২০২৪ সালে কিভাবে একটি ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম করা যায়?

একটি ওয়েবসাইট থেকে কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায়, এই বিষয়ে আমরা প্রত্যকেই আজ কিছুটা হলেও জেনেনিতে চাই। একটি ওয়েবসাইট তৈরি করার পর আপনি নিজের জন্য টাকা ইনকামের এমন একটি সুযোগ তৈরি করে নিতে পারেন যেখানে একটা সময়ে গিয়ে কাজ না করেও নিয়মিত প্যাসিভ ইনকামের সহজ একটি রাস্তা তৈরি হয়ে যায়।

বর্তমান সময়ে, আপনি একটি ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে শুধুমাত্র আর্টিকেল লিখেও টাকা ইনকাম করতে পারবেন। আমি নিজেই এই মাধ্যমে প্রতিমাসে কমেও ৪০০ থেকে ৫০০ ডলার ইনকাম করছি।

এছাড়া, একটি ওয়েবসাইট থেকে আপনি পার্ট-টাইম বা ফুল-টাইম দুভাবেই কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। একজন, স্টুডেন্ট, মহিলা বা এমন জেকেও যার কাছে প্রতিদিন কমেও ৩-৪ ঘন্টা খালি সময় আছে, তারা অবশই একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে ইনকাম করার উপায়টিকে কাজে লাগাতে পারবেন।

যেকোনো ধরণের ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম করার ক্ষেত্রে আপনারা নানান কৌশল গুলোকে কাজে লাগাতে পারবেন। চিন্তা করতে হবেনা, নিচে আমরা ওয়েবসাইট থেকে আয় করার প্রতিটি ইনকামের রাস্তা গুলোর বিষয়ে একে একে বলে দিয়েছি।

ওয়েবসাইট থেকে টাকা ইনকাম করার আগে এই বিষয়ে জেনে রাখুন:

  • WordPress বা Blogger.com-দ্বারা আপনি নিজেই নিজের জন্য যেকোনো ধরণের ওয়েবসাইট তৈরি করে নিতে পারবেন।
  • ওয়েবসাইট তৈরি করার আগেই, কোন বিষয়ে সাইট তৈরি করবেন সেটা অবশই নিশ্চিত করে নিবেন।
  • যেকোনো একটি বা একাধিক বিষয়ে ভালো ভালো কনটেন্ট তৈরি করার কৌশল আপনার মধ্যে থাকতে হবে।
  • ছাত্ররা, মহিলারা, বা চাকরি করা ব্যক্তিরা পার্ট-টাইম হিসেবে এই কাজ শুরু করতে পারবেন।
  • ওয়েবসাইট থেকে অর্থ উপার্জনের একাধিক কার্যকর উপায় গুলো রয়েছে।
  • সঠিক ভাবে কাজ করতে জানলে নিজের তৈরি করা ওয়েবসাইট থেকে আনলিমিটেড টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
  • SEO, কনটেন্ট রাইটিং, WordPress, ইত্যাদির মতো কৌশল গুলো শিখতে হবে।
  • আপনাকে ৬-১২ মাস সময় দিয়ে নিয়মিত কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে, আপনার ইনকাম ধীরে ধীরে বাড়বে।

একটি ওয়েবসাইট থেকে আমি কত টাকা ইনকাম করতে পারি?

একটি ওয়েবসাইট থেকে আপনি কত থাকা ইনকাম করতে পারবেন, এটা সম্পূর্ণ ভাবে নানান উপাদান বা কারণ গুলোর উপর নির্ভর করে থাকে। এদের মধ্যে ৩টি মূল উপাদান বা কারণ গুলো হলো, আপনার ওয়েবসাইটের টপিক, ওয়েবসাইটে কোন দেশ বা লোকেশন থেকে ট্রাফিক/ভিসিটর্স চলে আসছে এবং কোন কৌশল গুলোকে কাজে লাগিয়ে ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম করছেন।

তবে, যদি আপনি একটি কার্যকর অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কৌশল, অধিক CPM যুক্ত এড নেটওয়ার্ক, বা দুর্দান্ত ই-কমার্স স্ট্রেটাজি গুলো ব্যবহার করে থাকেন, সেক্ষেত্রে প্রতি মাসে কয়েকশ ডলার থেকে কয়েক হাজার ডলার পর্যন্ত ইনকাম করে নিতে পারবেন।

