ইউটিউব গেমিং চ্যানেল তৈরি করে সহজেই করুন ইনকাম

Last updated on July 24th, 2023 at 11:35 am

এমনিতে কিছুদিন আগেই, ১১ টি লাভজনক ইউটিউবের চ্যানেল আইডিয়া র বিষয় নিয়ে আমি একটি আর্টিকেল পাবলিশ করেছিলাম।

ইউটিউব গেমিং চ্যানেল থেকে আয়
ইউটিউব গেমিং চ্যানেল থেকে আয়।

তবে, আজকে আমি একটি আলাদা ও অধিক লাভজনক “ইউটিউবের চ্যানেল আইডিয়া” আপনাদের দিবো।

এবং, এই বিষয়ে চ্যানেল তৈরি করে, আপনারা অনেক সহজেই কোনো অসুবিধে ছাড়াই, ইউটিউবের থেকে টাকা আয় করতে পারবেন।

কারণ, এখানে আমি আপনাদের বলছি “YouTube gaming channel” তৈরি করার কথা।

সাধারণ অন্যান্য ইউটিউবের চ্যানেলের ক্ষেত্রে, আমাদের বিভিন্ন ধরণের কনটেন্ট তৈরি করে সেগুলি এডিট করে তারপর ইউটিউবে আপলোড দিতে হয়।

কিন্তু, একটি গেমিং চ্যানেল তৈরি করলে, আপনার কনটেন্ট নিয়ে বেশি ভাবতে হবেনা।

কারণ, এই ক্ষেত্রে আপনার কেবল কিছু গেম খেলে, সেগুলির গেমপ্লে (game-play) গুলি ভিডিও হিসেবে রেকর্ড করে ইউটিউবে আপলোড করতে হবে।

তাই, গেমে খেলে গেমের মজা ও নিতে পারলেন এবং এর সাথে সাথে নিজের ইউটিউবের চ্যানেলের জন্য কনটেন্ট (ভিডিও) ও পেয়ে গেলেন।

ইউটিউবের একটি গেমিং চ্যানেল, এমনিতে অনেক জলদি ও তাড়াতাড়ি অনেক subscriber ও views পেয়ে থাকে।

কারণ, বিভিন্ন আলাদা আলাদা গেম গুলোর গেমপ্লে, প্রত্যেকেই দেখে অনেক ভালো পান।

তাছাড়া, আপনারা অবশই জানেন যে, বর্তমানে একটি YouTube gaming channelGoogle adsense এর দ্বারা approval ও পাওয়া যাচ্ছে।

মানে, আপনি আপনার game-play video গুলোতে, এডসেন্সের (adsense) দ্বারা বিজ্ঞাপন দেখিয়ে টাকা আয় করতে পারবেন।

তাহলে চলুন, যদি আপনি একটি গেমিং ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করার কথা ভাবছেন, সেক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়ে আপনার জেনে রাখাটা দরকার, সেই বিষয়ে জেনেনেই।

ইউটিউবের গেমিং চ্যানেলের সাথে জড়িত কিছু প্রশ্ন ও উত্তর

এমনিতে গেমিং চ্যানেলের প্রচলন, জনপ্রিয়তা এবং লাভ প্রত্যেকের নজরেই অবশই এসেছে।

তাই, প্রায় প্রত্যেক জনপ্রিয় ইউটিউবাররা, যাদের blogging, technology, tutorial, entertainment ইত্যাদি বিষয় গুলি নিয়ে চ্যানেল (channel) রয়েছে, তারাও কিন্তু ২০১৯ এর দিকেই এবং কিছুর বর্তমা ২০২০ এও একটি গেমিং চ্যানেল অবশই তৈরি করে নিয়েছেন।

কারণ তারা জানেন যে, গেমিং চ্যানেল বর্তমানে অনেক সহজেই অধিক subscriber পেয়ে যায় এবং আপলোড করা প্রত্যেক gameplay video গুলোতে views এর পরিমান ও অধিক থাকে।

তাই, এই ধরণের একটি চ্যানেল এর মাধ্যমে তারা অনেক ভালো পরিমানের টাকা অবশই আয় করছেন।

আপনি যদি YouTube এ গিয়ে, যেকোনো একটি গেমের গেমপ্লে ভিডিও সার্চ করেন, তাহলে অনেক gameplay video পেয়ে যাবেন।

তাছাড়া, প্রত্যেক ভিডিওতেই প্রায় অনেক বেশি পরিমানের views অবশই থাকছে।

আপনি যদি যেকোনো একটি gameplay video ওপেন করে দেখেন, তাহলে পাবেন যে, কেবল নিজের কম্পিউটার বা মোবাইলে গেমটি খেলে সেগুলি একটি screen recorder software এর মাধ্যমে রেকর্ড করে, ইউটিউবে ভিডিও হিসেবে আপলোড করে দেওয়া হয়েছে।

