করতে পারবেন। এতে, আপনার পেজ ফলোয়ার্সরা চাইলে কিছুটা টাকা দিয়ে আপনার লাইভ ইভেন্টটি যেকোনো জায়গার থেকে উপভোগ করতে পারবেন।

এভাবে আপনি সামান্য কিছু টাকা চার্জ করে যেকোনো ধরণের লাইভ ভিডিও ইভেন্ট নিজের ফেসবুক পেজে হোস্ট করতে পারবেন। খাবার বানানো, টিউটোরিয়াল, শিক্ষাগত তথ্য, বিনোদন, ইত্যাদি যেকোনো ধরণেরই ইভেন্ট হোস্ট করা যাবে।

ফেসবুকে চালানো আপনার পেইড ইভেন্ট গুলোর থেকে আপনি কত টাকা ইনকাম করবেন, সেটা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করছে ইভেন্ট পারচেজ করা মোট ব্যক্তিদের উপর। যত অধিক লোকেরা আপনার ইভেন্ট জয়েন করবেন ততই অধিক টাকা আপনার পকেটে ঢুকবে।

৮. নিজের ব্লগ/ওয়েবসাইটে ট্রাফিক প্রেরণ করা:

আমি এবং আপনি, আমরা প্রত্যেকেই জানি যে একটি ব্লগ সাইট থেকে টাকা ইনকাম করাটা বর্তমানে সত্যি সম্ভব। তবে ব্লগ থেকে ইনকাম করার জন্যে আপনার ব্লগে নিয়মিত ট্রাফিক/ভিজিটর আসতে হবে।

এবার, যদি আপনার ফেসবুক পেজে অনেক বড় সংখ্যায় ফলোয়ার্স থাকে, সেক্ষেত্রে আপনি একটি নিউজ ব্লগ তৈরি করে প্রতিদিন নতুন নতুন নিউজ আর্টিকেল গুলো নিজের ব্লগে পাবলিশ করতে পারবেন এবং পাবলিশ করা প্রতিটি নিউজ আর্টিকেলের লিংক নিজের ফেসবুক পেজে শেয়ার করতে পারবেন।

এতে, আপনার শেয়ার করা লিংকের মাধ্যমে ফেসবুক থেকে প্রচুর ইউজাররা আপনার ব্লগ সাইটে প্রবেশ করবেন এবং আপনি নিজের ব্লগে Google AdSense-এর মতো এড নেটওয়ার্ক গুলোর বিজ্ঞাপন দেখিয়ে নিয়মিত অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

দেখতে গেলে, এই মাধ্যমে আপনি সরাসরি ফেসবুক থেকে কোনো ধরণের টাকা ইনকাম করছেননা যদিও ফেসবুক এর দ্বারা নিজের ব্লগ সাইটে ট্রাফিক প্রেরণ করে একটি দারুন ট্রাফিক ও ইনকাম সোর্স তৈরি করে নিতে পারছেন।

৯. পেইড সাবস্ক্রিপশন যুক্ত করা:

ফেসবুক পেজ থেকে টাকা ইনকাম

আপনি কি জানেন ফেসবুক এর মধ্যে fan subscriptions নামের একটি দারুন ফীচার রয়েছে? আসলে এটাও আরেকটি দারুন ফীচার যেটিকে কাজে লাগিয়ে ফেসবুকে নিয়মিত প্যাসিভ ইনকাম করা যেতে পারে।

এক্ষেত্রে আপনি আপনার পেজ ফলোয়ার্সদের কিছু পরিমানের টাকা মান্থলি ফী হিসেবে দিয়ে আপনার এক্সকুসিভ বা প্রিমিয়াম কনটেন্ট গুলোকে এক্সেস করার সুবিধা দিতে পারবেন।

Facebook fan subscription feature-টি এক্টিভেট করার জন্য আপনাকে চলে যেতে হবে, Creator Studio > Monetisation, এবং যেই পেজে সাবস্ক্রিপশন ফীচারটি যুক্ত করতে চাইছেন সেই পেজটি সিলেক্ট করতে হবে।

ফেসবুক থেকে অর্থ উপার্জনের মূল চাবিকাঠি কি?