এমন প্রচুর ওয়েবসাইট গুলো আপনারা এমনিতে দেখেছি যেগুলোতে প্রতিমাসে লক্ষ লক্ষ ভিসিট হয়ে থাকে এবং ওয়েবসাইট গুলো প্রতি মাসে $10,000 থেকেও অধিক এড রেভিনিউ জেনারেট করতে সফল হন।

তবে, ওয়েবসাইট থেকে প্রতি মাসে $10,000 থেকেও অধিক ইনকাম করতে হলে আপনাকে, subscriptions, digital products, sponsored content, Ads, Affiliate marketing, ইত্যাদি প্রত্যেকটি উপায়কেই কাজে লাগাতে হয়।

আপনারা যদি আমার কথা বলে থাকেন, তাহলে আমি আমার শুধুমাত্র একটি ব্লগ ওয়েবসাইট থেকে প্রতি মাসে ৫০০ থেকে ৬০০ ডলার ইনকাম করে নিচ্ছি। জানিয়ে রাখছি, ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম করার জন্য আমি শুধুমাত্র Google AdSense-এর বিজ্ঞাপন আমার ওয়েবসাইটে লাগিয়ে রেখেছি। মানে, ওয়েবসাইটে শুধুমাত্র বিজ্ঞাপন দেখিয়েই মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় করে নিচ্ছি।

নিজের ওয়েবসাইট থেকে টাকা ইনকাম করুন এই ১০টি উপায়ে:

একটি ওয়েবসাইট থেকে কিভাবে আয় করা যায় ?

২০২৪ সালে যদি আপনি একটি ওয়েবসাইট থেকে নিয়মিত অর্থ উপার্জন করতে চাইছেন, সেক্ষেত্রে আপনাকে একটি শক্তিশালী স্ট্রেটেজি এবং নিজের ক্রিয়েটিভিটি গুলোকে কাজে লাগিয়ে কাজ করতে হবে।

বর্তমান সময়ে আলাদা আলাদা ওয়েবসাইট গুলো আলাদা আলাদা ধরণের কৌশল গুলোকে কাজে নিজেদের ওয়েবসাইট থেকে আয় করছেন। চলুন, নিচে আমরা সেই প্রত্যেকটি কৌশল এবং উপায় গুলোর বিষয়ে জেনেনেই।

ইনকামের উপায়:কি করতে হয়:
১. অনলাইন কোর্স বিক্রিনিজের সাইটের ভিসিটরদের কোর্স বিক্রি করুন।
২. এফিলিয়েট মার্কেটিং করুননানান কোম্পানি গুলোর পণ্য ও পরিষেবার প্রচার।
৩. ডিজিটাল প্রোডাক্ট বিক্রি করুনE-books, stock photos, বা software বিক্রি।
৪. Google AdSenseওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে ইনকাম।
৫. স্পন্সরড কনটেন্ট পাবলিশ করুনব্র্যান্ড থেকে টাকা নিয়ে স্পনসর কনটেন্ট পাবলিশ।
৬. ই-কমার্স থেকে ইনকামওয়েবসাইটের দ্বারা ফিজিক্যাল পণ্য বিক্রি।
৭. Amazon associatesআমাজন এর পণ্য বিক্রি করিয়ে ইনকাম।
৮. সাবস্ক্রিপশন মডেলওয়েবসাইট ভিসিটরদের থেকে মান্থলি ফী নিতে পারেন।
৯. ওয়েবসাইট বিক্রি করুনওয়েবসাইট বিক্রি করে ইনকাম করুন।
১০. অর্থসাহায্য (Donation)ভিসিটরদের থেকে অর্থসাহায্য চাইতে পারেন।

কিভাবে ওয়েবসাইট থেকে আয় করা যায়, আমাদের উপরের তালিকাটি দেখে আপনারা এই বিষয়ে অবশই অনেক ভালোভাবে বুঝে গিয়েছেন হয়তো। চলুন, এবার আমরা নিচে ইনকামের প্রতিটি উপায়গুলো একে একে বিস্তারিত ভাবে জেনেনেই।

