ব্লগিং করে প্রতিদিন ১০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় করুন

প্রতিদিন ১০০ টাকা আয় করাটা আজ এই ডিজিটাল যুগে কিন্তু তেমন কোনো বেপার না।

তাই, আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আমি আপনাদের বলতে চলেছি, কিভাবে ব্লগিং এর মাধ্যমে প্রতিদিন ১০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় করা যাবে ?

ইন্টারনেট পরিষেবার ব্যাপক উন্নতি আমাদের পেশাগত জীবনকেও দারুণভাবে প্রভাবিত করেছে। 

এখনকার জমানাতে, ৯-৫ চাকরির পরিবর্তে, অনেকেই নিজের স্টার্টআপ বিজনেস শুরু করছে, রিসেলিং করছে ও আরও নানান পদ্ধতিতে রোজগার করা পছন্দ করছে। 

আর, আপনি যদি কোনো অভিনব আয়ের পথ খুঁজে থাকেন, তবে প্রতিদিন ১০০ টাকা আয় করা বর্তমান যুগে মোটেও অসম্ভব কাজ নয়। 

১০০১ টা অর্থ উপার্জনের মধ্যে সবথেকে সেরা, সুরক্ষিত, কম বিনিয়োগের আয়ের একমাত্র উপার্জনের উপায় হল ব্লগিং। 

এই সময়ে ব্লগিং হল খুবই জনপ্রিয় ও প্রায় ঝামেলাহীন একটা পেশা।

যেখানে, ফেইসবুক, ইউটিউবের মতো প্ল্যাটফর্ম থেকে আয় করতে গেলে, আপনাকে যতটা পরিশ্রম ও সময় ব্যয় করতে হয়, তার থেকে অনেকটাই কম ঝঞ্ঝাটে এবং সামান্য পরিশ্রমেই ব্লগ থেকে ভালো পরিমাণ অর্থ উপার্জন করা যায়।

কিভাবে ব্লগিং করে প্রতিদিন অর্থ উপার্জন করা যায় ?

প্রতিদিন ১০০ টাকা আয়
Earn money daily with blogging.

হে, এখন ব্লগিং করে প্রতিদিন ৫০০ টাকা আয় করুন,

আজকে আমাদের প্রধান আলোচনার বিষয় হল, কিভাবে প্রতিদিন ১০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় করা যাবে ? 

আর, এই আয় করার সবথেকে সেরা ও আরামদায়ক পন্থা হিসেবে আমরা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করবো, ব্লগিং নিয়ে। 

যেখান থেকে প্রত্যেক দিন ১০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় করা কোনো ব্যাপারই নয়!

ব্লগিং থেকে কিভাবে প্রতিদিন ১০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় করা যাবে ? 

একজন পেশাদার ব্লগার ভারতের মতো দেশে মাসিক $১০,০০০ পর্যন্ত উপার্জন করতে সক্ষম। 

তবে, সাধারণভাবেই একজন ব্লগার প্রতি মাসে $৩০০ থেকে $৪০০ এর মতো আয় তো করতেই পারে। 

অন্যদিকে, একজন সেলিব্রিটি ব্লগার মাসিকভাবে  $২০,০০০ থেকে $৩০,০০-এর মতো উপার্জন করতে পারেন। 

ব্লগিং বিগত কয়েক বছরের মধ্যে ভারতের মতো দেশের বহু মানুষের কাছেই একটা চাহিদাপূর্ণ পেশায় পরিণত হয়েছে। 

তাই, আপনি যদি ব্লগিং থেকে কীভাবে অর্থ উপার্জন করবেন তা জানতে চান,

তবে এখানে আমরা ব্লগিং থেকে অর্থোপার্জনের সেরা কয়েকটি উপায় সম্পর্কে আলোচনা করলাম। 

ব্লগিং এর মাধ্যমে প্রতিদিন ১০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় করুন

আপনি একটা সৃজনশীল অতিরিক্ত আয় তৈরি করতে চাইছেন ? 

অথবা, আপনি কি নতুন ব্লগ শুরু করছেন বা বিদ্যমান ব্লগকে বাড়াতে চাইছেন ?