সত্যি বলতে বর্তমান সময়েও বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার লোকেরা ফেসবুক থেকে নানান মাধ্যমে টাকা আয় করে নিতে পারছেন। আর আপনি চাইলে আপনিও পারবেন। তবে এক্ষেত্রে যেই বিষয়টা সবথেকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ সেটা হলো, আপনার কাছে এমন একটি ফেসবুক পেজ থাকা যেখানে কমেও ১০ থেকে ২০ হাজার ফলোয়ার্স রয়েছেন।

ভিডিওতে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে ইনকাম করাই হোক বা পেইড স্পনসরশিপ, ফ্যান সাবস্ক্রিপশন মডেল হোক বা নিজের কোনো কোর্স বা ডিজিটাল কনটেন্ট বিক্রি করা, প্রত্যেক ক্ষেত্রেই আপনার কাছে একটি শক্তিশালী ফলোয়ার বেস থাকতে হবে।

চিন্তা করতে হবেনা, আপনি যদি সঠিক নিয়ম গুলো অনুসরণ করে নিয়মিত চেষ্টা চালিয়ে যেতে পারেন, তাহলে একটি নতুন ফেসবুক পেজে কমেও ২০ হাজার সাবস্ক্রাইবার পেতে আপনার বেশি সময় লাগবেনা।

আপনি কি সত্যি ফেসবুক থেকে টাকা আয় করতে পারেন?

হ্যা, আপনি ফেসবুক থেকে সত্যি অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। ফেসবুক আমাদেরকে এমন নানান ফীচার গুলো দিয়ে রেখেছে যেগুলিকে স্মার্ট ভাবে কাজে লাগাতে পারলে একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটর বা ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে আপনিও অনেক সহজেই নিয়মিত প্যাসিভ ইনকাম শুরু করতে পারবেন।

যেমন ধরুন, নিজের ফেসবুক পেজে নিয়মিত ভিডিও কনটেন্ট গুলো আপলোড করার মাধ্যমে আপনি ভিডিওর সাথে সাথে in-stream ads (বিজ্ঞাপন) গুলো দেখিয়ে ইনকাম করতে পারছেন। আবার, যা আমি উপরে আগেই বলেছি, আপনি নানান পেইড অনলাইন ইভেন্ট গুলোর দ্বারা বা পেইড ফ্যান পেজ সাবস্ক্রিপশন ফীচার এর দ্বারা এখান থেকে প্রচুর টাকা আয় করে নিতে পারবেন।

ব্যাস, কাজ শুরু করার আগে প্রত্যেক ইনকামের উপায়/ফীচার গুলোর বিষয়ে ভালো করে রিসার্চ করে নিতে ভুলবেননা।

টাকা ইনকামের জন্য ফেসবুকে কতজন ফলোয়ার দরকার হবে?

যখন কথা বলা হচ্ছে ফেসবুক থেকে ইনকাম করার বিষয়টা নিয়ে তখন এক্ষত্রে আপনার যত অধিক ফলোয়ার্স থাকবে ততটাই অধিক এবং সুবিধাজনকভাবে ইনকাম করতে পারবেন আপনি।

আসলে, ফেসবুক এর বেশিরভাগ মনিটাইজেশন ফীচার গুলোর ক্ষেত্রে কেবল সেই ফেসবুক পেজ গুলোকেই অনুমতি দেওয়া হয় যেগুলোতে কমেও ১০ হাজার ফলোয়ার্স আছে। মূলত, in-stream Facebook ads এবং fan subscription-এর ক্ষেত্রেও কমেও ১০ হাজার followers আপনার পেজে থাকতেই হবে।

তবে এটা কখনোই বলা যাবেনা যে ১০ হাজারের থেকে কম ফলোয়ার্স থাকলে আপনি ফেসবুকে কোনো ভাবেই ইনকাম করতে পারবেননা। কেননা, পেইড এবং স্পন্সরড পোস্ট, এফিলিয়েট মার্কেটিং, রেফার করে ইনকাম করা, ইত্যাদি এই ধরণের অন্যান্য নানান ইনকামের কৌশল গুলো আছে যেগুলোর ক্ষেত্রে কোনো ধরণের ফিক্সড মিনিমাম ফলোয়ার্সদের সংখ্যা নির্ধারিত করা নেই।

তবে আবারও বলবো, যত অধিক ফলোয়ার্স ফেসবুক থেকে উপার্জনের ততটাই অধিক সুযোগ এবং সুবিধা আপনার কাছে থাকবে।

FAQ’s On: ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করার উপায়:

১. ফেসবুকে কত ফলোয়ার হলে টাকা পাওয়া যায়?