১. অনলাইন কোর্স বিক্রি:

যখন আপনার ওয়েবসাইটে প্রতিদিন মোটামোটি ১ থেকে ২ হাজারের মধ্যে ভিসিটর্স আসতে শুরু হবে, তখন আপনি চাইলে নিজের ওয়েবসাইটের বিষয়ের সাথে জড়িত অনলাইন কোর্স গুলো তৈরি করে ওয়েবসাইটের দ্বারা কোর্সটি বিক্রি করিয়ে নিতে পারবেন।

উদাহরণ স্বরূপ: আমার একটি ব্লগ সাইট আছে যেখানে আমি blogging এবং Website বিষয়ক তথ্যগুলো পাবলিশ করে থাকি। এবার, আমার ওয়েবসাইটে চলে আসা বেশিরভাগ ভিসিটর্সরাই কিন্ত ব্লগ/ব্লগিং নিয়ে রুচি রাখেন।

আর তাই, যদি আমি blogging, SEO, বা ওয়েবসাইট রিলেটেড বিষয়গুলো নিয়ে আর্টিকেল লিখে থাকি, সেক্ষেত্রে প্রচুর সুযোগ রয়েছে যে প্রতিদিন খুব কমেও ১০ থেকে ২০ জন ব্যক্তি আমার ভিডিও কোর্সটি কিনে নিবেন।

এবার, যদি আমার বানানোর ভিডিও কোর্স এর দাম মাত্র ১৫০ টাকা হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে ২০*১৫০ = ৩০০০ টাকা এক দিনেই শুধু মাত্র নিজের ওয়েবসাইটের দ্বারা কোর্স বিক্রি করে ইনকাম করে নিতে পারছি।

এভাবেই, অনেকেই আছেন যারা নিজের বানানো অনলাইন কোর্স গুলোকে নিজেদের ওয়েবসাইটের দ্বারা অনলাইনে হাজার হাজার লোকেদের কাছে বিক্রি করে নিয়মিত প্যাসিভ ইনকাম করে নিচ্ছেন।

২. এফিলিয়েট মার্কেটিং করুন:

ইন্টারনেটে এমন হাজার হাজার ব্র্যান্ড এবং কোম্পানিগুলো রয়েছে যেগুলোর পণ্য বা পরিষেবাগুলো আপনি নিজের ওয়েবসাইটের দ্বারা প্রচার ও বিক্রি করিয়ে নিতে পারবেন।

কোম্পানি গুলোর পণ্য বা পরিষেবা গুলো প্রচার বা বিক্রি করানোর জন্য আপনাকে দিয়ে দেওয়া হবে একটি বিশেষ লিংক যেটিকে বলা হয় এফিলিয়েট লিংক। এবার, আপনার এফিলিয়েট লিংকটি ক্লিক করে যখনি কোনো ভিসিটর বা ইউজার কোনো পণ্য বা পরিষেবা কিনে নিবেন, তখন সেই বিক্রির জন্য কোম্পানির তরফ থেকে আপনিও পাবেন কিছু অংশের কমিশন।

মনে রাখবেন, আলাদা আলাদা কোম্পানি, ব্র্যান্ড, পণ্য বা পরিষেবা গুলোর উপর নির্ভর করে কমিশন এর পরিমাণও আলাদা আলাদা হয়ে থাকে। এফিলিয়েট মার্কেটিং করে দ্রুত ইনকাম করার ক্ষেত্রে আপনাকে শুধুমাত্র সেই পণ্য বা পরিষেবা গুলো সিলেক্ট করতে হবে যেগুলো আপনার ওয়েবসাইটের বিষয়ের সাথে সম্পূর্ণভাবে রিলেটেড।

এফিলিয়েট মার্কেটিং বলতে কি বুঝায়? বিষয়টা ভালোভাবে বুঝে নিতে আমাদের এই আর্টিকেলটি অবশই পড়ুন।

৩. ডিজিটাল প্রোডাক্ট বিক্রি করুন:

