কিভাবে আয় করা যাবে মাসে ২০ হাজার টাকা? উপায় কি? একটা লাভজনক আয়ের উৎস আপনার জীবনে অনেক সুবিধা ও নিরাপত্তা নিয়ে আসে। কারণ, ভালো ইনকাম আপনাকে একটা আরামদায়ক জীবন দিতে পারে ও অবশই আপনার পরিবারের জন্য স্থিতিশীলতা নিয়ে আসতে সক্ষম।
তবে যদি আপনি প্রতি মাসে অন্তত ২০,০০০ আয় করতে চাচ্ছেন সেক্ষেত্রে নানান অনলাইন উপায় গুলো অবশই উপলব্ধ রয়েছে। Blogging, YouTube, এবং Affiliate Marketing, এর মতো নানান অনলাইন উপায় গুলোকে কাজে লাগিয়ে বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার ক্রিয়েটররা প্রতিমাসে হাজার হাজার টাকা অবশই আয় করে নিতে পারছেন।
এছাড়া, টাকা ইনকাম করার এই উপায় গুলোকে আপনারা পার্ট – টাইম হিসেবে কাজে লাগিয়ে চাকরি বা পড়াশোনার পাশাপাশিও ইনকাম করতে পারবেন। তাহলে চলুন, আর দেরি না করে মাসে ২০ হাজার টাকা আয় করার উপায় গুলো একে একে জেনেনেই।
মাসে ২০ হাজার টাকা আয় করার উপায় গুলো কি কি?
এখানে আমার শুরুতেই বিভিন্ন পেশার গুলোর কথা উল্লেখ করেছি, এই পেশাগুলো নিয়ে নির্দিষ্ট জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা থাকলেই মাসিক গড়ে ২০,০০০ টাকা রোজগার করাটা মোটেও কঠিন বিষয় হবে না। তবে, সময়, পরিস্থিতি, কাজের মান ও অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে আয়ের পরিমাণ কম-বেশি হতেই পারে।
১. ট্রান্সলেশন পরিষেবা দিয়ে আয় করুন:
আপনার যদি কোনো আঞ্চলিক কিংবা আন্তর্জাতিক ভাষার উপর চরম দখল থাকে; তাহলে, ইন্টারনেটের মাধ্যমেই আপনি ঘরে থেকে ট্রান্সলেশন বা অনুবাদ পরিষেবা প্রদান করে ভালো পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে পারেন। এই কাজটিতে কোনোরকম বিনিয়োগের প্রয়োজন হয় না, শুধুমাত্র ভাষাগত জ্ঞান ও সামান্য কম্পিউটার জ্ঞান থাকলেই কাজ হাসিল করা যায়। নানান অনলাইন freelancing ওয়েবসাইট গুলো রয়েছে যেগুলোতে এই ধরণের ট্রান্সলেশন জব গুলো পাওয়া যাবে।
২. ব্লগিং করে আয় করুন:
একটা কম্পিউটার বা ল্যাপটপ থাকলেই বাড়ি থেকেই আপনি ব্লগিং শুরু করতে পারবেন। এই পেশাতে সবথেকে বেশি প্রয়োজন হয় সৃজনশীল লিখনশৈলী ও ব্লগ পাবলিশ করার নূন্যতম জ্ঞানের। আপনি একজন পার্ট-টাইম কিংবা ফুল-টাইম ব্লগার হিসেবেও কাজ করতে পারেন। ব্লগিং-এর ব্যাপারে পারদর্শী হওয়ার জন্যে কোনো রকমের বিশেষ ক্যারিয়ারের প্রয়োজন নেই।
দ্রুত ইন্টারনেট সংযোগ হল এই পেশার সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। যেকোনো বয়সের মানুষই ব্লগ তৈরি করে নিয়মিত অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। গত ৪ বছর ধরেই আমি আমার বাংলা ব্লগ থেকে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা প্রতি মাসে আয় করে চলেছি।
