বন্ধুরা যদি আপনারাও অনেক কম টাকা ইনভেস্ট করে লাভজনক একটি ব্যবসা শুরু করতে চাইছেন,
তাহলে অবশই মোবাইল রিপেয়ারিং ও সার্ভিসিং এর ব্যবসা কিভাবে করবেন সেই বিষয়ে জেনে রাখাটা জরুরি।
আজ প্রত্যেকেই একটি smartphone ব্যবহার করেন এবং কিছু দিনের মধ্যেই সেই স্মার্টফোনে কিছু না কিছু সমস্যা অবশই দেখা দিয়ে থাকে।
তাই, যদি আপনি মোবাইল রিপেয়ারিং এর কাজ ভালো করে করতে পারেন, তাহলে অবশই প্রচুর লোকেরা তাদের মোবাইলের সমস্যা নিয়ে আপনার কাছে চলে আসবে।
আর, আপনি যদি সঠিক টাকার বিনিময়ে সঠিক কাজ করে থাকেন, তাহলে লোকেরা বার বার আপনার কাছেই mobile repair করতে ছুটে আসবেন।
ফলে, আপনার জন্যে হয়ে দাঁড়াবে একটি অনেক লাভজনক ব্যবসার সুযোগ।
Smartphone আজ একটি অনেক সাধারণ প্রয়োজন যেটা প্রত্যেকের কাছেই আছে।
আমি যদি সঠিক বলছি তাহলে smartphone ব্যবহারকারীদের সংখ্যা প্রত্যেক দিন বেড়েই চলেছে।
কমদামি মোবাইল হোক কিংবা দামি, প্রত্যেক ধরণের মোবাইলের সমস্যা গুলো প্রায় এক রকমের এবং সমস্যার সমাধানের বিপরীতে ভালো পরিমানে টাকা আদায় করা সম্ভব।
তাহলে চলুন, নিচে আমরা জেনেনেই কিভাবে মোবাইল রিপেয়ারিং এর ব্যবসা শুরু করব। (How To Start Mobile Repairing Business in Bangla).
মোবাইল রিপেয়ারিং/সার্ভিসিং ব্যবসা কি ?
বন্ধুরা, বর্তমানের সময়ে আমরা বিভিন্ন device গুলোকে ব্যবহার করে থাকি।
যেমন, mobile, computer, laptop, tab ইত্যাদি।
এই প্রত্যেকটি device গুলো কিছু সময়ের পর অবশই খারাপ হয়ে থাকে।
বা, device গুলোর কিছুটা parts, function বা hardware সঠিক ভাবে কাজ করে থাকেনা।
এবং সেটাই সেই সময় যখন সেই device টিকে repair বা servicing করার প্রয়োজনীয়তা চলে আসে।
একটি mobile device অবশই বিভিন্ন ছোট-বড় hardware parts এবং সেগুলোকে কাজ করানোর জন্য বিশেষ operating software (OS) দ্বারা তৈরি।
এবার, মোবাইল পুরোনো হওয়ার পর অবশই মোবাইলের স্ক্রিন নষ্ট হওয়া, স্পিকার কাজ না করা, টাচ প্যাড কাজ না করা বা সফটওয়্যার এর সমস্যা ইত্যাদি দেখা দিতেই পারে।
এবার, যেই ব্যক্তির মোবাইলে কোনো সমস্যা দেখা দিচ্ছে, সেই ব্যক্তিকে খুঁজতে হবে একজন এমন ব্যক্তিকে বা দোকান যার মাধ্যমে সে তার মোবাইল এর সমস্যার সমাধান করতে পারবেন।
সোজা ভাবে বললে, খারাপ মোবাইল টিকে ঠিক করানোর জন্য একজন mobile repairing shop এর মধ্যে যেতে হবে।
তারপর, মোবাইল টিকে mobile repairing এর দোকানে থাকা technician দের দ্বারা ঠিক করা হবে।
মোবাইল ঠিক করার বিপরীতে সেই মোবাইল সার্ভিসিং এর দোকান বা দোকানি আপনার থেকে কিছু টাকা নিয়ে নিবেন।
এভাবেই, টাকার বিপরীতে যেকোনো খারাপ মোবাইল ভালো করে দেওয়ার সেবাটি (service) হলো “মোবাইল রিপেয়ারিং বা সার্ভিসিং ব্যবসা“।
মোবাইল রিপেয়ারিং ব্যবসা কিভাবে শুরু করবেন ?