অনলাইন থেকে ডাউনলোড করা যায় এমন নানান ধরণের ডিজিটাল কনটেন্ট গুলো আপনি আপনার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিক্রি করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। eBooks, software, stock photo, digital templates, podcast, graphics, ইত্যাদি নানান ধরণের ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করে বিক্রি করা যেতে পারে। এই ধরণের ডিজিটাল কনটেন্ট গুলো অনেক সামান্য খরচে তৈরি করে অনেক বেশি দামে বিক্রি নিজের ওয়েবসাইট ভিসিটর্সদের কাছে বিক্রি করতে পারেন।

৪. Google AdSense:

আমি নিজেই, শুধুমাত্র Google AdSense-এর দ্বারা নিজের ওয়েবসাইট থেকে প্রতি মাসে ৪০০ থেকে ৫০০ ডলার ইনকাম করে নিতে পারছি। আর সত্যি বলতে, একটি ব্লগ সাইট থেকে অনেক সহজে ডলারে টাকা ইনকাম করার সব থেকে সুবিধাজনক এবং কার্যকর উপায়টি হলো, Google AdSense।

আপনাকে শুধুমাত্র একটি AdSense account তৈরি করে নিজের ওয়েবসাইটের জন্য এডসেন্স এপ্রুভাল নিয়ে নিতে হয়। একবার গুগল থেকে এপ্রুভাল পেয়ে গেলেই, এবার আপনি নিজের ওয়েবসাইটে নানান ধরণের বিজ্ঞাপন গুলো (ইমেজ, ভিডিও, টেক্সট) দেখাতে পারবেন। মনে রাখবেন, বিজ্ঞাপন গুলো গুগল এডসেন্স দ্বারা আপনার সাইটে দেখানো হবে।

এখন, আপনার ওয়েবসাইটে চলে আসা ইউজার/ভিসিটর্সরা যখন সেই বিজ্ঞাপন গুলো দেখবেন এবং বিজ্ঞাপনে ক্লিক করবেন, তখন আপনি সেই এড ভিউ/ক্লিক এর জন্য কিছু টাকা নিজের এডসেন্স একাউন্টে পেয়ে যাবেন।

মনে রাখবেন, আপনার ওয়েবসাইটে যত অধিক ট্রাফিক/ভিসিটর্স থাকবে, আপনার বিজ্ঞাপন গুলো ততই অধিক লোকেরা দেখবেন এবং সেই হিসেবে আপনার ইনকামও বাড়বে। যতটা আমি জানি, সঠিক ভাবে কাজ করতে জানলে শুধুমাত্র গুগল এডসেন্স বিজ্ঞাপন দেখিয়েই নিজের ওয়েবসাইট থেকে প্রতিদিন ১০০০ টাকা আয় করে নিতে পারবেন।

৫. স্পন্সরড কনটেন্ট পাবলিশ করুন:

এক্ষেত্রে আপনাকে নানান ব্র্যান্ড বা কোম্পানিগুলোর সাথে পার্টনারশীপ করতে হয় এবং কিছু টাকার বদলে কোম্পানিগুলোর পণ্য বা পরিষেবা গুলোকে নিজের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রচার করতে হয়।

ব্র্যান্ড বা কোম্পানির পণ্যগুলো প্রচার করার ক্ষেত্রে আপনি এমন একটি আর্টিকেল নিজের ওয়েবসাইট পাবলিশ করতে পারেন যেখানে কোম্পানির সেই পণ্যের বা পরিষেবার বিষয়ে বলা হয়েছে।

এছাড়া, আপনি চাইলে একটি ডিটেলড রিভিউ আর্টিকেল বা রিভিউ ভিডিও তৈরি করে নিজের ওয়েবসাইটে আপলোড/পাবলিশ করতে পারেন। মনে রাখবেন, স্পনসরশিপ এর মাধ্যমে ওয়েবসাইট থেকে টাকা ইনকাম করতে হলে, আপনার ওয়েবসাইটে টার্গেটেড এবং শক্তিশালী দর্শক বেস থাকতে হবে।

