মোবাইলে ছবি দিয়ে গান বানানোর সেরা ৯টি সফটওয়্যার

Last updated on July 24th, 2023 at 11:32 am

ছবি দিয়ে গান বানানোর সফটওয়্যার (Android mobile software to create videos using images):

ছবি দিয়ে গান বানানোর সফটওয়্যার
Best android software to create videos using images.

স্লাইডশো ভিডিও গুলো যেকোনো ফটোগ্রাফের সংগ্রহকে অত্যাশ্চর্য ভিজ্যুয়াল এক্সপেরিয়েন্স বদলে দিতে পারে। 

আর, আপনি যদি পারিবারিক ছবি কম্পাইল করার জন্যে কিংবা সোশ্যাল মিডিয়াতে আপনার ব্যবসার প্রচার করার উদ্দ্যেশ্যে বা যেকোনো কারণেই ছবি দিয়ে গান বানানোর সেরা মোবাইল অ্যাপ গুলো খুঁজে থাকেন,

তাহলে আমরা আপনাকে হদিশ দেবো বেশ কয়েকটি ভালো, ইউসার-ফ্রেন্ডলি ভিডিও এডিটিং অ্যাপ বা সফটওয়্যার সম্বন্ধে। 

এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করতে চলেছি, এমনই কিছু বেস্ট ছবি ব্যবহার করে গান বানানোর সেরা ৯টি সফটওয়্যার সম্পর্কে।

এগুলোর মধ্যে আপনি বিনামূল্য কিংবা পেইড মেম্বারশিপ দুয়েরই অপশন পেয়ে যাবেন। 

ছবি দিয়ে গান বানানোর সফটওয়্যার এর তালিকা: (সেরা ৯টি)

এই সফটওয়্যারগুলো আপনাকে আরও সচেতন ও আকর্ষণীয়ভাবে মিউজিক ট্র্যাক যোগ করে সহজেই পেশাদারি কায়দাতে ছবির সাহায্যে ভিডিও সম্পাদনার যাত্রা শুরু করতে সাহায্য করতে পারে।

১. VivaVideo:

VivaVideo হল বিনামূল্যের একটা অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ ও সফটওয়্যার। 

এমনকি এর ফ্রীয়ের পাশাপাশি পেইড ভার্সনও রয়েছে। 

এখানে আপনি সাধারণ ভিডিও এডিটিং-এর পাশাপাশি ছবি দিয়ে গান যুক্ত করেও সহজেই ভিডিও বানাতে পারবেন। 

এখানে আপনি অনেক স্পেশাল এফেক্টস/ফিল্টার/স্টিকার/অ্যানিমেটেড ক্লিপস পাবেন।  

ফিচার:

  • নানান ভিডিও এডিটিং এফেক্ট আছে 
  • এফেক্ট ও গানযুক্ত পেশাদার মিউসিক মেকার 
  • ছবি ও গান লাগিয়ে সহজে ভিডিও বানানো যায়
  • 4K পর্যন্ত রেসল্যুশনে ভিডিও এক্সপোর্ট করা যায়  
  • অনেক ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে একটা ভিডিও বানানো যায় 
  • ভিডিও সম্পাদনার সময়ে ভিডিও কাট, এডিট, মার্জ ও পেস্ট করা যায়  

২. VideoShow:

VideoShow সফটওয়্যারটিতে দারুণ সব পেশাদারি ভিডিও এডিটিং ফিচার রয়েছে। 

এই ভিডিও এডিটিং অ্যাপটি নতুন ও পেশাদার সবার জন্যেই ভালো। 

এই অ্যাপের সাহায্যে আপনি যেকোনো ভিডিওতে সাবটাইটেল যুক্ত করতে পারেন।

এখানে বিভিন্ন ধরণের ভিডিও এডিটিং এফেক্ট ও সং আছে, যা আপনার ভিডিওকে আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে।

ফিচার:

  • আর্টিস্টিকভাবে সাবটাইটেল যুক্ত করা যায় 
  • অ্যাপে সরাসরি ভিডিওর সাইজ কমানো যায়  
  • পেশাদার ও নতুন এডিটরদের জন্যে ভালো অ্যাপ
  • এক্সিস্টিং ভিডিও থেকে অডিও এক্সট্র্যাক্ট করা যায় 
  • এখানে সরাসরি ভিডিও রেকর্ড করে এডিট করা যায় 

৩. Quik Video:

Quik হল একদম বিনামূল্যের একটা সেরা ভিডিও এডিটিং অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ। 

এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবেই ট্রান্সিশন যুক্ত করতে পারে। 

এই সফটওয়্যারটি নিজেই সবটুকু এডিটিং করে নিতে পারে। 

আপনি এখানে সূক্ষ ডিটেলস সহজেই যুক্ত করতে পারবেন।

GoPro থেকে সরাসরি ক্লিপ ইম্পোর্ট করা সম্ভব।

ফিচার:

  • মোশন ফটোর সাথে কাজ করে 
  • আনলিমিটেড ব্যাকআপ-এর অপশন রয়েছে 
  • ভিডিও স্পিড, ট্রিম, রেকর্ড ও রোটেট করা যায়   
  • একসাথে ৭৫টা ফটো ও ভিডিও যেকোনো স্পেস থেকে ইম্পোর্ট করা যায় 
  • এই অ্যাপের Quik AI-পাওয়ার্ড মুভমেন্ট, ফেস ও সাউন্ড ডিটেকশন করে  

৪. FilmoraGo:

FilmoraGo হল এমন একটা বিনামূল্যের ভিডিও এডিটর অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ,

যেটা কোনো রকমের ওয়াটারমার্ক ছাড়াই আপনাকে একদম পেশাদার কোয়ালিটির ভিডিও সম্পাদনা করতে দেয়। 

এই সফটওয়্যারটি আপনাকে নানান সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে সহজেই আপনার ভিডিও আপলোড বা শেয়ার করতে দেয়।

ফিচার:

  • ভিডিও লিপ সিঙ্ক করা যায় 
  • লাইসেন্সড গানের ব্যাপক সম্ভার রয়েছে 
  • একসাথে মাল্টিপল টাইটেল যুক্ত করা যায়  
  • বিভিন্ন ডিমেনশনে ভিডিও এডিট করা যায় 
  • ফাস্ট বা স্লো নানা ধরণের মোশান যুক্ত করা যায়  

৫. Pixgram:

Pixgram হল এমন একটা দুর্দান্ত মানের ভিডিও এডিটিং অ্যাপ যেটা iOS ও অ্যান্ড্রয়েড দুটো ভার্শনেই উপলব্ধ। 

এই সফটওয়্যারটির ইন্টারফেস খুবই সহজ, তাই যেকোনো মানুষ খুব সহজেই এটাকে ব্যবহার করতে পারবে। 

এখানে আপনি আরামসে ছবিতে গান লাগিয়ে স্লাইডশো তৈরী করতে পারবেন। 

এরও বিনামূল্য ও পেইড ভার্সন উপলব্ধ আছে। 

ফিচার:

  • অনেক ট্রান্সিশন ও স্পেশাল এফেক্টস আছে  
  • বিভিন্ন আসপেক্ট রেশিওতে ভিডিও এডিট করা যায়   
  • মোবাইলের যেকোনো গান ভিডিওতে ব্যবহার করা যায় 
  • সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েবসাইটে সহজেই ভিডিও শেয়ার করা যায়  

৬. Scoompa Video:

ছবি বা ভিডিও জুড়ে এডিটিং করার সেরা একটা ভিডিও এডিটিং অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ হল এই Scoompa Video। 

এই সফটওয়্যারটি একেবারেই বিনামূল্যের একটা অ্যাপ্লিকেশন। 

আপনি একটা ভিডিও সেভ করার পরেও বারবার এডিট করতে পারবেন। 

ফিচার:

  • ব্যবহার করার মতো প্রচুর ফিল্টার আছে 
  • ইন্সট্যান্টভাবে আপনার ভিডিও প্লে করতে পারে 
  • এখানে প্রায় ১০০-এরও বেশি স্টিকার পাওয়া যায় 
  • গ্যালারি, ক্যামেরা থেকে সহজেই ছবি বা ক্লিপ ইম্পোর্ট করা যায় 

৭. Kinemaster:

Kinemaster হল অ্যান্ড্রয়েডের জন্য একটা সম্পূর্ণ বৈশিষ্ট্যযুক্ত ভিডিও সম্পাদক। 

এই অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপটি উইন্ডোস কিংবা অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেমের সাথেই চলে। 

এখানে আপনি প্রায় ২৫০০-এরও বেশি এফেক্ট, ট্রান্সিশন, ইমেজ ও ভিডিও পেয়ে যাবেন। 

এর প্রিমিয়াম সাবস্ক্রিপশনে আপনি 4K কোয়ালিটিতে ভিডিও এক্সপোর্ট করতে পারবেন।

ফিচার:

  • ব্লেন্ডিং মোডের সাহায্যে সুন্দর ভিডিও তৈরী করা যায় 
  • এখানে ইনবিল্ট ট্রান্সিশন, ফন্ট, ক্লিপ ও আরও অনেক কিছু রয়েছে 
  • একাধিক লেয়ারের টেক্সট, ইমেজ, ভিডিও, স্টিকার ও ইত্যাদি রয়েছে 
  • এখানে ভয়েস ওভার, সাউন্ড এফেক্ট, ব্যাকগ্রাউন্ড মিউসিক ও ভয়েস চেঞ্জার রয়েছে

৮. iMovie:

iMovie হল একটা অত্যধিক শক্তিশালী বৈশিষ্ট্য সহ ভিডিও এডিটিং সফ্টওয়্যার, যা ব্যবহার করা খুবই সহজ। 

তবে, এটা শুধুমাত্র iOS অপারেটিং সিস্টেমের জন্যেই উপলব্ধ। 

এখানে আপনি একটা ড্র্যাগ ও ড্রপ ইন্টারফেস পেয়ে যাবেন। 

যাতে, নতুন ব্যবহারকারীরা সহজেই এই সফটওয়্যারটি ব্যবহার করতে পারে। 

এটা YouTube-এর জন্য সেরা ভিডিও এডিটিং সফ্টওয়্যারগুলোর মধ্যে অন্যতম একটা সফটওয়্যার। 

এর বেশ কিছু বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে- 4K সাপোর্ট, ক্লাউড স্টোরেজের সুবিধা ও স্টাইলিশ ইন-বিল্ট ফিল্টার। 

ফিচার:

  • iOS ও MacOS দুটো প্ল্যাটফর্মেই কাজ করে 
  • একাধিক অ্যাপল ডিভাইসে ভিডিও সিঙ্ক করা যায়  
  • একই প্রজেক্টের উপর বিভিন্ন ডিভাইস থেকে অপারেট করা যায় 
  • ভিডিও এডিটিংয়ের কোর ফাঙ্কশনালিটি, যেমন- কাটিং, ফ্রেম রেট বদল, লেয়ারিং ও ইত্যাদি 

৯. DaVinci Resolve:

DaVinci Resolve সফটওয়্যারটির ফ্রি ও স্টুডিও দুটো ভার্শনই রয়েছে। 

এই অ্যাপটি উইন্ডোস অপারেটিং সিস্টেমের জন্যে সেরা ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যারগুলোর মধ্যে একটা। 

এখানে স্পেশাল ফিচার ব্যবহার না করলে, আপনি ফ্রি ভার্শনে ভিডিও এক্সপোর্ট করার সময়ে কোনো ধরণের ওয়াটারমার্ক পাবেন না। 

মূলত, এটা একটা প্রফেশনাল ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার, তবে ব্যবহার করা মোটেও খুব একটা কঠিন না। 

এছাড়াও, আপনি এই সফটওয়্যারটি Linux ও MacOS-এর সাথেও ব্যবহার করতে পারবেন। 

ফিচার:

  • এর ফ্রি ও প্রিমিয়াম দুটো ভার্সনই উপলব্ধ আছে     
  • 4K UHD রেসল্যুশনে ভিডিও এক্সপোর্ট করা যায় 
  • প্রফেশনাল ও নতুন ব্যবহাকারী সকলের জন্যেই এটা সহজ একটা সফটওয়্যার 
  • এখানে এডিটিং, ভিজ্যুয়াল এফেক্টস ও কালার কারেকশনের মতো এডিটিং টুল আছে 

 

আমরা আমাদের এই আর্টিকেলে যে সফটওয়্যার বা অ্যাপগুলোর কথা বর্ণনা করছি, সেগুলো যথেষ্টই বহুমুখী। 

তাই, আপনি যেকোনো কম্পিউটার, যথা-উইন্ডোজ, ম্যাক কিংবা আপনার স্মার্টফোনেই খুব সহজে স্লাইডশো তৈরি করতে পারবেন। 

এখানে আমরা সম্পূর্ণ বিনামূল্যের স্লাইডশো মেকার থেকে শুরু করে প্রিমিয়াম প্রোগ্রামগুলোকেও রেখেছি, যাতে আপনি আপনার প্রয়োজন ও সুবিধা অনুসারে সেরা অপশনটা বেছে নিতে পারেন। 

আমাদের ২০২২ সালের সেরা ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যারের তালিকা থেকে আপনি আপনার এডিটিং শেখার যাত্রাও শুরু করতে পারেন। 

কারণ, এই সফটওয়্যারগুলো ব্যবহার করা যথেষ্টই সহজ ও ডাউনলোড করতেও কোনো বাধা নেই। 

তাই, আপনি যদি আপনার ভিডিও তৈরির পেশাদার দক্ষতা বাড়ানোর উপায় খুঁজে থাকেন, তাহলে এই সফটওয়্যারগুলো আপনার জন্যে একদম সেরা বিকল্প হতে পারে।

আমাদের আজকের সেরা ছবি দিয়ে গান বানানোর মোবাইল সফটওয়্যার এর তালিকাটি এখানেই শেষ হল। 

লেখাটি পছন্দ হলে অবশ্যই তা কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। 

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error:
Scroll to Top