যদি আপনি ফেসবুক in-stream ads (ভিডিওতে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে) বা পেইড সাবস্ক্রিপশন এর মতো ফীচারগুলো কাজে লাগিয়ে ইনকাম করার কথা ভাবছেন, সেক্ষেত্রে মিনিমাম ১০,০০০ ফলোয়ার্স আপনার ফেসবুক পেজে থাকতেই হবে। তবে, এফিলিয়েট মার্কেটিং বা পেইড পোস্ট এর মতো অন্যান্য ইনকামের উপায় গুলোর ক্ষেত্রে কোনো ফিক্সড মিনিমাম ফলোয়ার্স এর পরিমান সেট করা হয়নি। মনে রাখবেন, আপনার ফেসবুক পেজে যত অধিক ফলোয়ার্স থাকবে ততটাই অধিক নতুন নতুন ইনকামের উপায় বা সুযোগ আপনি পাবেন।

২. কিভাবে ফেসবুকে প্রতিদিন 500 আয় করা যায়?

নতুনদের জন্য ফেসবুকে প্রতিদিন 500 আয় করা এতটা সোজা কাজ নয়, তবে অসম্ভবও না। এক্ষেত্রে, আপনি পেইড প্রমোশন, ফেসবুক মার্কেটপ্লেস, রেফার করে ইনকাম করা, বিজ্ঞাপন দেখিয়ে ইনকাম করার মতো নানান উপায় গুলোকে কাজে লাগাতে পারবেন। তবে এটা অবশই মনে রাখবেন, ফেসবুক থেকে প্রতিদিন ৫০০ টাকা ইনকাম করার জন্য আপনার ফেসবুক পেজে কয়েক লক্ষ ফলোয়ার্স থাকতেই হয়।

৩. ফেসবুকে কি লাইক দিয়ে টাকা আয় করা যাবে?

ফেসবুকের মধ্যে এমন কোনো ফীচার বা প্রোগ্রাম নেই যেখানে লাইক দিয়ে টাকা আয় করার মতো সুবিধা পাওয়া যাবে। যেটা সত্যি কথা, ফেসবুক বলুন বা অন্য যেকোনো সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম, লাইক বা কমেন্ট করার জন্য কেও আপনাকে কোনো ধরণের টাকা বা রিওয়ার্ড দিয়ে থাকেনা।

৪. ফেসবুক পেজ থেকে টাকা ইনকাম কিভাবে করবেন?

ফেসবুকে টাকা উপার্জন করার মূল এবং সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ারটি হলো একটি জনপ্রিয় এবং প্রচুর ফলোয়ার্সযুক্ত ফেসবুক পেজ। এক্ষেত্রে আপনি, in-stream ads, paid subscription, paid events, paid post, ইত্যাদি নানান উপায় গুলোকে কাজে লাগিয়ে নিজের পেজ থেকে ইনকাম করতে পারবেন।

আমাদের শেষ কথা:

তাহলে বন্ধুরা, আজকের এই আর্টিকেলের মধ্যে আপনারা অনেক সহজে জেনেনিতে পারলেন যে, ফেসবুকে থেকে টাকা আয় করার নানান উপায় গুলো আছে। ইনকামের এই উপায় গুলো এমনিতে আলাদা আলাদা ভাবে কাজ করে থাকে যদিও, সঠিক নিয়ম এবং কৌশল গুলো অনুসরণ করে কাজ করতে জানলে, অর্থ উপার্জনের ক্ষেত্রে কোনো ধরণের সমস্যা হবেনা।

এছাড়া, যা আমি উপরে আগেই বলেছি, এই সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম থেকে টাকা আয় করার মূল কৌশল গুলো হলো, Facebook Ads, In-stream ads, Facebook Affiliate Marketing, Facebook Marketplace, ইত্যাদি।

মনে রাখবেন, যদি আপনি ফেসবুকে আপলোড করা নিজের কনটেন্ট গুলোতে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে টাকা ইনকাম করতে চাইছেন, সেক্ষেত্রে Facebook content monetization এবং video monetization এর কৌশল গুলোকে কাজে লাগাতে পারেন। একটি অধিক ফলোয়ারযুক্ত জনপ্রিয় ফেসবুক পেজ বা গ্রুপ তৈরি করতে পারলে, In-stream ads-এর দ্বারা content monetization এবং video monetization এর মাধ্যমে নিয়মিত ইনকাম করতে পারবেন আপনি।

ফেসবুকের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম গুলোর থেকে অর্থ উপার্জনের এই কৌশলগুলিকে সঠিক ভাবে বাস্তবায়ন করতে জানলে, নিজের অনলাইন উপস্থিতিকে একটি শক্তিশালী অর্থ-উৎপাদনকারী মেশিনে রূপান্তরিত করতে পারবেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error:
Scroll to Top