আপনার ওয়েবসাইটে যদি মোটামোটি একটি ভালো পরিমানের ট্রাফিক প্রতিদিন চলে আসছে, সেক্ষেত্রে নানান কোম্পানি এবং ব্র্যান্ড গুলো আপনার ওয়েবসাইটে স্পন্সরড কনটেন্ট পাবলিশ করানোর জন্য আপনাকে ইমেইল এর মাধ্যমে অবশই যোগাযোগ করে নিবেন।

৬. ই-কমার্স সাইট থেকে ইনকাম:

যেই ধরণের ওয়েবসাইট গুলোতে সরাসরি ওয়েবসাইট থেকেই পণ্য গুলোকে বিক্রি করা হয়, সেই ওয়েবসাইট গুলোকে ই-কমার্স ওয়েবসাইট বলা হয়ে থাকে। একটি ই-কমার্স সাইট দ্বারা নানান ধরণের পণ্য বা পরিষেবাগুলো অনলাইনে বিক্রি করা যেতে পারে। যেমন, ফিজিক্যাল পণ্য, ডিজিটাল পণ্য, বা কোনো ধরণের পরিষেবা, ইত্যাদি।

আপনি চাইলে একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করে শুধুমাত্র একটি বা একাধিক পণ্য বা পরিষেবাগুলো নিজের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিক্রি করতে পারবেন। বর্তমান সময়ে, একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করাটা একটি অনেক সোজা এবং সাধারণ ব্যাপার। কেননা, Shopify, WooCommerce, বা BigCommerce-এর মতো প্লাটফর্ম গুলোকে কাজে লাগিয়ে আপনি নিজেই নিজের জন্য একটি অনলাইন ই-কমার্স স্টোর/দোকান তৈরি করে নিতে পারবেন।

মনে রাখবেন, শুধুমাত্র ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করলেই কিন্তু কাজ হবেনা।

ওয়েবসাইটে ট্রাফিক নিয়ে আসা এবং বিক্রয় বৃদ্ধি করানোর ক্ষেত্রে আপনাকে SEO, social media, এবং email marketing-এর মতো কৌশল গুলোকেও কাজে লাগাতে হবে। এছাড়া, যদি আপনি নিজেই ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট ইনভেন্টরি গুলো ম্যানেজ করতে চাইছেনা, সেক্ষেত্রে dropshipping-কে কাজে লাগাতে পারেন।

৭. Amazon associates:

Amazon, একটি অনেক জনপ্রিয় ও বিখ্যাত অনলাইন ই-কমার্স প্লাটফর্ম যেখানে হাজার ধরণের আলাদা আলাদা পণ্য গুলো উপলব্ধ রয়েছে। এবার, আপনার ওয়েবসাইটে যদি নিয়মিত ভালো সংখ্যায় ভিসিটর্স/ট্রাফিক চলে আসছে, সেক্ষেত্রে আপনি Amazon Associates নামের আমাজন এর এই প্রোগ্রামটির সাহায্য নিয়েও নিজের সাইট থেকে টাকা উপার্জন করতে পারবেন।

Amazon Associates মূলত Amazon-এর affiliate marketing program, যেখানে একটি ফ্রি একাউন্ট তৈরি করে একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটর, পাবলিশার, ব্লগার হিসেবে আমাজন এর পণ্য গুলো আপনি নিজের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিক্রি করিয়ে নিয়মিত এফিলিয়েট ইনকাম করতে পারবেন।

মনে রাখবেন, আমাজন এর আলাদা আলাদা পণ্য গুলো বিক্রি করানোর জন্য আলাদা আলাদা পরিমান কমিশন দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে, amazon-এর commission chart-টি অবশই দেখে নিবেন। এছাড়া, আমাজন এফিলিয়েট মার্কেটিং করে কিভাবে আয় করবেন, এই বিষয়ে একটি আলাদা এবং বিস্তারিত আর্টিকেল আমি আগেই লিখে রেখেছি।

৮. সাবস্ক্রিপশন মডেল:

যেকোনো একটি ওয়েবসাইট থেকে অর্থ উপার্জন করার আরেকটি দারুন এবং কার্যকর উপায় হলো, ওয়েবসাইটে সাবস্ক্রিপশন মডেল যুক্ত রাখা। মানে, আপনার ওয়েবসাইটে চলে আসা ভিসিটর্সরা আপনাকে মাসে মাসে বা বছরের শেষে কিছু টাকা সাবস্ক্রিপশন হিসেবে পেমেন্ট করবে। তবে কেন পেমেন্ট করবেন?