তাহলে, নিচের উপায়গুলো অবলম্বন করে ফেলুন আর কোনোরকমের সমস্যা ছাড়াই প্রতিদিন ৫০০ টাকা আয় করুন –

১. লাভজনক নিশ বাছুন:

একটা নিশ হল কোনো বিস্তৃত বিষয়ের মধ্যে থাকা নির্দিষ্ট একটা বিষয়। 

আপনার ব্লগের জন্য একটা নির্দিষ্ট বিষয় বেছে নেওয়ার মাধ্যমে, আপনি পাঠকদের সাথে আপনার ব্লগিং সাইটের মধ্যে একটা সংযোগ তৈরী করে থাকেন। 

আসলে, দর্শকরা জানে যে, আপনার ব্লগ ভিসিট করলে তারা কি পাবে। 

এবং, এর থেকে তাদের কোনো রকমের কোনো পরামর্শ খোঁজার সময়ে, আপনার ব্লগই হয়ে উঠতে পারে তাদের উত্তর খোঁজার প্রথম চয়েস।

মনিটাইজেশন করার আগে, আপনি আপনার কন্টেন্টের গুণমান ও দক্ষতা সম্পর্কে বিশেষ খেয়াল রাখুন। 

আপনার নিশ কি, এবং কেন আপনি এই বিষয়টি সম্পর্কেই লিখতে চাইছেন, তা খুঁজে বের করুন। 

এরপর, সময়ের সাথে সাথে কনটেন্ট পাবলিশ করার মাধ্যমে ফলোয়িং তৈরি করুন। 

তার পরেই নগদীকরণ বা মনিটাইজ করার কথা ভাবুন –

আপনি ব্যবসায়িক সফ্টওয়্যার থেকে প্রোডাক্ট রিভিউ পর্যন্ত, যেকোনো নিশ থেকেই বিভিন্ন ব্লগাররা ভালোভাবেই অর্থ উপার্জন করে থাকেন। 

যদিও, সব নিশ থেকেই অর্থ উপার্জন করা মোটেই সম্ভব হয় না। 

তাই, যেকোনো লাভজনক ব্লগ নিশের তিনটি প্রধান ফ্যাক্টর থাকে – 

– আপনার দক্ষতার উপর নিশ নির্বাচন:

অডিয়েন্স তৈরি করতে ও নগদীকরণ করার জন্যে ব্লগে নিয়মিতভাবে উচ্চ-মানের কন্টেন্টের প্রয়োজন৷ 

তাই, আপনার প্রকৃত আগ্রহ আছে, এমন কিছু সম্পর্কে ব্লগ করলেই আপনি ধারাবাহিকভাবে ও আগ্রহ সহকারে তা পাবলিশ করতে ও সেখান থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। 

আসলে, আমরা উপভোগ করি এমন বিষয় নিয়ে কাজ করাটা অনেকটাই বেশি মজাদার হয়ে থাকে, যার ফলে জিনিসটা একঘেঁয়ে মনে হয় না।

– কম প্রতিযোগিতার নিশ: 

নানান জনপ্রিয় ব্লগ, ব্র্যান্ড বা ফোরামগুলো নির্দেশ করে যে, আপনার নিশের উপর অন্যরা ভালো অর্থ উপার্জন করছে। 

একইভাবে, কীওয়ার্ড রেঙ্কিং-এর জটিলতাগুলো মূল্যায়ন করতে গুগলে (গুগল কীওয়ার্ড প্ল্যানার) অনুসন্ধান করুন। 

যদি, নামী ব্র্যান্ডগুলো (এমনকি বড় মার্কেটিং বাজেট সহ) সার্চ রেজাল্টের প্রথম পৃষ্ঠায় আধিপত্য বিস্তার করে, তবে সেখানে অর্গানিক ট্রাফিকের সাহায্যে আপনার ব্লগের রেঙ্কিং করা বা আয় করাটা খুবই কঠিন হয়ে পড়ে।

– নিশের মনিটাইজেশনের সম্ভাবনা:

আপনার তালিকায় নির্বাচিত প্রতিটা নিশের বিষয়গুলোর নগদীকরণের সম্ভাবনাগুলো দেখুন। 

সেই নিশের কোম্পানিগুলো কি অন্য ব্লগে তাদের পণ্যের বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য টাকা দেয়? 

সেই ইন্ডাস্ট্রিতে পণ্য বিক্রি করে এমন অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম কি উপলব্ধ আছে? 