৩. ইউটিউবার থেকে ইনকাম:
আমাদের চারপাশে আমরা অনেক ইউটিউবারেরই নাম শুনে থাকি। সত্যি বলতে একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করে সেখানে নিয়মিত ভিডিও পাবলিশ করেও আপনি নিয়মিত নিজের চ্যানেল থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। সত্যি বলতে একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে প্রতি মাসে কমেও ২০ হাজার টাকা আয় করাটা এতটা কঠিন কাজ মোটেও না।
তবে শুনতে অনেক বেশি মজাদার ও কমনীয় হলেও, আসলেই ইউটিউবে ক্যারিয়ার গড়ে তোলা খুব একটা সহজ বিষয় নয়। এখানে প্রচু প্রতিযোগিতা থাকার পাশাপাশি একজন সফল ইউটিউবার হতে গেলে প্রয়োজন হবে অসামান্য সৃজনশীলতা, ভিডিও বানানো ও সম্পাদনা সম্পর্কে জানা এবং প্রচুর পরিমাণ ধৈর্য্যের।
তবে, একবার ইউটিউবার হিসেবে নাম করতে পারলে, অর্থের পাশাপাশি অনেক প্রতিপত্তিও মেলে। আর, সবথেকে বড় কথা হল এই যে, এই কাজে স্বাধীনতা তো পাবেনই এর সাথে নিজের পছন্দমতো যখন খুশি তখন কাজ করা যায়।
৪. আর্টিকেল/কনটেন্ট রাইটিং করুন:
বর্তমানে বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রিতে কনটেন্ট রাইটিং-এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। প্রায় প্রতিটি কোম্পানি বা ফার্ম নিজেদের অনলাইন অস্তিত্ব প্রতিষ্ঠার প্রতি অত্যন্ত যত্নশীল। আর, নিজেদের অনলাইন অস্তিত্ব তৈরির প্রধান মাধ্যম হল নিজেদের কনটেন্ট বা বিষয়বস্তুকে ভালোভাবে বর্ণনা করে মানুষের কাছে পরিবেশন করা। ভালো মানের কোয়ালিটি কনটেন্ট পাওয়ার জন্যেই কোম্পানিগুলো বিভিন্ন কনটেন্ট রাইটারদের দ্বারস্থ হয়।
এবার একজন ফ্রিল্যান্স কনটেন্ট রাইটার হিসেবে আপনি বা আমি জেকেও এই কোম্পানি, ব্র্যান্ড বা ওয়েবসাইট গুলোর জন্য কনটেন্ট লিখতে পারবো। তবে একজন দক্ষ কনটেন্ট লেখক হতে গেলে যদিও দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার দরকার পড়ে; তবে লেখার শৈলী ভালো হলে শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে যেকোনো বয়স বা পেশার মানুষই কনটেন্ট রাইটিং থেকে ভালো পরিমাণ অর্থ রোজগার করতে পারেন। এক্ষেত্রে মাসে ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার আয় করাটাও এই পেশায় সম্ভব।
৫. এসইও (SEO) এক্সপার্ট হিসেবে ইনকাম করুন:
এই ধরণের সেক্টরটি পুরোপুরিভাবেই প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রের মধ্যে পড়ে। তবে, প্রযুক্তির ব্যাপারে শিখতে ও জানতে আগ্রহী যেকোনো ব্যক্তিই সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশান শিখতে পারেন।