আসলে এক্ষেত্রে আপনাকে নিজের ভিসিটর্সদের কিছু প্রিমিয়াম বা এক্সক্লুসিভ কনটেন্ট এক্সেস করতে দিতে হয়।

এমন অনেক ব্লগ/কনটেন্ট ওয়েবসাইট বা পোর্টাল গুলো আপনারা অনলাইনে দেখতে পাবেন যেখানে সম্পূর্ণ ফ্রীতে নানান ধরণের আর্টিকেল এবং কনটেন্ট গুলো এক্সেস করা বা পড়া যায়।

আবার, সেই একই ওয়েবসাইটে কিছু টাকা দিয়ে মান্থলি বা ইয়ারলি সাবস্ক্রিপশন নিয়ে রাখলে, নানান ধরণের প্রিমিয়াম আর্টিকেল এবং এক্সকুসিভ কনটেন্ট গুলো এক্সেস করতে দেওয়া হয়। তাই, subscription business model-টিও কিন্তু যেকোনো ওয়েবসাইট থেকে অর্থ উপার্জনের দারুন একটি উপায়।

৯. ওয়েবসাইট বিক্রি করুন:

একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে সেটিকে অনলাইন বিক্রি করেও আপনি নিয়মিত ইনকাম করতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে আপনাকে এমন একটি টপিক বা বিষয় নিয়ে ওয়েবসাইটটি তৈরি করা দরকার যার চাহিদা মার্কেটে রয়েছে।

যেমন ধরুন, একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট বা কোম্পানি পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট, ইত্যাদি। ওয়েবসাইট তৈরি করার সময় আপনাকে, ওয়েবসাইট এর ডিজাইন, মোবাইল ফ্রেন্ডলিনেস এবং ইউজার এক্সপেরিয়েন্স এর মতো বিষয় গুলোতে অবশই নজর দিতে হবে।

ওয়েবসাইট তৈরি করে এবং সেগুলোকে বিক্রি করে ইনকাম করার ক্ষেত্রে আপনারা মূলত দুটো বিসনেস মডেলকে কাজে লাগাতে পারেন। আর সেগুলো হলো, website flipping এবং custom websites development।

Website flipping:

ওয়েবসাইট ফ্লিপিং এর ক্ষেত্রে আপনাকে আগের থেকে তৈরি ওয়েবসাইট গুলোকে কিনে নিয়ে সেগুলোতে নানান ধরণের উন্নতি গুলো করার মাধ্যমে ওয়েবসাইট এর মান বাড়িয়ে নেওয়া হয়। এবার, উন্নত ওয়েবসাইটটিকে অধিক দামে বিক্রি করে লাভ আয় করা হয়।

Custom websites development:

এক্ষেত্রে আপনি নানান ব্র্যান্ড, কোম্পানি, বা ক্লায়েন্টদের জন্য তাদের প্রয়োজন হিসেবে ওয়েবসাইট গুলো তৈরি করে দিতে হয়। WordPress-এর মতো CMS software গুলো ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনি যেকোনো ধরণের ওয়েবসাইট খুব সহজেই তৈরি করে নিতে পারেন।

অনলাইনে উপলব্ধ নানান মার্কেটপ্লেস, ফ্রিল্যান্সিং পোর্টাল, সোশ্যাল মিডিয়া পেজ, বা সরাসরি অনলাইন বিজ্ঞাপনের দ্বারা আপনি আপনার ওয়েবসাইট তৈরি ও বিক্রির পরিষের প্রচার চালাতে পারেন।

১০. অর্থসাহায্য (Donation):

আপনি যদি নিয়মিত নানান জরুরি এবং তথ্যবহুল কনটেন্ট গুলো নিজের ওয়েবসাইটে পাবলিশ করে থাকেন, তাহলে সেক্ষেত্রে ডোনেশন এর দ্বারাও নিজের সাইট থেকে টাকা উপার্জন করে নিতে পারবেন।

