এন্ড্রয়েড কি ? (what is android in Bengali) – সম্পূর্ণ ইতিহাস

আজ আমাদের ঘরের প্রত্যেক সদস্যের কাছেই একটি করে এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন (android smartphone) রয়েছে।

কিন্তু, আমাদের মধ্যে অনেক কম সংখক লোকেরা রয়েছেন, যারা স্মার্টফোনে থাকা এই এন্ড্রয়েড শব্দটির বিষয়ে জেনেনিতে চান।

এন্ড্রয়েড কি (what is android in bangla) এবং মোবাইলে এই এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম কেন ব্যবহার করা হয়,

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জেনেনিব।

এন্ড্রয়েড হলো গুগল (Google) দ্বারা বিকশিত একটি অপারেটিং সিস্টেম (operating system) যেটাকে Linux kernel এবং অন্যান্য কিছু open source software ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।

এই এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম (android operating system), মূলত touch screen mobile device যেমন “smartphone” এবং “tablet” গুলোর জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জানবো,

  • Android কি বা কাকে বলে (about android in Bangla)
  • এন্ড্রয়েড এর ইতিহাস (history of android in Bengali)
  • এন্ড্রয়েড ভার্সন মানে কি (what is android version in bangla)
  • Android এর বিশেষত্ব গুলো কি (features of android)
  • এন্ড্রয়েড এর সম্পূর্ণ ভার্সন গুলোর বিষয়ে (latest android version in Bengali).

এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনারা “Android” এর বিষয়ে সম্পূর্ণ তথ্য সঠিক ভাবে জেনেনিতে পারবেন।

আমি আশা করছি, “এন্ড্রয়েড এর বিষয়ে” লিখা আজকের এই আর্টিকেল আপনাদের ভালো লাগবে।

এন্ড্রয়েড কি ? (what is android)

এন্ড্রয়েড এর বিষয়ে সম্পূর্ণ তথ্য।

Android বলতে, এটা কোনো app বা mobile এর নাম না।

আসলে, এন্ড্রয়েড হলো একটি অপারেটিং সিস্টেম (operating system), যেটা একটি computer device কে পরিচালনা (operate) এবং নিয়ন্ত্রণ করার কাজ করে থাকে।

এই অপারেটিং সিস্টেমটি গুগলের (Google) এর দ্বারা বিকশিত (develop) করা হয়েছে।

এই “Android OS’ সম্পূর্ণ রূপে “Linux kernel” এর ওপরেই নির্ভরশীল।

তবে, Linux কিন্তু নিজেই একটি open source OS.

যদি আমরা এন্ড্রয়েড এর মানে কি, এই বিষয়ে প্রশ্ন করি,

তাহলে এর উত্তর হবে,

“এন্ড্রয়েড হলো, মোবাইল ডিভাইস (mobile device) এর মধ্যে থাকা এক ধরণের প্রচালন তন্ত্র যেটা সম্পূর্ণ ডিভাইস (device) এর পরিচালনার ক্ষেত্রে দায়ী”.

সোজা ভাবে বললে,

Android হলো একটি মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম যেটাকে তৈরি করা হয়েছে “Linux kernel” এর একটি “modified version” এর ব্যবহার করে।

তবে, এন্ড্রয়েড তৈরির ক্ষেত্রে Linux ছাড়াও অন্যান্য আরো কিছু open source software ব্যবহার করা হয়েছে।

Android OS কে, একটি smartphone এর system software বলেও বলা যেতে পারে।

তাহলে বুঝলেন তো, “এন্ড্রয়েড কি” (what is android) ?