এই সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশান (SEO) হল ডিজিটাল মার্কেটিং-এর একটা অন্যতম প্রধান হাতিয়ার। একজন এসইও এক্সপার্টের দায়িত্ব থাকে এমন কীওয়ার্ড খোঁজা বা বার করা, যা একটি নির্দিষ্ট সার্চ ইঞ্জিনে কোম্পানি বা ক্লায়েন্টের ওয়েবসাইটের র্যাঙ্কিং বাড়াতে সাহায্য করবে। বর্তমানে, এটি মাসিকভাবে উপার্জনের একটা ভালো অপশানে পরিণত হয়েছে।
একজন Freelance SEO এক্সপার্ট হিসেবে আপনি পার্ট – টাইম বা ফুল – টাইম কাজ করে ভালো অংকের টাকা প্রতি মাসে আয় করে নিতে পারবেন।
৬. ওয়েব ডিজানিং:
ওয়েব ডিজানিং হল ওয়েবপেজ লেআউট ও ডিসাইন করার এক ধরণের কাজ। এই কাজের জন্যে প্রয়োজন হয় ডিসাইন তৈরী করার প্রতি ন্যাক ও যথেষ্ট সৃজনশীলতার।
এই ওয়েব ডিজানিং-এর কাজ পার্ট-টাইম কিংবা ফুল-টাইম দুটোই হতে পারে। আপনি আপনার সুবিধা ও পছন্দমতো ওয়েব ডিজানিং-কে নিয়মিত মাসিক আয়ের উৎসে পরিণত করতেই পারেন। ওয়েব ডিজাইনিং এর প্রজেক্ট বা কাজ গুলো আপনি অনলাইন বা অফলাইন দুভাবেই খুঁজতে ও পেতে পারবেন।
৭. প্রোডাক্ট টেস্টিং জবস:
মাসিকভাবে অনেক মার্কেট রিসার্চ কোম্পানিগুলো বিভিন্ন পণ্য তৈরি করে। আর, যেকোনো পণ্য মার্কেটে লঞ্চ করার আগে, ব্যবহারকারীর দ্বারা পরীক্ষার প্রয়োজন হয়। এখানেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে একজন প্রোডাক্ট টেস্টার। একজন পণ্য পরীক্ষককে কোনো নির্দিষ্ট পণ্য বা পরিষেবাগুলোর ত্রুটিগুলো খুঁজে বের করে তার উন্নতির সুযোগ-সন্ধানের পথ বাতলে দিতে হয়।
এই পেশাটি যেকোনো শিক্ষার্থী ও প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের কাছে অর্থ উপার্জনের সুযোগ ও পণ্য বিকাশের জন্যে একটা দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে আসতে পারে।
৮. ভিডিও এডিটিং এর কাজ করুন:
ডিজিটাল বিশ্বের দৌলতে কোম্পানি ও এজেন্সী গুলো তাদের প্রমোশন বা প্রচারের জন্যে ভিডিও কনটেন্ট গুলো বানিয়ে থাকে। তাই, ভিডিও সম্পাদনা বা এডিটিং খুবই ভরসাযোগ্য ও চাহিদাজনক পেশা হতে পারে। আপনি যদি ভিডিও সম্পাদনার ব্যাপারে আগ্রহী থাকেন, তবে আপনি পার্ট-টাইম থেকে শুরু করে ফুল-টাইম হিসেবেও বিভিন্ন ভিডিও ক্রিয়েটরদের এডিটিং-এর কাজগুলো করতে ও দেখতে পারেন এবং এর দ্বারা নিয়মিত ইনকামের একটি রাস্তা তৈরি করতে পারেন।
৯. ওয়েব ডেভেলপিং:
যেকোনো ওয়েবপেজের বিকাশ ও সঠিক উপস্থাপনার পিছনে থাকে একজন ওয়েব ডেভেলপারের চরম ভূমিকা। একজন ওয়েব ডেভেলপার কোডিং ও প্রযুক্তিগত ত্রুটিগুলো শুধরানোর কাজ করে থাকেন। আর মনে রাখবেন একজন ওয়েব ডেভেলপার হওয়ার জন্য, আপনার মৌলিক প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজের উপর ব্যাপক দক্ষতা থাকাটা জরুরি। এই কাজ বাড়িতে বসেই নিয়মিত অর্থ উপার্জনের জন্য একটা যথেষ্ট উৎপাদনশীল কাজের সুযোগ করে দিতে পারে।
১০. ট্রাভেল রিভিউ:
আপনি যদি ঘুরে-বেড়াতে পছন্দ করেন, তাহলে আপনি ট্রাভেল রিভিউ করার মাধ্যমেও অর্থ আয় করতে পারবেন। আপনি কোনো ওয়েবপেজ বা ট্রাভেল ব্লগ বা ভ্লগ শুরু করে সেখানে নিজের রিভিউ গুলো পাবলিশ করতে পারেন। ট্রাভেলিং-সংক্রান্ত বিষয় সম্পর্কে বহু মানুষ অনলাইনে পড়তে ও দেখতে পছন্দ করেন। তাই, আপনি ট্রাভেল রিভিউ দেওয়ার মাধ্যমেও টাকা রোজগার শুরু করতে পারেন। আর, এই পেশাতে অনেকটা লাভেরও আশা থাকে।
১১. সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এক্সপার্ট:
যেহেতু, এখনকার বহু মানুষরেই সোশ্যাল মিডিয়া উপস্থিতি রয়েছে, তাই এখনকার বিজ্ঞাপনগুলো মূলত সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেই বেশিরভাগ প্রচার করা হয়ে থাকে। এতে একসাথে হাজার হাজার লোকেদের কাছে বিজ্ঞাপন গুলো পৌঁছে দেওয়া সম্ভব। এবার, আপনি চাইলে একজন সোশ্যাল মিডিয়া এক্সপার্ট হিসেবে নানান কোম্পানি বা ব্যক্তিদের সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম গুলো হ্যান্ডেল করতে পারবেন। এই কাজ আপনি পার্ট – টাইম বা ফুল-টাইম হিসাবে করতে পারেন।
এই কাজ করে শুধুমাত্র একজন ক্লায়েন্ট থেকে ২০ হাজার টাকা আয় করতে না পারলেও পার্ট – টাইম একাধিক ক্লায়েন্টদের কাজ গুলো করে মাসে ২০ হাজার টাকা আরামে আয় করে নিতে পারবেন।
একজন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বিশেষজ্ঞ হিসেবে আপনাকে সোশ্যাল মিডিয়াতে সঠিক বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্যে সঠিক বিবরণগুলো অনুসন্ধান করে প্রাসঙ্গিক বিজ্ঞাপন পোস্ট করতে হয়। এই পেশাটি বর্তমানে খুবই জনপ্রিয় ও অর্থ রোজগারের একটা স্থির উপায় হিসেবে পরিগণিত হয়ে থাকে। যা আমি আগেই বলেছি, এখানেও আপনি পার্ট-টাইম বা ফুল-টাইম হিসেবে কাজ করতে পারেন।
১২. কনটেন্ট ক্রিয়েটর:
আসলে কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের কাজ হলো প্রমোশন ও বিনোদনের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ডোমেইনে, ওয়েবসাইট বা অনলাইন প্লাটফর্ম গুলোর উপর কনটেন্ট প্রস্তুত করে পাবলিশ করা। এবার আপনি চাইলে ইন্টারনেটে উপলব্ধ নানান ওয়েবসাইট বা প্লাটফর্ম গুলোর উপর নানান ধরণের কনটেন্ট পাবলিশ করেও নিয়মিত অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
উদাহরণ স্বরূপ: আপনি চাইলে quara-তে নানান ইউজারদের দ্বারা করা প্রশ্নের উত্তর গুলো পাবলিশ করে Quora Partner Program (QPP) থেকে টাকা রোজগার করতে পারবেন। ঠিক সেভাবেই, Medium এর মতো জনপ্রিয় ওয়েবসাইটের উপর নিয়মিত টেক্সট আর্টিকেল গুলো পাবলিশ করে Medium Partner Program থেকেও টাকা আয় করতে পারেন।
১৩. অনলাইন টিচিং করে ইনকাম:
প্রতিমাসে ২০ হাজার টাকা আয় করার জন্য অনলাইন টিচিং এর মতো কাজটিকেও আপনি কাজে লাগাতে পারেন। এক্ষেত্রে, শিক্ষকতার ব্যাপারে প্যাশন থাকলে, আপনি বাড়িতে বসেই রোজগারের সুযোগ পেয়ে যেতে পারেন। ভালো ইন্টারনেট সংযোগ, বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান ও সঠিক যোগাযোগের দক্ষতা থাকলেই, একজন দক্ষ অনলাইন শিক্ষক হয়ে ওঠা যায়। এখানে আপনাকে বেশি অর্থ বিনিয়োগেরও প্রয়োজন হয় না, এমনকি আপনি আপনার পড়ানোর কাজ ঘরে বসেই বিনা বাধায় পছন্দমতো সময়ে করতে পারবেন।
১৪. গ্রাফিক ডিজানিং করে আয়:
একজন গ্রাফিক ডিজাইনার নানান প্রচারমূলক প্ল্যাটফর্মের জন্য পোস্টার ও বিজ্ঞাপন পেজ তৈরির করার কাজ করে থাকেন। এছাড়া নানান ধরণের ডিজিটাল গ্রাফিক্স, লোগো, ইত্যাদি তৈরি করার ক্ষেত্রেও গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের প্রয়োজন হয়।
এই পেশাতে সৃজনশীলতা ও কম্পিউটার দক্ষতাই হল আসল বিষয়। কেননা ডিজাইনিং রিলেটেড কাজ গুলো আপনাকে একটি ল্যাপটপ বা ডেস্কটপেই করতে হয়। Fiverr, Freelancer.com, Guru, ইত্যাদি এই ধরণের freelancing marketplace গুলোতে লোগো ডিজাইন এবং অন্যান্য গ্রাফিক্স ডিজাইন রিলেটেড প্রচুর প্রজেক্ট গুলো পেয়ে যাবেন।
১৫. ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সপার্ট:
ডিজিটাল মার্কেটিং বিশেষজ্ঞ হতে গেলে, কোনো বিশেষ প্রযুক্তিগত ডিগ্রির দরকার নেই। শুধু জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও সৃজনশীলতাই এই পেশার জন্যে যথেষ্ট। যেকোনো ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে পরিষেবা বা পণ্যের সঠিক প্রচারের জন্য ডিজিটাল বিপণন বিশেষজ্ঞকে হায়ার করা হয়ে থাকে। একজন ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সপার্টক হিসেবে আপনাকে সারাক্ষণ বিজ্ঞাপনের কার্যকারিতা সম্পর্কে বিশেষ অবশই খেয়াল রাখতে হয়। সেই কারণেই, এখানে ইনকামের পরিমাণ অন্য যেকোনো অনলাইন কাজের তুলনায় অনেকটাই বেশি।
১৬. কোডার হয়ে আয় করুন:
কোডিং আপনার নেশা হলে, এটাকে আপনার পেশাতে পরিণত করতে বেশি পরিশ্রম করতে হবে না। আপনি একজন ফ্রিল্যান্স কোডার হিসেবেই অনলাইনে নানান প্রজেক্টস বা চাকরি গুলো করতে পারেন। আপনি যদি CSS, Python, HTML, ইত্যাদির ব্যাপারে ও অংকে পারদর্শী হয়ে থাকেন; তবে আপনি একজন পেশাদার কোডার হওয়ার দক্ষতা রাখেন। এখনকার মার্কেটে কোডারদের বিশাল চাহিদাও রয়েছে। তাই, আপনি চাইলে পার্ট-টাইমার হিসেবে কোডিং এর কাজ করে মাসিক হাজার হাজার টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
১৭. অনলাইন মেন্টর:
এখনকার জটিল জীবনযাত্রায় বহু মানুষেরই বিভিন্ন পরামর্শদাতার প্রয়োজন হয়ে থাকে। তবে, মানুষজন তাদের ব্যস্ত সময়সূচী থেকে সময় বের করে কোনো পরামর্শ নেওয়ার পিছনে সময় বিনিয়োগ করতে অনেক সময়েই অপারোগ হন। তাই, বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষই ভ্রমণে তাদের সময় ও অর্থ বাঁচাতে অনলাইন মেন্টরশিপ বেছে নেন। এই কারণেই, অনলাইন মেন্টরশিপ হয়ে উঠতে পারে আপনার মাসিক অর্থ উপার্জনের একটা সেরা রাস্তা।