এই ক্ষেত্রে, কেবল গেম খেলা হয়েছে এবং সেই gameplay টি রেকর্ড করে আপলোড করে দেওয়া হয়েছে।

এবং সেই গেমপ্লের স্ক্রিন রেকর্ড করা ভিডিওটিতেই হাজার লক্ষ ভিউস (views) হয়ে চলেছে।

তাহলে ভাবতেই পারছেন, gaming channel তৈরি করে কতটা সহজেই content তৈরি করা যাবে।

#১. গেমিং চ্যানেলে গুগল এডসেন্স এপ্রুভাল পাবেন কি ?

হে, অবশই পাবেন। আপনি YouTube এ যেকোনো জামিন চ্যানেল খুলে দেখুন, তারা গুগল এডসেন্স ব্যবহার করে টাকা ইনকাম অবশই করছেন।

কিছু বছর আগে হয়তো গেমপ্লে ভিডিওতে এডসেন্স এপ্রুভাল পাওয়া যেতোনা।

তবে এখন, ইউটিউবের সাধারণ নিয়ম মেনে কাজ করলেই, adsense approval অবশই পাবেন।

সাধারণ অন্যান্য চ্যানেলের ক্ষেত্রে, ৪০০০ ঘন্টার ওয়াচ টাইম এবং ১০০০ সাবস্ক্রাইবার সম্পূর্ণ হওয়ার পর আমরা adsense monetization এর জন্য apply করতে পারি।

ঠিক সেভাবেই, আমাদের গেমিং চ্যানেলেও এক বছরের ভেতরে ৪০০০ ঘন্টা watch time এবং ১০০০ subscriber হয়ে যাওয়ার পর, আমরা YouTube monetization এর জন্য apply করতে পারবো।

এবং, আপনার চ্যানেল ভেরিফাই করার পর, monetization approve করে দেওয়া হবে।

আর তারপর, নিজের গেমিং ইউটিউব চ্যানেল থেকে টাকা আয় করতে থাকুন।

#২. YouTube sponsorship পাবেন কি না ?

YouTube channel ও video থেকে টাকা আয় করার আরো একটি ভালো মাধ্যম রয়েছে।

সেটা হলো, ইউটিউবের “sponsorship function” ব্যবহার করে।

Sponsorship আসলে এমন একটি মাধ্যম, যেখানে আপনার YouTube monetization এর জন্য apply করতে হয়না।

তবে, সোজা ভাবে অন্যান্য company গুলোর product, apps, services ইত্যাদি নিজের ভিডিওর মাধ্যমে প্রচার ও স্পনসর করতে হয়।

এতে, যেই কোম্পানির পণ্য আপনি প্রচার করছেন, সেই কোম্পানির থেকে একটি fixed পরিমানের টাকা আপনি পেয়ে যাবেন।

আপনার চ্যানেলে ভালো সংখ্যায় subscriber এবং views থাকলে, YouTube আপনাকে sponsorship এর মাধ্যমে টাকা আয়ের সুযোগ দিবে।

তবে, Gaming channel এর ক্ষেত্রে অনেকেই ভাবেন যে, তাদের কে YouTube sponsorship এর মাধ্যমে টাকা আয়ের সুযোগ দেওয়া হবেনা।

কিন্তু এটা একেবারেই সত্যি নয়।

আপনার চেনেলে subscriber এর পরিমান ভালো থাকলে এবং আপলোড করা gameplay video গুলোতে ভালো পরিমানের views হলে, sponsorship এর মাধ্যমে টাকা যায় করার সুযোগ আপনার চ্যানেল টিকেও দেওয়া হবে।

#৩. আমার কাছে computer নেই, গেমপ্লে ভিডিও কিভাবে বানাবো ?

যদি আপনার কাছে একটি computer বা laptop নেই, তাহলেও কোনো সমস্যা নেই।

আপনি অনেক সহজে, মোবাইলেই ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করে নিজের গেমিং চ্যানেল শুরু করতে পারবেন।

হে আমি জানি আপনি কি ভাবছেন, কম্পিউটার ছাড়া গেমপ্লে ভিডিও কিভাবে বানাবো তাইতো ?

এই ক্ষেত্রে, গেমপ্লে তৈরি করার জন্য আপনি নিজের smartphone ব্যবহার করতে পারবেন।

YouTube এ গিয়ে দেখলে, আপনি এমন অনেক গেমপ্লে পেয়ে যাবেন, যেগুলি মোবাইলের মাধ্যমে রেকর্ড করা হচ্ছে।

যেমন, pubg, call of duty mobile ইত্যাদি।

আপনি যেকোনো জনপ্রিয় মোবাইল গেমের গেমপ্লে ভিডিও তৈরি করে, নিজের চ্যানেলে আপলোড দিতেই পারবেন।

গেম এর ভিডিও তৈরি করার জন্য, আপনি যেকোনো একটি mobile screen recording app ব্যবহার করতে পারবেন।

যেমন, AZ Screen Recorder, Mobizen Screen Recorder ইত্যাদি।

#৪. Low specification computer দিয়ে gameplay করা যাবে ?

যখন PC তে gameplay video তৈরি করার কথা হচ্ছে, তখন সবার মনে একটাই প্রশ্ন চলে আসে, আমার computer তো অনেক পুরোনো, graphics card নেই, সেই ক্ষেত্রে নতুন নতুন গেম কিভাবে খেলবো।

দেখুন, YouTube এ আপনারা কেবল নতুন গেম নয়, পুরোনো অনেক জনপ্রিয় গেম গুলির গেমপ্লে ভিডিও দেখতে পাবেন।

তাছাড়া, সেই পুরোনো গেমপ্লে গুলোতেই লক্ষ লক্ষ ভিউ হয়ে যাচ্ছে।

তাই, যদি আপনার একটি অনেক পুরোনো কম্পিউটার রয়েছে যেখানে কেবল 2GB, 4GB বা 8GB ram লাগানো আছে, তাহলে নতুন গেম গুলোর খেলার প্রয়োজন নেই।

Super mario, prince of Persia, GTA এবং এরকম আরো অন্যান্য অনেক পুরোনো গেম গুলির গেমপ্লে লোকেরা ২০২০ সালে আপলোড দিচ্ছেন।

এবং, এই গেমপ্লে গুলোতেও লক্ষ লক্ষ views পাওয়া যাচ্ছে।

Prince of Persia gameplay 2020.

ওপরে ছবিতে দেখেই আপনারা হয়তো বুঝতে পারছেন, ইউটিউবে এত্ত পুরোনো একটি গেমের গেমপ্লে ভিডিওতে কেবল ১ মাসের মধ্যেই “২৫৪ হাজার” ভিউস হয়ে গেছে।

তাই, যদি আপনার PC অনেক পুরোনো, তাহলে পুরোনো গেম গুলো খেলে গেমপ্লে তৈরি অবশই করতে পারবেন।

#৫. Gaming channel এর জন্য কি গেম কিনে নিতে হবে ?

দেখুন, যদি আপনারা নিজের মোবাইলেই গেম খেলে সেগুলির গেমপ্লে রেকর্ড করতে চাচ্ছেন, তাহলে Google play store এ, আপনারা প্রায় সব ধরণের গেম ফ্রীতেই পেয়ে যাবেন।

মোবাইলের ক্ষেত্রে আপনার কোনো চিন্তা নেই।

তবে, যদি computer game বা PC games এর কথা বলছেন, তাহলে গেম গুলো কিনে ব্যবহার করার পরামর্শ আমি দিবো।

তাছাড়া, যদি আপনি পুরোনো গেম গুলি খেলে গেমপ্লে রেকর্ড করছেন, তাহলে পুরোনো গেম গুলি বাজারে অনেক কম টাকায় পেয়ে যাবেন।

প্রায় ২০০ থেকে ৫০০ টাকার ভেতরে।

আর যদি তাও, আপনারা ফ্রীতে কম্পিউটার গেম ডাউনলোড করার কথা ভাবছেন, তাহলে ইন্টারনেটে অনেক গেম ডাউনলোডিং ওয়েবসাইট রয়েছে।

এই ক্ষেত্রে, আমার লিখা একটি আর্টিকেল রয়েছে যেখানে ৪ টি সেরা পিসি গেম ডাউনলোড করার ওয়েবসাইটের ব্যাপারে বলেছি।

#৬. গেমপ্লে ভিডিও এডিটিং করাটা কি জরুরি ?

এমনিতে গেমপ্লে ভিডিও গুলো এডিট করার কোনো প্রয়োজন হয়না।

কারণ, সেখানে শুধু আপনার গেম খেলার ভিডিওটি থাকবে।

তবে, যদি আপনি ভিডিওতে title বা অন্যান্য text graphics যেমন intro ইত্যাদি ব্যবহার করার কথা ভাবছেন, তাহলে একটি ফ্রি ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার অবশই ব্যবহার করতে হবে।

তাছাড়া, এই ধরণের গেমিং ভিডিও গুলোতে অন্য কোনো ধরণের এডিটিং এর প্রয়োজন হয়না।

# ৭. অন্যান্য চ্যানেল এর তুলনায় একটি গেমিং ইউটিউব চ্যানেল কেন লাভজনক ?

দেখুন, আপনি অন্যান্য যেকোনো বিষয়ক চ্যানেল যেমন, blogging, টেক, information, entertainment ইত্যাদি তৈরি করলে, কনটেন্ট নিয়ে অনেক চিন্তা করতে হবে।

কারণ, এই চ্যানেল গুলোর ক্ষেত্রে প্রত্যেক ভিডিও তৈরি করার জন্য, আলাদা আলাদা টপিক (topic) এর প্রয়োজন।

তাছাড়া, টপিক পাওয়ার পর, সেই বিষয়ে সম্পূর্ণ রিসার্চ করে একটি ভালো কোয়ালিটি ভিডিও তৈরি করাটা সহজ কাজ নয়।

এর বাইরেও, এতটা কষ্ট করার পর, ইউটিউবে আপনার ভিডিও র্যাংক করবে কি না সেটা কিন্তু অনেক বড় একটি প্রশ্ন।

আর তাই, এই ধরণের চ্যানেলের তুলনায় একটি গেমিং ইউটিউব চ্যানেল অনেক সুবিধা জনক।

এখানে, আপনার কনটেন্ট নিয়ে এতটা বেশি ভাবতে হয়না।

যেকোনো একটি জনপ্রিয় গেম বেছে নিয়ে, তারপর part part বা আলাদা আলাদা episode হিসেবে অনেক দিন ধরে একি গেমের gameplay ভিডিও তৈরি করে দিতে থাকলেই হলো।

আর, যা আমি আগেই বলেছি, গেমপ্লে ভিডিও দেখে লোকেরা এমনিতে অনেক ভালো পান।

তাছাড়া, subscriber ও ভিডিও গুলোতে views সহজেই পাওয়ার পর, YouTube monetization এর জন্য apply করে, approval নিয়ে, টাকা আয় করতে থাকুন।

#৮. কিভাবে তৈরি করবেন একটি গেমিং চ্যানেল ?

ইউটিউবে গেমিং চ্যানেল তৈরি করার তেমন কোনো আলাদা নিয়ম নেই।

সাধারণ চ্যানেল যেভাবে তৈরি করা হয়, ঠিক সেভাবেই আপনার গেমিং এর ক্ষেত্রেও চ্যানেল তৈরি করতে হবে।

  • সবচেয়ে আগে, একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করুন।
  • তারপর, নিজের চ্যানেলের জন্য একটি আকর্ষণীয় লোগো তৈরি করতে হবে।
  • Logo তৈরি ও আপলোড করার পর, চ্যানেল info এবং channel art image দিয়ে দিতে হবে।
  • এখন, নিজের কম্পিউটার বা মোবাইলে ভালো ভালো গেম খেলুন এবং স্ক্রিন রেকর্ডিং সফটওয়্যার এর মাধ্যমে গেমপ্লে ভিডিও রেকর্ড করুন।
  • শেষে, তৈরি করা গেমপ্লে ভিডিও গুলো নিজের ইউটিউবের চ্যানেলে আপলোড করুন।
  • ১০০০ সাবস্ক্রাইবার এবং ৪০০০ ঘন্টার ভিডিও ওয়াচ টাইম হয়ে গেলে, YouTube monetization এর জন্য এপ্লাই করুন।
  • YouTube monetization approval পেয়ে গেলে, আপলোড করা গেমপ্লে ভিডিও গুলোর মাধ্যমে টাকা আয় করতে থাকুন।

তাহলে এভাবেই, অনেক সহজে একটি YouTube gameplay channel তৈরি করে, নিজেই গেম খেলে সেগুলি রেকর্ড করে নিজের চ্যানেলে আপলোড দিয়ে টাকা আয় করতে পারবেন।

বন্ধুরা, বর্তমানে এরকম একটি gaming channel তৈরি করে অনেকেই অনেক টাকা আয় করে নিচ্ছেন।

কারণ, এরকম চ্যানেলে আপলোড করার জন্য gameplay video তৈরি করাটা অনেক সহজ এবং আপনার নিজের বিভিন্ন গেম খেলে অনেক ভালো লাগবে।

এমনিতে, আমিও এরকম একটি channel তৈরি করার কথা চিন্তা করছি।

অবশই পড়ুন –

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error:
Scroll to Top