এন্ড্রয়েড এর ইতিহাস (history of android)

California র Polo Alto নামের শহরে “Andy Rubin, Rich Miner, Nick Sears এবং Chris White এর দ্বারা ২০০৩ সালে android Inc প্রতিষ্ঠাপিত (founded) করা হয়েছিল।

বলা হয় যে, প্রথমের দিকে android Inc. কোম্পানিটির উদ্দেশ্য ছিল “digital camera” গুলোর জন্য একটি আধুনিক অপারেটিং সিস্টেম তৈরি করার।

কিন্তু পরে পরে কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতারা বুঝলেন যে, ডিজিটাল ক্যামেরার (digital camera) মার্কেট তেমন একটি বড় আকারের না।

এবং, তার কিছু দিন পর থেকেই এই কোম্পানি নিজের সম্পূর্ণ প্রচেষ্টা, এন্ড্রয়েড কে একটি মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে বিকশিত করার দিকে লাগিয়ে দিলেন।

Android গুগলের সাথে,

আপনারা হয়তো বুঝতেই পেরেছেন, শুরুতে এন্ড্রয়েড গুগলের ছিলোনা।

বলা হয়, ২০০৫ সালের জুলাই মাসে “android Inc. কোম্পানিটি “Google” প্রায় $50 million দিয়ে কিনে নিলো।

তারপর থেকেই এখনের সময় অব্দি, প্রায় প্রত্যেক কোম্পানির স্মার্টফোনে এই “Android OS” ব্যবহার করা হয়েছে।

Google সময়ে সময়ে প্রচুর নতুন নতুন android version launch করে এসেছে।

এবং, প্রত্যেকটি নতুন এন্ড্রয়েড ভার্শনে কিছু না কিছু বিশেষ এবং আধুনিক ফীচার (features) যোগ করা হয়েছে।

একটি জনপ্রিয় অনলাইন ওয়েবসাইট, “Wikipedia” তে পাবলিশ করা আর্টিকেলের হিসেবে,

“২০০৮ সালের প্রথম কোয়ার্টারে প্রায় 383 million smartphones বিক্রি করা হয়েছিল এবং সেই smartphones গুলোর মধ্যে 86.2% ছিল android OS এর মাধ্যমে চলা mobile.

তাছাড়া, সেখানে কেবল 12.9% মোবাইল বিক্রি হয়েছিল যেগুলো iOS এর মাধ্যমে চলা smartphone ছিল।

তাহলে বুঝতেই পারছেন, বর্তমান সময়ে “android operating system” কতটা বেশি জনপ্রিয়।

বর্তমানে, android OS কে জনপ্রিয় desktop OS “Microsoft” থেকেও অধিক জনপ্রিয় (popular) বলা যেতে পারে।

এন্ড্রয়েড এর জনপ্রিয়তার মূল কারণ হয়েছে,

“এর নতুন নতুন ও আধুনিক ফীচার গুলোর সাথে লঞ্চ (launch) হওয়া ভার্সন (version) গুলো।

এন্ড্রয়েড এর বিভিন্ন ভার্সন গুলোর বিষয়ে – (Android versions)

আমি ওপরেই আপনাদের বলেছি যে, এন্ড্রয়েড এর বিভিন্ন ভার্সন রয়েছে এবং প্রত্যেকটি নতুন android version এর সাথে এর মধ্যে কিছু আধুনিক ফীচার (advanced features) যোগ করা হয়েছে।

আপনারা অবশই হয়তো “android KitKat”, “android lollipop”, “android nougat” ইত্যাদি এই নাম গুলো শুনেছেন।

এগুলো অনেক জনপ্রিয় কিছু এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম ভার্সন এর নাম।

নিচে আমরা ২০০৭ সালের থেকে শুরু করে বর্তমান সময়ে চলা অব্দি প্রত্যেকটি android version এর list এর বিষয়ে জেনেনিব।

  • Android Beta (2007)
  • Android alpha 1.0 (2008)
  • Android cupcake 1.5 (2009)
  • Android Donut 1.6 (2009)
  • Android Eclair 2.0 & 2.1 (2009)
  • Android Froyo 2.2 & 2.2.3 (2010)
  • Android Gingerbread 2.3 & 2.3.7 (2010)
  • Android Honeycomb 3.0 & 3.2.6 (2011)
  • Android Ice Cream Sandwich 4.0 (2011)
  • Android jelly bean 4.1 (2012)
  • Android KitKat 4.4 (2013)
  • Android Lollipop 5.0 (2014)
  • Android Marshmallow 6.0 (2015)
  • Android Nougat 7.0 (2016)
  • Android Oreo 8.0 (2017)
  • Android Pie 9 (2018)
  • Android 10 (2019)
  • Android 11 (2020)

এগুলোই ছিল প্রথম থেকে এখন পর্যন্ত আসা এন্ড্রয়েড এর আপডেট বা আপডেট ভার্সন গুলো।

চলুন নিচে আমরা এন্ড্রয়েড এর প্রত্যেকটি আপডেট ভার্সন এর বিষয়ে সংক্ষেপে জেনেনেই।

Android all version details in Bengali

চলুন প্রত্যেকটি এন্ড্রয়েড ভার্সন এর বিশেষ features গুলো জেনেনেই।

Android Beta – এন্ড্রয়েড এর লঞ্চ করা সর্ব প্রথম ভার্সন হলো এটা। ২০০৭ সালে এই ভার্সন আনা হয়েছিল।

Alpha 1.0 – ২০০৮ সালে লঞ্চ করা এই এন্ড্রয়েড ভার্সন জনসাধারণের মধ্যে অনেক জনপ্রিয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এটা এন্ড্রয়েড এর সেই প্রথম ভার্সন যেখানে মোবাইল ইউসাররা নিজের মোবাইলে এপস (apps) ইনস্টল করতে পারতেন। এন্ড্রয়েড এর এই ভার্সন থাকা মোবাইল গুলোতে, “google maps”, “google calendar”, “Gmail app”, “web browser” ইত্যাদি দেওয়া হয়েছিল।

Cupcake – এন্ড্রয়েড এর এই ভার্সন গুগল দ্বারা জারি করা তৃতীয় ভার্সন যেখানে video recording, third-party virtual keyboards, Widgets ইত্যাদি support করা হলো।

Donut – এই ভার্সন নিয়েআসা হলো ২০০৯ সালে যেখানে voice এর মাধ্যমে search করার ফীচার যোগ হয়েছিল। তাছাড়া,  WVGA screen resolutions support এর এই ভার্সনে যোগ হয়েছিল।

Eclair – ২০০৯ সালে নিয়ে আসা এন্ড্রয়েড এর এই ভার্শনে কিছু বিশেষ ও গুরুত্বপূর্ণ ফীচার গুলো যোগ করা হলো। যেমন, multi-touch devices, একাধিক email account support এবং বিশেষ camera app যোগ করা হলো।

Froyo – এখানে WIFI, hotspot এবং push notification এর ফীচার গুলো যোগ করা হলো।

Gingerbread – এখানে standard inbuild keyboard টিকে আরো অধিক পরিমানে উন্নত ও দ্রুত করে দেওয়া হলো। এই ভার্শনে আমাদের আরো ভালো করে মোবাইলের background এ কি apps চলছে এবং সেগুলো কত CPU ও RAM ব্যবহার করছে সেটা দেখার সুবিধে দেওয়া হয়েছিল। তাছাড়া, অপ্রয়োজনীয় background apps গুলোকে kill করা সুবিধে দেওয়া হয়েছে।

Honeycomb – মোবাইল স্ক্রিনের নিচে “System bar” এবং স্ক্রিনের ওপরে “action bar” যোগ করা হলো। Tablets এবং বড় screen এর মোবাইলের জন্য বিশেষ করে এই ভার্সন নিয়ে আসা হয়েছিল।

Ice Cream Sandwichএই ভার্শনে নতুন ধরণের একটি font style “Roboto” নিয়ে আসা হলো। সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ফীচার, “এই ভার্শনে স্ক্রিন শট নেওয়ার অপসন যোগ করা হলো”.

Jelly bean – এখানে notification এর ওপরে বিশেষ কাজ করা হয়েছে। একটি জায়গায় সম্পূর্ণ apps এর notification দেখা যাবে। তাছাড়া, notification গুলোকে নিজের হিসেবে নিয়ন্ত্র করা যেতে পারে।

Android KitKat – এখানে “OK Google” বলেই  Google now activate করার অপসন যোগ করা হয়েছিল। তাছাড়া, Smarter Caller ID, hangout app, caller ID ইত্যাদি আরো উন্নত ও উন্নত করে দেওয়া হলো। এর বাইরেও, এই এন্ড্রয়েড ভার্শনে “cloud storage” এর option দেওয়া হলো।

Lollipop 5.0 – এন্ড্রয়েড এর প্রচুর আধুনিক ও উন্নত ভার্সন হলো Lollipop. এই ভার্শনে অপারেটিং সিস্টেম সফটওয়্যারটিকে প্রচুর clean এবং হালকা (lighter) রাখার চেষ্টা করা হয়েছে।

Marshmallow 6.0 – এন্ড্রয়েড এর এই আধুনিক ভার্সন আমাদের finger print scanner এর support দিয়ে থাকে। তাছাড়া, automatic backup এবং restore এর option এখানে আমরা পাই।

Android Nougat – এই ভার্শনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ update  features নিয়ে আসা হয়েছে। যেমন, Clear all apps এর ব্যাধমে ব্যাকগ্রাউন্ড এর মধ্যে সক্রিয় থাকা প্রত্যেক active apps গুলোকে সরানো যাবে। App shortcuts, data saver, app switching, split-screen Chrome ইত্যাদি function যোগ করা হলো।

Android Oreo – এই এন্ড্রোয়েড ভার্শনের সবচে গুরুত্বপূর্ণ ফীচার হলো “split-screen apps”. Video বা movies দেখার সময় home button ছুঁয়ে দিলেই সেই ভিডিওটি popup window হিসেবে দেখানো হবে। ফলে, ভিডিও দেখে দেখেই অন্যান্য এপস ব্যবহার করতে পারবেন।

Android Pie – Auto brightness এর feature এই version এ যোগ করা হলো।

Android 10 – Location এবং privacy tools গুলোকে অধিক উন্নত করা হলো।

Android 11 – এটা android এর latest update যেটা ২০২০ সালে লঞ্চ করা হয়েছে। Message bubbles, আধুনিক redesigned notification styles, নতুন media playback widget, screen recording ইত্যাদি features এখানে যোগ করা হয়েছে।

তাহলে, এন্ড্রয়েড এর ইতিহাস এবং বিভিন্ন ভার্সন গুলোর বিষয়ে বুঝতে পেরেছেন তো ?

আশা করছি পেরেছেন।

আমাদের শেষ কথা,

এন্ড্রয়েড মোবাইল বর্তমান সময়ে মানব জীবনের এক অধিক গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কারণ, এন্ড্রয়েড মোবাইলের মাধ্যমে আজ আমরা অনেক সহজেই প্রচুর কাজ করে নিতে পারি।

তাই, আজকের এই আর্টিকেলে আমি আপনাদের “android কি”, “এন্ড্রয়েড এর ইতিহাস” এবং এর “বিভিন্ন ভার্সন” গুলোর বিষয়ে বললাম।

যাতে, আপনি যেই মোবাইল ব্যবহার করছেন, সেটার বিষয়ে আপনার সম্পূর্ণ জ্ঞান থাকুক।

তাছাড়া, এন্ড্রয়েড পরিচিতি নিয়ে লিখা আজকের এই আর্টিকেল যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে আর্টিকেলটি শেয়ার অবশই করবেন।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top