১৮. পিএইচপি/এইচটিএমেল এক্সপার্ট:
HTML, PHP, ও CSS হল ওয়েবসাইট ডিজাইনিং ও ডেভেলপমেন্টের জন্য ব্যবহৃত সাধারণ কম্পিউটিং ল্যাঙ্গুয়েজ। আর, এই ভাষাগুলো সম্পর্কে যদি ভালো জ্ঞান থাকে, তবে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট সেক্টরে আপনি আরামসে চাকরি পেয়ে যেতে পারেন। আইটি সেক্টরের আকস্মিক উত্থানের ফলে বিশেষ করে PHP এক্সপার্টদের চাহিদা চরমে উঠেছে। যে কারণে, এখান থেকে ফুল-টাইম বা পার্ট-টাইম অর্থ রোজগার করাটাও বেশ সহজ হয়ে উঠেছে।
১৯. মার্কেট রিসার্চারস:
একজন মার্কেট রিসার্চার, সমগ্র ব্যবসা বিশ্লেষণ করে সেখানে ব্যবসায়িক পরিকল্পনার ত্রুটিগুলো বের করতে সহায়তা করে। মার্কেট অনুসন্ধানের কাজ আপনার মস্তিষ্কের নমনীয়তা বাড়ায় ও নতুন নতুন ব্যবসায়িক কৌশল ও ধারণা নিয়ে আসতে সাহায্য করে।
আপনি যদি কমার্স ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে এসে থাকেন, তবে এই চাকরির জন্য আপনি একদম উপযুক্ত একজন বলে বিবেচিত হবেন।আমাদের আজকের ২০,০০০ টাকা মাসিক আয়ের উপায়গুলো নিয়ে লেখা আর্টিকেলটি এখানেই শেষ হল। লেখাটি পছন্দ হলে অবশ্যই তা কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন।
FAQ:
অনলাইনে মাসে ২০০০০ টাকা আয় করার জন্য আপনার মধ্যে কিছু বিশেষ দক্ষতা এবং কৌশল গুলো অবশই থাকতে হবে। যেমন, কেও কেও ভালো ভালো ভিডিও কনটেন্ট বানাতে জানেন, আবার কেও আছেন যে নাকি উচ্চমানের টেক্সট আর্টিকেল গুলো লিখেন। অনলাইন কনটেন্ট পাবলিশিং এবং এগুলো ছাড়াও, নানান ধরণের বিকল্প গুলো রয়েছে যেমন এড রেভিনিউ, ফ্রিল্যান্সিং, পেইড মার্কেটিং, বা এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মতো কৌশল গুলো কাজে লাগিয়ে অনলাইনে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা উপার্জন করা যেতে পারে।
ব্লগিং করে মাসে ১০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আপনি ইনকাম করে নিতে পারবেন। আমি নিজে গত কয়েক বছর ধরে শুধুমাত্র ব্লগিং করেই মাসে ২০ হাজার থেকে ৫০ হাজার ইনকাম করে চলেছি। তবে ব্লগিং করে রাতারাতি টাকা আয় করা যাবেনা। এক্ষেত্রে সঠিক নিয়ম, কৌশল, SEO এবং হাই কোয়ালিটি কনটেন্ট এর জ্ঞান অবশই থাকতে হয়।
অনলাইনে অর্থ উপার্জন করাটা বর্তমানে একটি কৌশল বললেই চলে। অনলাইন থেকে অনেকেই হাজার লক্ষ টাকা প্রতিমাসে আয় করছেন আবার বিপরীতে অনেকেই হাজার চেষ্টা করেও সফল হতে পারছেননা। তাই, অনলাইন থেকে টাকা আয় করার জন্য সঠিক ইনকামের রাস্তা থাকার পাশাপাশি নিয়মিয়তা বজায় রেখে কাজ করাটাও অনেক জরুরি।
অবশই পড়ুন: