স্টার্টআপ কি ? (Startup Meaning in Bengali):
নিজের ব্যবসা শুরু করে সেটাকে প্রতিষ্ঠিত করে তোলাটা মোটেও মুখের কথা নয়- এর জন্যে প্রয়োজন সময়, ধৈর্য্য ও একক নিষ্ঠার।
বর্তমান প্রজন্মের বেশিরভাগ তরুণ-তরুণীরা ব্যবসাকেই নিজেদের কেরিয়ার হিসেবে পরিণত করছে।
ভারতের মতো দেশে বহু অনট্রাপ্রনিওর বা উদ্যোক্তা তাদের ব্যবসাতে ব্যাপক সফলতা লাভ করছে।
আর, যখন কোনো ব্যক্তি শূন্য থেকে নিজের ব্যবসার গোড়াপত্তন করে, তখনই আমরা সেই ব্যবসাকে স্টার্টআপ বলে অভিহিত করে থাকি।
আজকে আমাদের এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করতে চলেছি, এই স্টার্টআপ বিষয়টি নিয়ে।
এখানে আমরা বেশ কিছু বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো –
- স্টার্টআপ মানে কি ?
- স্টার্টআপ বলতে কি বুঝায় ?
- স্টার্টআপ শুরু কিভাবে করবেন ?
- স্টার্টআপ শুরু করার প্রক্রিয়া
- স্টার্টআপ ব্যবসার সুবিধা এবং অসুবিধা
স্টার্টআপ কি ? (Startup Meaning in Bengali)
এককথায় স্টার্টআপ হল কোনো নতুন-প্রতিষ্ঠিত ব্যবসা।
অর্থাৎ, আপনি যখন কোনো ব্যবসার সূচনা করেন, তখন সেটার প্রাথমিক পর্যায়ই হল এই স্টার্টআপ।
এই স্টার্টআপ বিজনেস পরিকল্পনা মূলত যারা নিয়ে থাকেন, তারা অনট্রাপ্রনিওর বা উদ্যোগপতি হিসেবে পরিচিত হয়ে থাকেন।
আর, স্টার্টাআপগুলো হাই-গ্রোথ বা উচ্চ-বৃদ্ধির দ্বারা পরিচালিত বিজনেস কাঠামো হওয়ায় তা সরাসরি বিঘ্নিত হওয়া উদ্ভাবন ও চরম অনিশ্চয়তার পরিস্থিতিতে, সমস্যা সমাধানের একটা নতুন উপায় প্রদান করে থাকে।
একটা স্টার্টআপ ব্যবসার ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় একেবারেই নিশ্চিত থাকে,
যেগুলো হল-
- স্টার্টআপ তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পায়।
- মার্কেট বা ইন্ডাস্ট্রিকে ব্যাহত করে।
- যেকোনো মার্কেট সমস্যার সমাধান করে।
- এটি চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে কাজ করে।
স্টার্টআপ বলতে কি বুঝায় – (What Is Startup)
স্টার্টআপ বলতে বোঝায় কোনো কোম্পানির প্রাথমিক পরিচালনার পর্যায়গুলো।
যেকোনো স্টার্টআপের ক্ষেত্রে কোনো উদ্যোক্তারা মার্কেটের চাহিদা আঁচ করে তাদের পরিষেবা বা পণ্য বানিয়ে যোগান দেওয়ার জন্যেই নতুন কোনো ব্যবসার মডেল নিয়ে অগ্রসর হয়ে থাকেন।
এই নতুন ব্যবসায়িক মডেলগুলো মূলত সীমিত মূলধন ও উচ্চ মূল্যের পরিকল্পনা নিয়ে শুরু হয়ে থাকে।
যার জন্যেই, এই স্টার্টআপগুলো ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্টের মতো বিভিন্ন আয়ের উৎসের উপর নির্ভর করে থাকে।
একটা স্টার্টআপ হল একটা কোম্পানি যা দ্রুত বৃদ্ধির জন্য পরিকল্পনা করা হয়েছে।