যদি, এই দুটো উপায়ই উপলব্ধ থাকে, তাহলে সেই নিশটি আপনার ব্লগের জন্যে লাভজনক হতে পারে।

২. ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন বিক্রি করুন:

বিভিন্ন কোম্পানিগুলো নানান ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য ব্লগারদের অর্থ প্রদান করে থাকে৷ 

আপনার ওয়েবসাইটের ফাঁকা স্থানে বিজ্ঞাপন দেওয়ার বিনিময়ে আপনি তাদের থেকে অর্থ পেতে পারেন। 

মূলত, আপনার ব্লগের থেকে আয়ের উৎস তৈরি করার দুটি উপায় রয়েছে –

– পৃথকভাবে কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা:

আপনার নিশের উপর কোম্পানি খুঁজুন ও তারা আপনার সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে আগ্রহী কিনা তা জিজ্ঞাসা করুন। 

এটি অনেকটা সময়সাপেক্ষ পদ্ধতি আর এক্ষেত্রে আপনার প্রভাবশালী আলোচনা দক্ষতার প্রয়োজন হবে। 

তবে, ভালভাবে আলোচনা করলে, এখান থেকে বিজ্ঞাপনের সাহায্যে অনেক বেশি আয় করা সম্ভব।

– বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্ক ব্যবহার করুন:

Google AdSense, AdThrive, mMedia, ফেসবুক অডিয়েন্স নেটওয়ার্ক বিজ্ঞাপন, নলেজ, অ্যাপেল এডভার্টাইসমেন্ট, ইপোম, তাবোলা, ইয়াহু নেটওয়ার্ক কিংবা Mediavine-এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলো আপনার ব্লগের ফাঁকা জায়গাতে বিজ্ঞাপনদাতাদের বিলিং পরিচালনা করে। 

শুধু আপনার সাইটে তাদের কোড এম্বেড করে বিজ্ঞাপন দেখানোর জন্য টাকা আয় করুন। 

এমনকি, ব্লগের থেকে আয়ের প্রায় ৬০% পর্যন্ত অংশ কেবল বিজ্ঞাপন থেকেই আসতে পারে (নতুন কোনো কনটেন্ট পাবলিশ না করা হলেও)। 

প্রথমে, ওয়েবসাইট ট্র্যাফিক ড্রাইভিং-এর মাধ্যমে আপনার ব্লগকে বিজ্ঞাপনের জন্যে প্রস্তুত করুন। 

আপনার ব্লগে যত বেশি লোক বিজ্ঞাপনের মুখোমুখি হবে, আপনি তত বেশি অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

গুগল অ্যাডসেন্স হল সবচেয়ে জনপ্রিয় একটা বিজ্ঞাপনের নেটওয়ার্ক। 

একজন ব্লগারের একটা অনুমোদিত অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট থাকলে, যখনই দর্শকরা তাদের ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দেখে বা ক্লিক করে তখনই তারা সেখান থেকে আয় করেন। 

এই ধরণের মনিটাইজেশান কৌশলটি উচ্চ ট্র্যাফিকযুক্ত তথ্যপূর্ণ ব্লগের জন্যই একমাত্র উপযুক্ত। 

তবে, কেবলমাত্র $১০০ অতিক্রম করলে, তবেই Google AdSense আপনার অ্যাকাউন্টে অর্থ পাঠায়। 

তবে, আপনি স্বাধীনভাবে আপনার ওয়েবসাইটের যেকোনো স্থানে, যেকোনো সংখ্যায় ও যেকোনো সাইজের বিজ্ঞাপনের অনুমোদন দিতে পারেন।  

৩. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং:

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হল ব্লগিংয়ের সাহায্যে অর্থোপার্জনের অন্যতম সেরা উপায়গুলোর মধ্যে একটি। 

কোনো বিজ্ঞাপনে একটা ক্লিকের তুলনায় কোনো একক বিক্রয় আপনাকে আরও অনেক বেশি পরিমাণে অর্থ এনে দিতে পারে৷ 

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হল এমন একটা পন্থা, যা বহু ব্লগারই প্রতিদিন ১০০ বা ৫০০ টাকা আয়ের জন্যে ব্যবহার করে থাকেন। 