এক্ষেত্রে আপনাকে নিজের ওয়েবসাইটে একটি ডোনেশন বাটন যুক্ত করতে হবে। এতে, আপনার ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা ভিসিটর্সরা আপনাকে সরাসরি কিছু টাকা ডোনেশন হিসেবে দিয়ে দিতে পারবেন।

ওয়েবসাইট থেকে উপার্জন করার ক্ষেত্রে ট্রাফিক এর গুরুত্ব:

মনে রাখবেন, আপনি আপনার ওয়েবসাইট থেকে প্রচুর/আনলিমিটেড টাকা ইনকাম করে নিতে পারবেন।

তবে সব সময় মনে রাখবেন যে, আপনার ওয়েবসাইটে চলে আসা টোটাল ট্রাফিক বা ভিসিটর্স এর উপর নির্ভর করেই আপনার টোটাল ইনকামের পরিমান কম বেশি হয়ে থাকে। তাই, কিভাবে এবং কোন কোন কৌশল গুলো অনুসরণ করার মাধ্যমে নিজের ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বাড়ানো যাবে, সেই বিষয়ে নজর আপনাকে অবশই দিতে হবে।

যত অধিক ট্রাফিক আপনার সাইটে থাকবে, ইনকামের পরিমাণও ততটাই বাড়বে।

মনে রাখবেন, নিয়মিত হাই কোয়ালিটি কনটেন্ট পাবলিশ করার মাধ্যমে আপনি গুগল সার্চ ইঞ্জিন এর মতো প্লাটফর্ম গুলোর থেকে নিজের ওয়েবসাইটে সম্পূর্ণ ফ্রীতে প্রচুর ট্রাফিক নিয়ে আসতে পারবেন।

FAQ,

ওয়েবসাইট বানাতে কি কি লাগে ?

একটি ওয়েবসাইট বানাতে আপনার বিশেষকরে প্রয়োজন হবে একটি ডোমেইন, ওয়েব হোস্টিং এবং ওয়ার্ডপ্রেস এর। আপনি অনেক সহজেই GoDaddy বা এই ধরণের সাইট থেকে সর্বনিম্ন চার্জ দিয়ে একটি ডোমেইন ও ওয়েব হোস্টিং কিনে নিতে পারবেন।

ওয়েবসাইট খুলে কিভাবে টাকা আয় করা যায় ?

একটি ওয়েবসাইট বানিয়ে অনেক তাড়াতাড়ি ও সহজ ভাবে টাকা ইনকাম করার উপায় হলো, নিজের ওয়েবসাইটে Google AdSense বিজ্ঞাপন দেখানো এবং বিজ্ঞাপন দেখিয়ে ইনকাম করা।

ওয়েবসাইট খুলতে কত টাকা লাগে ?

একটি ওয়েবসাইট বানাতে শুরুতে প্রায় ১০০০ টাকা খরচ করলেই কাজ হয়ে যাবে। তবে, ইনকাম বাড়ার সাথে সাথে কিছু প্রিমিয়াম সার্ভিস গুলো আপনাকে নিজে হবে যেগুলির জন্যে বছরে ৩ থেকে ৭ হাজার খরচ হবে। তবে, চাইলে কেবল ৫০০-১০০০ টাকা মাসে মাসে ওয়েব হোস্টিং এর জন্যে খরচ করে একটি ওয়েবসাইট বানিয়ে নিতে পারবেন।

10 thoughts on “২০২৪ সালে কিভাবে একটি ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম করা যায়?”

  1. Avatar

    আপনার লেখাগুলো অনেক ভালো লাগে,আমি প্রায় আপনার সাইট ভিজিট করি।

  2. Avatar
    Shahin Alam Munshe

    এক বড় ভাইকে দেখলাম একটি অ্যাপ বানিয়ে সেই অ্যাপে অ্যাড দেখিয়ে ইনকাম করতেছে । Only add দেখিয়ে । কিন্তু সেটা কিভাবে ? যদি আপনার জানা থাকে তাহলে বিস্তারিত জানলে উপকৃত হতাম।

  3. Avatar

    এই সাইট থেকে বর্তমানে আপনার প্রতি মাসে কত টাকা আয় হচ্ছে? জানালে খুশি হতাম।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error:
Scroll to Top