নতুন প্রতিষ্ঠিত হওয়া কোনো কোম্পানিই যে স্টার্টআপ, তা কিন্তু নয়।
কোনো স্টার্টআপে শুধুমাত্র প্রযুক্তি নিয়েই করা যায়, সেটাও নয়।
কিংবা, ভেঞ্চার ফান্ডিং নেওয়ার কিংবা কোনো ধরণের এক্সিট প্ল্যান নিয়ে কাজ করতে হয়, তাও নয়।
বরং, এই স্টার্টআপের একমাত্র অপরিহার্য জিনিস হল এর বৃদ্ধি।
স্টার্টআপের সাথে যা কিছুই যুক্ত করা হোক না কেন, এর বৃদ্ধি থেকেই এর সূচনা হয়।
স্টার্টআপের প্রধান বৈশিষ্ট্য:
প্রতিষ্ঠাতারা প্রধানত তাদের স্টার্টআপে বিনিয়োগ করলেও, তারা বহিরাগত বিনিয়োগের দিকেও লক্ষ্য রাখে।
স্টার্টআপগুলোকে অবশ্যই তাদের ব্যবসার অবস্থান ও ব্যবসার আইনি কাঠামোর সম্পর্কে বিবেচনা করতে হয়।
এই ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে পরিবার-পরিজন, ঋণ, ক্রাউডফান্ডিং ও ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্টদের থেকে তহবিলের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে।
স্টার্টআপগুলোর উচ্চ ঝুঁকি থাকে; কারণ ব্যর্থতার সম্ভাবনা এখানে খুবই বেশ থাকে।
কিন্তু, এখানে উদ্ভাবনের উপর ফোকাস ও শেখার দুর্দান্ত সুযোগগুলোর সাথে কাজ করার ব্যাপক সুযোগ থাকে।
স্টার্টআপ শুরু কিভাবে করবেন ?
আপনি যদি কখনও ব্যবসা শুরু না করেন, তবে প্রথমবার বিসনেস শুরু করাটা বেশ ভীতিকর বলে মনে হতে পারে।
বিশেষ করে, আপনি জানেন যে, এখানে আপনার প্রয়োজন থাকে অব্যর্থ পরিকল্পনা, অনেক পরিশ্রম ও পর্যাপ্ত মূলধনের।
অন্যদিকে, সমস্ত ব্যবসার মাত্র অর্ধেক ব্যবসায়ী পাঁচ বছর বা তার বেশি সময় ধরে টিকে থাকতে পারে।
তবে, এখানে আপনি স্টার্টআপ কিভাবে শুরু করবেন, তার মৌলিক প্রক্রিয়াগুলোর ব্যাপারে আলোচনা করা হল –
স্টার্টআপ শুরু করার প্রক্রিয়া:
এখন আমরা এক এক করে স্টার্টআপ শুরু করার প্রক্রিয়া গুলো জানবো।
১. দারুণ আইডিয়া দিয়ে শুরু করুন:
ব্যবসা শুরুর প্রথম ধাপে এর শুরুর পদ্ধতিগুলো শিখতে হবে।
সর্বপ্রথমে, ব্যবসার সমস্যা ও সমাধান বোঝাটা একান্তই আবশ্যিক।
আসলে, যেকোনো স্টার্টআপ ব্যবসায়ই শুরু হয় কাস্টোমারদের চাহিদাগুলোকে সফলভাবে পূরণ করার জন্যে।
তবে, সবসময় যে আপনার ব্যবসার আইডিয়াকে অনন্য হতে হবে, তা কিন্তু নয়।
আপনি ক্রেতাদের সুবিধার জন্যে বিদ্যমান পণ্য বা পরিষেবার উন্নতির মাধ্যমেও ব্যবসার সূচনা করতে পারেন।
এক্ষেত্রে, আপনি নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর উপর নজর দিতে পারেন।
- নতুন ফিচার যোগ করা।
- পণ্যের চেহারা পরিবর্তন করা।
- ক্রেতাদের পছন্দের পণ্যের নতুন কোনো ব্যবহার খুঁজে বের করা।
২. ব্যবসার পরিকল্পনা তৈরী করুন:
একবার আপনার আইডিয়া নির্বাচন করা হয়ে গেলে, বিজনেস পরিকল্পনা বানানোটাও একান্তই জরুরি।