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং-এর অর্থ হল আপনার ব্লগে অন্য লোকেদের পণ্যের প্রচার করে অর্থ উপার্জন করা। 

এখানে, আপনাকে আপনার পোস্টের মধ্যে, সাইট জুড়ে বিভিন্ন পণ্য বা পরিষেবার অ্যাফিলিয়েটড লিঙ্ক যুক্ত করতে হয়৷ 

এইবার আপনার সাইটের দর্শকরা সেই লিঙ্কগুলোতে ক্লিক করে কিংবা লিঙ্কের সাহায্যে কোনো পণ্য ক্রয় করে, তখনই আপনি সেই বিক্রয় থেকে একটা কমিশন পান। 

আর, প্রতি বিক্রয়ে অর্জিত অ্যাফিলিয়েটড কমিশন অনুযায়ী আপনি ৫% থেকে ৩০% পর্যন্তও আয় করতে পারেন। 

Amazon Associates, ClickBank, ShareASale-এর মতো এরকম অনেক অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামিং প্ল্যাটফর্ম রয়েছে, যেখান থেকে সহজেই আপনি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে পারেন।

এমনকি, আপনি ইলেকট্রনিক্স, গয়না কিংবা সফ্টওয়্যারের মতো দামী পণ্য ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে হাই-টিকিট অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামগুলোও দেখতে পারেন। 

ব্লগাররা তার পাঠকদের কাছে সেই প্রোডাক্টগুলো সুপারিশ করার জন্যে যথেষ্ট টাকা আয় করতে পারেন। 

ব্যক্তিগত ও প্রফেশনাল ব্লগ, উভয়ের ক্ষেত্রেই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং যথেষ্ট লাভজনক হতে পারে।

৪. স্পন্সরড কনটেন্ট বা পোস্ট:

যদি আপনার ব্লগের একটা স্বীকৃত অথরিটি থাকে ও এর ওয়েব ট্র্যাফিকও বাড়তে থাকে, তাহলে স্পন্সর করা ব্লগ পোস্ট লেখার জন্য বা প্রোডাক্ট রিভিউ করার জন্য বিভিন্ন কোম্পানি থেকে অর্থের অফার আসতে পারে। 

এমন অনেক পরিস্থিতি আসে, যখন কোনো ব্যক্তি আপনাকে স্পনসরড আর্টিকেল কিংবা পোস্টের জন্য টাকা দেয়। 

কারণ, তাদের ক্লায়েন্টদের কিংবা সাইটের জন্যে ব্যাকলিঙ্কিং-এর প্রয়োজন হতে পারে। 

এই ধরণের ব্যাকলিঙ্কগুলো আপনার ব্লগকে সার্চ ইঞ্জিনের রেজাল্টে ভালো রেঙ্ক পেতে সাহায্য করতে পারে।

স্পন্সরড পোস্ট সাধারণত অর্গানিক ট্রাফিক ও ওয়েবসাইটের কর্তৃপক্ষের পারফর্ম্যান্স বিচার করে, তবেই তার মূল্য নির্ধারণ করা হয়। 

আপনার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিটা স্পন্সরড পোস্টের জন্য আপনি $৫০ থেকে $১৫০-এর মধ্যে উপার্জন করতে পারেন। 

প্রায়শই, এই কোম্পানিগুলো আপনার রিভিউয়ের জন্য বিনামূল্যের পণ্যগুলোর মতো অতিরিক্ত সুবিধাও প্রদান করে থাকে। 

এছাড়াও, এমন পার্টনারশীপ প্রোগ্রামের অনুসন্ধান করুন, যার থেকে আপনি একটা বর্ধিত সময়ের জন্যে স্পনসরড পোস্ট করার একটা চুক্তি  পাবেন। 

এটি কিন্তু আপনার আয়ের একটা স্থায়ী উৎস হিসেবে গণ্য হতে পারে। 

এই সুবিধাগুলো পেতে আপনি নিজেই এই ধরণের কোম্পানিগুলোকে খুঁজে বের করে তাদের কাছে স্পনসরশিপের ব্যাপারে আবেদন করতে পারেন। 

ব্র্যান্ডগুলোকে আপনার সহযোগিতার উপযোগিতাগুলো ব্যাখ্যা করুন। 

উদাহরণস্বরূপ, ব্লগে আপনার মাসিক ট্রাফিক সংখ্যা ও আপনার দর্শকদের কাছে পৌঁছানোর মাধ্যমে ব্র্যান্ডগুলোর কী লাভ হতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানান। 

৫. পণ্যদ্রব্য, ই-বুক এবং আরও অনেক কিছু বিক্রি করুন:

আয়ের আরেকটি লাভজনক অপশন হল সরাসরি আপনার সাইটের সাহায্যে পণ্য বিক্রি করা। 

সেল করার জন্যে আপনি একটা অনলাইন স্টোরও খুলতে পারেন, যেটা আপনার সাইটের দর্শকদের সরাসরি পণ্যগুলো দেখতে সাহায্য করে। 

এটি আপনাকে আপনার ব্লগের নিশ কিংবা ব্যক্তিগত ব্র্যান্ডের আইটেমগুলো বিক্রি করতে দেয়।

মনে রাখবেন যে, আপনার পণ্যগুলি সব সময়েই কোনো বস্তু হতে হবে, তা কিন্তু নয়। 

অনেক ব্লগার আবার ডিজিটাল পণ্যও বিক্রি করতে পছন্দ করেন। 

আপনি আপনার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যে ধরণের আইটেম বিক্রি করতে পারেন, তার মধ্যে সেরা কয়েকটি আইটেমের কথা নিচে বলা হল- 

– ই-বুক

– অনলাইন কোর্স

– ওয়েবিনার ও ভার্চুয়াল ইভেন্ট

– হ্যান্ডমেড ক্রাফ্টস ও অন্যান্য পণ্য

– ব্লগের লোগোসহ টি-শার্ট, স্টিকার, মগ কিংবা অন্যান্য পণ্যদ্রব্য

আর, আপনি যদি কোনো ফিটনেস ব্লগ পরিচালনা করেন, তাহলে আপনি ব্র্যান্ডেড স্পোর্টস আইটেমও বিক্রি করতে পারেন। 

আপনার কোনো ভ্রমণ ব্লগ থাকলে, আপনি ডাউনলোড-এবেল ডিজিটাল ভ্রমণ গাইডও কেনার অপশন রাখতে পারেন।

৬. ইনফো প্রোডাক্ট বিক্রি করুন:

ভারতে ব্লগিং থেকে অর্থোপার্জনের সবথেকে জনপ্রিয় উপায় হল ইনফো প্রোডাক্ট বিক্রি করুন। 

আপনার বিদ্যমান শ্রোতারা যদি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনাকে অনুসরণ করে কিংবা কোনও ইমেল লিস্টে বিদ্যমান থাকে, তবে আপনি আপনার ইনফো প্রোডাক্ট ডিজাইন ও বিক্রি করার কথা বিবেচনা করতে পারেন। 

এক্ষেত্রে, আপনি নিজের কোনো কোর্স বা ইবুক-ও তথ্য পণ্য হিসেবে বিক্রি করতে পারবেন। 

সঠিক ব্যবস্থাপনা থাকলে, সেক্ষেত্রে অডিয়েন্সদের কাছে আপনার পণ্যগুলোর প্রচার কিংবা বিক্রি করা বিশেষ কঠিন কাজ হবে না। 

কারণ, কম মূল্যের কার্যকরী ইনফো প্রোডাক্ট যা ইউসারদের জ্ঞান বাড়াতে পারে, তারা সেগুলো কিনতে সর্বদাই উৎসাহী থাকে। 

৭. ব্লগের কন্টেন্টের মান বজায় রাখুন:

একটা ব্লগ থেকে নিয়মিতভাবে আয় করার জন্যে অবশ্যই ভালোমানের কনটেন্ট ঘনঘন পাবলিশ করতে হবে। 

সেই কন্টেন্টের জন্যে কিন্তু প্রচুর গবেষণা ও পরিকল্পনাও করতে হবে। 

আপনার কনটেন্ট তৈরি ও সঠিকভাবে স্কেল করার জন্যে আপনার নিম্নলিখিত বিষয়গুলো মাথায় রাখা প্রয়োজন-

সঠিক বিষয় নির্বাচন করা:

কোনো সেরা বিষয় নির্বাচন করার ক্ষেত্রে আপনাকে দুটো জিনিস নিয়ে যথেষ্ট চিন্তা করতে হবে- 

– কনটেন্ট যেন আপনার টার্গেট অডিয়েন্সদের চাহিদা পূরণ করে ও তাদের একটা চিন্তাশীল ও কার্যকরী সমাধান দিতে পারে।

– কনটেন্টে যেন হাই-সার্চ ভলিউমযুক্ত কীওয়ার্ড থাকে। 

এই হাই-সার্চ কিওয়ার্ডের সংখ্যার দ্বারা আপনি সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন যে, সারা মাসে আপনার কন্টেন্টের উপর নির্ভর করে কিওয়ার্ডগুলো কত সংখ্যক মানুষ খুঁজছে। 

এখানে ধারণাটি হল এই যে, কীওয়ার্ডের পরিমাণ যত বেশি হবে, ততই বোঝা যাবে যে, সেই বিষয়ে মানুষ কতটা কমবেশি আগ্রহী রয়েছে। 

যখন আপনার আর্টিকেলগুলো মানুষেরা অনুসন্ধান করা প্রশ্নগুলোর যথাযথ ও পুঙ্খানুপুঙ্খ উত্তর দিতে পারে; তখন আর্টিকেলগুলো সার্চ ইঞ্জিনগুলোতে বেশি করে রেঙ্ক করতে পারে- যাতে আপনার সাইটে বেশি করে অডিয়েন্স আসে ও ট্রাফিক জেনারেট হয়। 

এছাড়াও, আকর্ষণীয় শিরোনাম আপনার ব্লগের বিষয়ে মানুষকে আরও বেশি করে আপনার কন্টেন্টের ব্যাপারে আগ্রহী করে তোলে।

৮. ব্র্যান্ডের জন্য ক্যাম্পেইন প্ল্যান করুন:

আপনার ব্লগে যদি ব্যাপক অডিয়েন্স বেস তৈরী হয়ে যায়, তাহলে আপনার ওয়েবসাইটটি ক্যাম্পেইন প্ল্যান করার জন্যে আদর্শ। 

এক্ষেত্রে, ব্লগাররা তাদের টার্গেট অডিয়েন্স বেসের কাছে কোনো ব্র্যান্ডের হয়ে ক্যাম্পেইন প্ল্যান করতে পারেন। 

পেইড বিজ্ঞাপন, ওয়েবিনার প্ল্যান করা,  ভিডিও তৈরি করা ও ব্র্যান্ড কোলাবোরেশনের মাধ্যমে এই ক্যাম্পেইন করা যেতে যেতে পারে।

৯. পেইড মেম্বারশিপ অফার করা:

আপনার ব্লগটি ওয়েল-এস্ট্যাব্লিশড হলে, আপনি আপনার লয়াল অডিয়েন্স বেসের জন্যে পেইড সাবস্ক্রিপশন প্ল্যান তৈরি করে, সেখান থেকেও আয় করতে পারবেন। 

এখানে সাবস্ক্রিপশন প্যাকেজকে দর্শকের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্যে অবশ্যই কিছু কনটেন্ট বিনামূল্যে রাখা উচিত। 

সর্বোপরি, পাঠকরা সাবস্ক্রিপশনের জন্যে পে করবেন কিনা, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আপনার ব্লগটিকে অন্বেষণ করতেই চাইবে৷ 

তবে, আপনি ইন-ডেপ্থ পোস্টগুলোর সাথে বিনামূল্য পণ্য বা পরিষেবাও অফার করতে পারেন- যাতে তা সাবস্ক্রাইবারদের আকর্ষণ করে। 

আপনার পাঠকদের আগ্রহ বাড়াতে তাদের প্রতিটা এক্সক্লুসিভ পোস্টের ইনসাইট দিতে ভুলবেন না ও তারপর পড়া চালিয়ে যেতে তাদের মেম্বারশিপ নিতে অনুরোধ করুন। 

এছাড়াও, আপনি আপনার পেইড সদস্যদের ডাউনলোডযোগ্য কনটেন্ট, ওয়েবিনারের অ্যাক্সেস কিংবা বিনামূল্য ব্লগ কনটেন্টসহ আরও নানান সুবিধা দিতে পারেন।

১০. কোয়েশ্চেন এন্ড আনসার কমুনিটি তৈরি করা:

Quora-এর মত একটা প্রশ্নোত্তর সাইট তৈরি করতে পারেন। 

এই ধরণের সাইটগুলো আপনাকে একটা অনলাইন কম্যুনিটি তৈরি করতে সাহায্য করে। 

এই ফোরামের মতোই আপনি একটা বড় কম্যুনিটি তৈরি করতে কিছু সময় ব্যয় করতে পারেন। 

এরপরে, আপনি বিজ্ঞাপন, অ্যাফিলিয়েটড বিজ্ঞাপন ও অন্যান্য পদ্ধতি ব্যবহার করে আপনার ওয়েবসাইটে ইউসার-জেনারেটেড কনটেন্ট তৈরী করে মনিটাইজ করতে সক্ষম হবেন৷ 

নানান জনপ্রিয় কোয়েশ্চেন আনসার ওয়েবসাইটগুলো তাদের ইন্ডাস্ট্রির বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছ থেকে সরাসরি বিজ্ঞাপন ও স্পনসরশিপ ডিল পেয়ে থাকে। 

যা তাদের অনেক বেশি হারে ও অতিরিক্ত সুবিধা নিয়ে আলোচনা করতে সহায়তা করে থাকে।

১১. ইউটিউবে ভিডিও ব্লগিং করা:

এটি বর্তমানের সেরা ও ক্রমবর্ধমান ধরণের ব্লগিং। 

এখানে ভিডিও ব্লগাররা তাদের দৈনন্দিন জীবন সম্পর্কে কথা বলে ও দেখায়। 

আর, নিজেদের একটা কম্যুনিটি তৈরি করে৷ 

ইউটিউবে ভ্লগগুলো খুব সাধারণ হলেও বেশ জনপ্রিয়। 

এর থেকে অনেক ভিডিও ব্লগাররাই প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে সক্ষম হয়। 

এখনকার সময়ে ভিডিও ব্লগিংয়ের জন্য বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় নিশ হল-

– ভ্রমণ

– ফ্যাশন

– লাইফস্টাইল

– বিনোদন

– মোটিভেশন

আপনি ইউটিউব ভিডিও করে সেগুলো আপনার ব্লগে লিঙ্কের মাধ্যমে শেয়ার করে, সেখান থেকেও আপনার টার্গেট অডিয়েন্সদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ইউটিউবের চ্যানেল থেকেও রোজগার করতে পারবেন।

 

পরিশেষে:

ব্লগ তৈরী করা কেবলমাত্র একটা শখই নয়- বরং, এখান থেকে অর্থ উপার্জন করা ও স্বাধীনভাবে নিজের জীবনযাপন করারও একটা অন্যতম সেরা মাধ্যমগুলোর মধ্যে একটি। 

আশা করি, এই আর্টিকেল থেকে আপনার ওয়েবসাইটের ট্র্যাফিককে মনিটাইজ করার অনেকগুলো উপায় সম্পর্কেই ধারণা পেয়েছেন। 

তাই, আপনার অডিয়েন্স বাড়াতে, খ্যাতি তৈরি করতে ও আপনার কন্টেন্ট লাভজনক করতে- উপরে উল্লেখিত উপায়গুলো অনুসরণ করতেই পারেন৷ 

ভালো গুণগত মানসম্পন্ন কনটেন্ট, ব্যবসায়িক ও পেশাদার মনিটাইজিং টুলগুলোর সংমিশ্রণের মাধ্যমে আপনি আপনার ব্লগ থেকে প্রতিদিন ১০০ থেকে ৫০০ টাকা সহজেই আয় করতে পারবেন।  

তবে, ব্লগিং বিষয়টি একটা অনন্য পেশা হওয়ায় আপনি এখানে আপনার স্বাধীন পরিকল্পনার ভিত্তিতে, নিজের মতো অনুসন্ধান চালিয়ে অভিনব পদ্ধতিতে এখান থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে উপার্জন করতে সক্ষম হবেন।

আমাদের আজকের প্রতিদিন ১০০ টাকা আয় নিয়ে লেখা আর্টিকেলটি এখানেই শেষ হল। 

লেখাটি আপনার পছন্দ হলে অবশ্যই তা কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন।  

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top