এই পরিকল্পনাতে আপনার পরিষেবা বা পণ্যের যথাযথ বিবরণগুলো ভেবে নিতে হবে।
এই পরিকল্পনায় আপনাকে ইন্ডাস্ট্রি, ফাইন্যান্স, অপারেশন ও মার্কেট বিশ্লেষণের তথ্যগুলোও সঠিকভাবে যুক্ত করতে হবে।
তহবিল লাভের ক্ষেত্রে একটা বিজনেস পরিকল্পনা লিখে রাখাটা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।
যেকোনো ব্যাঙ্ক বা ঋণদাতা, সেইসব স্টার্টাপকেই লোন দিতে পছন্দ করে, যারা স্পষ্টভাবে তাদের আর্থিক ব্যবহার ও চাহিদা সম্পর্কে ব্যাখ্যা করে।
৩. ফান্ডিং এর পথ নিরাপদ করুন:
প্রতিটা ব্যবসার মালিকের ক্ষেত্রে স্টার্টআপের খরচ ভিন্ন হয়ে থাকে।
খরচ যে মাপেরই হোক না কেন, ফান্ডিং-এর ক্ষেত্রে ব্যাপারটা সম্ভবত নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর উপর নির্ভর করে –
- ব্যাঙ্ক ঋণ
- ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট
- স্বেচ্ছায় বিনিয়োগকারী
- পরিবার-পরিজন ও বন্ধুবর্গ
এছাড়াও, বিজনেস ক্রেডিট কার্ডের আবেদন করতে পারেন।
অনেক কোম্পানি ০% এপিআর প্রোমোশনের ভিত্তিতে ঋণ দেয়।
অর্থাৎ, সময়ের পূর্বে সমস্ত ব্যালান্স ফেরত দিতে পারলে আপনাকে কোনো সুদ দিতে হয়না।
সঠিক অনুপাতে মূলধন জোগাড় করতে না পারায়, প্রায় ২৯% স্টার্টআপই বন্ধ হয়ে যায়।
তাই, নির্দিষ্ট পরিমাণ পুঁজি পেতে আপনার ঋণের সুদের হারসহ নানান খরচ ও ক্যাশ ফ্লোয়ের সঠিক হিসেব রাখুন।
এর জন্যে আপনি কোনো ভরসাযোগ্য বুককিপিং অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন বাজেটকে সঠিকভাবে বজায় রাখার জন্যে।
৪. নিজেকে কার্যকরী ও সঠিক মানুষদের সাহচর্যে রাখুন:
কোনো ব্যবসার শুরুতে অনেক ঝুঁকি থাকে।
এক্ষেত্রে আপনাকে অপরিহার্য বিজনেস উপদেষ্টাদের গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শের প্রয়োজন হয়-
- এটর্নি
- ব্যাঙ্কার
- পেশাদারি বীমা প্রদানকারী
- সার্টিফাইড পাবলিক হিসাবরক্ষক
স্টার্টআপের প্রথম পর্যায়ে সঠিক স্টার্টআপ দল তৈরী করাটাও খুবই জরুরি।
এখানে আপনাকে সঠিক ব্যবসার পার্টনারদের নির্বচন করতে হয় –
- কনট্রাক্টর
- সহ-প্রতিষ্ঠাতা
- রিমোট ওয়ার্কারের পাশাপাশি প্রাথমিক কর্মচারীরা
৫. সমস্ত আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করুন:
স্টার্টআপগুলোর ক্ষেত্রে সঠিক আইনি পদক্ষেপ নিলে, আপনার ব্যবসাকে তা যথেষ্ট সুরক্ষা দিয়ে থাকে।
পণ্যের ডিজাইন পরিকল্পনা থেকে শুরু করে ব্যবসার অবস্থান নির্দিষ্ট করার প্রতিটা পদক্ষেপে দরকার আইনি পরিকল্পনা।
আইনিভাবে মার্কেটে প্রবেশ করার আগে যেসব বিষয়ে আপনাকে নজর দিতে হবে-
- ব্যবসার নামের নিবন্ধীকরণ
- বিসনেস লাইসেন্সের আবেদন
- ট্যাক্স আইডি নম্বরের ব্যবস্থাপনা
- ট্রেডমার্কের জন্যে আবেদন করা
- আলাদা ব্যাঙ্ক একাউন্ট তৈরী করা
- ইন্ডাস্ট্রির রেগুলেশন সঙ্গে পরিচিত হওয়া
- ক্লায়েন্ট ও অন্যান্য সহকারীদের সাথে বৈধ কন্ট্রাক্ট তৈরী করা
৬. ব্যবসার অবস্থান নির্ধারণ করুন:
যেকোনো ব্যবসাকে বিশ্বাসযোগ্য করার জন্যে একটা রেজিস্টার্ড অফিস বা সঠিক অনলাইন অস্তিত্ব থাকাটা জরুরি।
একটা অফিসের জন্যে আইনিভাবে প্লট কেনা কিংবা ঘর ভাড়া করাটা সম্পূর্ণই আপনার ব্যবসার প্রয়োজনের উপর নির্ভর করে।
তবে, কমার্শিয়াল স্পেস চালানোর জন্যে আপনার ট্যাক্স কর কিছুটা লাঘব করা হয়ে থাকে।
তাই, আপনার নিজের প্লট কিনে অফিস তৈরী করাও ভালো।
তবে, স্টার্টআপগুলোর ক্ষেত্রে অনলাইন প্রেসেন্স খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
অনলাইনে ব্যবসার প্রমোশনের অনেকগুলো সুবিধা আছে –
- আপনি সারা বিশ্বের মানুষের কাছে পৌঁছতে পারেন।
- ক্রেতারা অনলাইনে আপনার প্রোডাক্টের রিভিউ পেতে পারবে ও তাতে আপনার ব্র্যান্ডের নির্ভরযোগ্যতা বাড়াবে।
- আপনার অনলাইন স্টোরকে ২৪ ঘন্টা খুলে রাখতে পারবেন, উইকেন্ড ও ছুটির দিনেও সেলস বাড়াতে পারবেন।
৭. মার্কেটিং কৌশল তৈরী করুন:
মার্কেটিং কৌশল ছাড়া কোনো ব্যবসাই দাঁড়াতে পারে না।
এটি খরচসাপেক্ষ হলেও, ব্যবসার সফলতার জন্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ –
- কোম্পানির খ্যাতি বাড়ায়।
- ব্র্যান্ডের পরিচয় প্রতিষ্ঠা করে।
- কম্পিটেশনের বাইরে আলাদা অস্তিত্ব তৈরি করে।
- দৃশ্যমানতা বাড়িয়ে নতুন ক্রেতাদের আকৃষ্ট করে।
- ক্রেতাদের সাথে মজবুত সম্পর্ক ও ব্র্যান্ড আনুগত্য তৈরি করে।
৮. কাস্টমার বেস তৈরী করুন:
স্টার্টআপ ব্যবসার প্রধান কান্ডারিই হল তার ক্রেতারা।
একটা লয়াল কাস্টমার বেস আপনাকে ব্যবসায় সহজেই সাফল্য এনে দিতে পারে।
এই কাস্টমাররা আপনাকে নানানভাবে সাহায্য করতে পারে –
- আপনার সেলস বাড়াতে পারে।
- আপনার ব্র্যান্ডের ব্যাপারে সম্ভাব্য ক্রেতাদের উৎসাহিত করতে পারে।
- রেফারাল বাড়ায়, যাতে আপনাকে নতুন ক্রেতা খোঁজার জন্যে বেশি সময় ও পরিশ্রম ব্যয় না করতে হয়।
নিচে উল্লেখিত উপায়ের মাধ্যমে আপনি ক্রেতাদের ধরে রাখতে পারবেন –
- লয়াল্টি প্রোগ্রামের ব্যবস্থা করা।
- ভালো মানের কাস্টমার পরিষেবার ব্যবস্থা করা।
- কাস্টমারদের থেকে সরাসরি ফিডব্যাক নেওয়া।
- সবসময় উচ্চমানের পরিষেবা বা পণ্য অফার করা।
- মার্কেট অনুসন্ধানের মাধ্যমে ক্রেতাদের চাহিদা নির্ধারণ করা।
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং-এর মাধ্যমে ইন্ফ্লুয়েন্সারদের দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে আপনার পণ্য বা পরিষেবার প্রচার করা।
৯. পরিবর্তনের পরিকল্পনা নিন:
স্টার্টআপ শুরুর কয়েক বছরের মধ্যেই এর পরিচালনার ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন আসতে পারে।
সফলতার প্রধান চাবিকাঠি হল ব্যবসাকে পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নিয়ে বিকশিত করা।
এর জন্যে আপনি বেশ কিছু স্ট্রাটেজি নিতে পারেন –
- আপনার ইন্ডাস্ট্রির ট্রেন্ডগুলোর সম্পর্কে আপডেটড থাকুন।
- ক্রেতা, সরবরাহকারী ও কর্মচারীদের প্রতিক্রিয়া থেকে শিক্ষা নিন।
- উন্নত চিন্তাধারা বহনকারীদের নিয়োগ করুন যারা আপনার দলের সাথে সহজেই খাপ খাইয়ে নিতে পারবে।
স্টার্টআপ ব্যবসার সুবিধা এবং অসুবিধা:
যেকোনো স্টার্টআপের সুবিধা ও অসুবিধা দুটো দিকই রয়েছে।
সুবিধা:
নিচে এর কয়েকটি সুবিধার কথা বর্ণনা করা হল –
১. দ্রুততা:
যেহেতু, এর কোনো নিশ্চয়তা থাকে না, তাই এই ব্যবসার ক্ষেত্রে পরিবর্তনের সাথে কোম্পানিগুলোকে নিজেদের ব্যবসায়িক কৌশল সময় মতো পাল্টে নিতে হয়।
কোনো নির্দিষ্ট প্ল্যান না থাকায়, এখানে টিকে থাকার তাগিদে ঐক্যবদ্ধ দলগুলো যেকোনো কৌশলে ও নমনীয়তার সাথে দ্রুত পরিবর্তনের দিকে এগিয়ে যায়।
২. দক্ষতা:
নির্দিষ্ট কোনো ফান্ডিং না থাকায়, এরা কম লোকবল, কম বাজেটেও দুর্দান্তভাবে প্রতিযোগীতামূলকভাবে ব্যবসা চালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
নিজের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান থাকায় তারা নিজেদের টীম এফোর্টের উপর বিশাল গুরুত্ব দেয়।
আর, পার্টনারশিপের জন্যে আরও অনেক ছোট প্রতিষ্ঠানের উপর নির্ভর করে।
এখানে কর্মচারীরা সকলেই একই ধরণের বিশ্বাস, প্যাশন ও মূল্য ভাগ করে নেয়।
৩. ব্যক্তিগতকরণ:
কাস্টমারদের চাহিদার ভিত্তিতে স্টার্টআপগুলো তৈরি হয় বলেই, এই কোম্পানিগুলো ক্রেতাদের ব্যক্তিগত চাহিদার সাথে নিজের ব্যবসাকে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত করে ফেলে।
যে কারণেই এরা গভীর মার্কেট অনুসন্ধানের মাধ্যমে ক্রেতাদের সাথে সরাসরি সম্পর্ক তৈরী করে বিশেষ অফার ও প্রতিক্রিয়াশীল সমাধান প্রদান করে।
৪. বহুমুখিতা ও নমনীয়তা:
স্টার্টআপ কর্মচারীরা মাল্টিটাস্কার হয়ে থাকে, অর্থাৎ একজন সেলসপার্সনই এখানে রিলেশনশিপ ম্যানেজার হিসেবে কাজ করে থাকেন।
যে কারণে, এরা নিজেদের ভুল শুধরানোর ব্যাপারে অনেকটাই সহনশীল হয়ে থাকে।
যা তাদেরকে এমার্জেন্সি অবস্থাতে সেরা কাস্টমার রিলেশনশিপ গড়ে তুলতে সাহায্য করে।
একটা স্টার্টআপ অনেকটাই নমনীয় হতে পারে, এখানে আপনি আপনার সময় ও সুযোগ অনুসারে ঘন্টার পর ঘন্টা কাজ করতে পারেন।
অসুবিধা:
এখানে স্টার্টআপ এর অসুবিধা গুলো আলোচনা করা হলো।
১. ঝুঁকি:
স্টার্টআপে ঝুঁকির মাত্রা খুব বেশি।
অনেক ব্যবসায়ই প্রথম এক বছরের মধ্যেই উঠে যায়।
অতিরিক্ত ঝুঁকির মধ্যে কাজ করার ফলে, অনেক কোম্পানিই তাদের কৌশলগত লক্ষ্য থেকে সরে যায়।
কিংবা, তাদের সেলস কৌশলের ব্যাপারে তারা অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হওয়ার ফলে, অথবা মার্কেটে সুযোগ না পাওয়া ফলেও ব্যর্থ হয়ে যায়।
ঝুঁকির ব্যাপক সম্ভাবনার ফলে অনেক দক্ষ কর্মচারীরাই স্টার্টআপে কাজ করতেও চায় না।
২. মূলধনের অভাব:
কম মূলধনের কারণে অনেক সময়ে বড় বাজেটের প্রতিযোগীর সামনে পড়ে অনেক স্টার্টআপই বন্ধ হয়ে যায়।
তাই, সঠিকভাবে পুঁজির সরবরাহ না থাকলে, কোনো নতুন কোম্পানি মার্কেটে সফলভাবে এলেও অসম প্রতিযোগিতার ফলে অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলে।
৩. কম্পেন্সেশন:
স্টার্টআপে সফল হওয়াটা একটা সুদূরপ্রসারী ঘটনা।
একটা ব্যবসাকে দাঁড় করাতে প্রয়োজন অনিশ্চিত ওয়ার্কিং আওয়ার্স ও অক্লান্ত পরিশ্রম।
যা প্রথমদিকে খুব সামান্য মুনাফা নিয়ে আসে আর এর থেকে প্রচুর লাভ পেতে অনেকটা সময় অপেক্ষা করতে হয়।
অনেক স্টার্টআপ ব্যর্থ হয়, কারণ তারা তাদের কর্মচারীদের সঠিকভাবে বেতন দিতে পারে না আর এখানেই তাদের কর্মীরা কোম্পানির ব্যাপারে উৎসাহ হারিয়ে ফেলে কাজ ছেড়ে দেয়।
৪. বাজারে প্রবেশ করা:
ক্রেতাদের স্বভাবই হল পুরোনো ব্র্যান্ডের প্রতি লয়াল্টি ধরে রাখা।
যে কারণে, অনেক সময়েই স্টার্টআপগুলো মার খেয়ে যায়।
এই কারণেই, নতুন ক্রেতা বেস তৈরী করার জন্যে নতুন কোম্পানিগুলোকে মার্কেটে ঢোকার জন্যে যথেষ্ট খরচ করতে হয়।
তাই, মার্কেটের চাহিদা বুঝতে বহু স্টার্টআপই বিশাল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়।
৫. দল গঠনে ব্যর্থতা:
কিছু কিছু স্টার্টআপ শুরুই হয় মরিয়াভাব থেকে।
যেখানে প্রতিষ্ঠাতারা নিজেদের ভূমিকার ব্যাপারে নিশ্চিতও থাকে না।
যে কারণে এরা ভালো দল গঠন করতে বেশিরভাগ সময়েই ব্যর্থ হয়।
একটা সফল স্টার্টআপের জন্যে ভালো প্রতিষ্ঠাতা ও সহকারীর প্রয়োজন হয়।
যারা তাদের পরিপূরক ব্যক্তিত্ব এবং দক্ষতার মাধ্যমে দলকে সঠিকভাবে পরিচালনা করে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।
আমাদের শেষ কথা,,
আমাদের আজকের স্টার্টআপ কি বা স্টার্টআপ এর মানে নিয়ে লেখা আর্টিকেলটি এখানেই শেষ হল।
লেখাটি পছন্দ হলে অবশ্যই তা কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন।
এছাড়া, স্টার্টআপ (startup) নিয়ে যদি আপনাদের মনে কোনো ধরণের প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকে,
তাহলে সেটাও কিন্তু নিচে কমেন্ট করে অবশই জানাবেন।