বন্ধুরা, যেকোনো ব্যবসা শুরু করার আগেই সেই ব্যবসা নিয়ে আপনার কিছুটা জ্ঞান অবশই থাকতে হবে।
অনেক ধরণের ব্যবসা রয়েছে যেগুলোতে products বিক্রি করতে হয়।
তবে, এই মোবাইল সার্ভিসিং এর ব্যবসা হলো একটি সেবা (service) সম্বন্ধীয় ব্যবসা।
কেননা, এখানে আপনি নিজের ব্যক্তিগত অনুভব, জ্ঞান এবং নলেজ এর মাধ্যমে মোবাইল ভালো করার সেবা লোকেদের দিচ্ছেন।
আর তাই, এই ব্যবসার ক্ষেত্রে আপনাকে প্রথমেই মোবাইল রিপেয়ারিং এর কাজ শিখতে হবে।
চিন্তা করবেননা, বর্তমানের আধুনিক ও ইন্টারনেটের সময়ে মোবাইল রিপেয়ারিং এর কাজ শেখাটা কোনো বড় ব্যাপার না।
আপনারা কেবল ১ থেকে ২ মাসের মধ্যে মোবাইল সার্ভিসিং এর কাজ শিখে নিতে পারবেন।
ইন্টারনেটে সক্রিয় বিভিন্ন ওয়েবসাইট, YouTube, Udemy ইত্যাদির সাহায্য নিয়ে ঘরে বসে নিজের খালি সময়ে কাজ শিখতে পারবেন।
এছাড়া, আপনার আসে পাশে যদি কোনো ভালো institute রয়েছে তাহলে সেখান থেকেও কাজ শিখতে পারবেন।
তবে, মোবাইল রিপেয়ারিং শেখার সব থেকে দ্রুত উপায় হলো, আপনি কোনো মোবাইল রিপেয়ারিং সেন্টারে বা দোকানে কিছু দিন কাজ করুন।
এভাবে, প্রথমে মোবাইল রিপেয়ার করার কাজ শিখুন এবং তারপর নিজের কাছে থাকা খারাপ মোবাইল গুলোকে ভালো করার চেষ্টা করুন।
এতে, আপনি নিজের কার্যক্ষমতার যাচাই করে নিতে পারবেন।
ভালো করে smartphone repairing এর কাজ শিখে নেয়ার পর এবার আপনি নিজের ব্যবসার দিকে এগিয়ে যেতে পারবেন।
কোথায় করবেন মোবাইল রিপেয়ারিং/সার্ভিসিং কোর্স ?
দেখুন, ওপরেও আমি আপনাদের বলেছি যে মোবাইল ভালো করার কোর্স অনেক সহজেই করা সম্ভব।
- আপনারা, ইউটিউবে “mobile repairing course” লিখে সার্চ দিলেই অনেক ধরণের ভিডিও দেখতে পাবেন যেগুলোতে মোবাইল সার্ভিসিং এর কাজ শেখানো হয়েছে।
- এছাড়া, আপনি ২ থেকে ৩ মাস কোনো mobile servicing shop এর মধ্যে কাজ করে অভিজ্ঞতা আদায় করতে পারবেন।
- যদি আপনি ইংরেজি বুঝতে পারেন তাহলে ইন্টারনেটে অনেক course website রয়েছে যেগুলোতে মোবাইল রিপেয়ারিং এর কোর্স করানো হয়।
- এগুলোর মধ্যে সব থেকে ভালো উপায় হলো, আসে পাশে থাকা যেকোনো institute থেকে repairing course করুন।
মনে রাখবেন, একবার নিজের কোর্স সম্পূর্ণ করার পর আপনাকে যেকোনো একটি repairing shop বা service center এর মধ্যে কিছু দিন কাজ করাটা অনেক জরুরি।
এর দ্বারা আপনার practical knowledge বাড়ার সাথে সাথে mobile repairing এর সাথে জড়িত অনেক tips এবং tricks গুলো জেনেনিতে পারবেন।
যতটা বেশি practical knowledge বাড়বে ততটাই ভালো করে জটিল সমস্যার সমাধান গুলো করতে পারবেন।
মোবাইল সার্ভিসিং এর ব্যবসাতে কত টাকা ইনভেস্ট করতে হবে ?
দেখুন, এই ব্যবসাতে ইনভেস্টমেন্ট কত করতে হবে সেটা সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আপনার জায়গার ওপরে।
মানে, আপনি কোন জায়গায় এই mobile repairing business শুরু করতে চাইছেন,
সেই জায়গার ওপরেই সবটা নির্ভর।
কেননা, আলাদা আলাদা মার্কেটে বা জায়গায় দোকান ভাড়া নিতে গেলে আলাদা আলাদা পরিমানের টাকা দিতে হয়।
এখন, আপনি চাইলে প্রথম অবস্থায় একেবারে ছোট্ট একটি দোকান নিতে পারবেন।
যদি আপনি একাই কাজ করবেন বলে ভাবছেন, তাহলে ছোট্ট দোকান যথেষ্ট।
একটি ছোট্ট দোকান নিতে গেলে প্রায় ১৫ থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ হতেই পারে।
এছাড়া, মোবাইল repair করার ক্ষেত্রে আপনার কিছু যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হবে যেগুলো কিনতে প্রায় ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা খরচ হতেই পারে।
এছাড়া, দোকানে একটি টেবিল এবং চেয়ার অবশই থাকতে হবে যেটা আপনি নিজের ঘর থেকেও এনে ব্যবহার করতে পাবেন।
মোবাইল রিপেয়ারিং ব্যবসাতে লাভ কত হতে পারে ?
এটা এমন একটি ব্যবসা যেটা দেখতে অনেক সাধারণ হতে পারে যদিও এই ব্যবসা থেকে প্রচুর লাভ হওয়ার সম্ভাবনা অবশই থাকে।
আপনি যদি একটি ভালো জায়গায় mobile repairing shop দিতে পারেন, তাহলে প্রচুর লোকেরা আপনার দোকানে চলে আসবেন।
ভালো জায়গা বলতে, আপনাকে এমন একটি জায়গায় দোকান দিতে হবে যেখানে আগের থেকে কোনো repairing center নেই।
কেবল তখন, সেই জায়গার থেকে প্রায় প্রত্যেকটি মোবাইল রিপেয়ারিং এর কাজ আপনি পাবেন।
ধরুন প্রত্যেক দিন অনেক কমেও আপনি ৪ করে কাস্টমার পাচ্ছেন যাদের থেকে খুব কমে ৩৫০ টাকা করে নিচ্ছেন।
এবার ৩৫০ X ৪ = ১৪০০ টাকা আপনি প্রত্যেক দিন আয় করছেন।
তাহলে ১ মাসে আপনি খুব কমেও প্রায় ৪০,০০০ টাকা ইনকাম করছেন।
এরকম অনেক সময় আসতেও পারে যখন আপনার দোকানে প্রত্যেক দিন ৪ টির থেকেও অধিক গ্রাহকেরা মোবাইল ঠিক কোরানের জন্য আসছেন।
সেক্ষেত্রে আপনার ইনকাম আরো অধিক হওয়ার সুযোগ অবশই থাকছে।
মোবাইল সার্ভিসিং ব্যবসা করার আগে ধ্যান রাখুন এই বিষয়ে
মনে রাখবেন, মোবাইল রিপেয়ারিং ব্যবসা শুরু করার জন্য আপনাকে এই বিশেষ বিষয় গুলোর ওপরে অবশই নজর দিতে হবে।
- চাহিদা থাকা জায়গায় দোকান নিতে হবে। এতে অনেক তাড়াতাড়ি এবং অধিক গ্রাহক পাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
- জরুরি প্রত্যেক যন্ত্রপাতি আপনার কাছে থাকতে হবে। নাহলে আপনি সঠিক ভাবে কাজ করতে পারবেননা।
- সার্ভিস অবশই ভালো দিতে হবে। কাজ না করতে পারলে সোজা বলে দিবেন। ভুল ভাল কাজ করে নিজের নাম খারাপ করবেননা।
- অধিক repairing charge আদায় করবেননা। প্রত্যেক কাজের জন্য যতটুকু প্রয়োজন সেই টাকা নিবেন। অধিক টাকার লোভে বেশি repairing charge করলে সেই customer আপনার কাছে ভবিষ্যতে ঘুরে আসবেনা।
- নিজের ব্যবসার মার্কেটিং করাটা অনেক জরুরি। মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনি আপনার ব্যবসার বিষয়ে লোকেদের জানাতে পারবেন। Facebook, YouTube ইত্যাদির মাধ্যমে নিজের ব্যবসার প্রচার করুন।
- কাস্টমার দের ভুল উপদেশ বা পরামর্শ দিবেননা। কেননা, আজকাল সবাই যেকোনো বিষয়ে সাধারণ জ্ঞান অবশই রাখেন।
- সম্ভব হলে আপনার সাথে একজন technician রাখুন। এতে এক দিনে অধিক কাজ করা যাবে।
- Feedback অবশই নিবেন। এতে আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনার কাজ কতটা ভালো এবং যদি কিছু ভুল হচ্ছে তাহলে সেটা কি।
আজকে আমরা কি শিখলাম ?
তাহলে বন্ধুরা আজকে আমরা জানলাম মোবাইল রিপেয়ারিং এর ব্যবসা কিভাবে শুরু করতে হয় এবং এর সাথে জড়িত অন্যান্য কিছু তথ্য।
“How to start mobile repairing business”, বিষয়টি নিয়ে যদি কোনো ধরণের প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকে,
তাহলে অবশই নিচে কমেন্ট করে জানাবেন।
তাছাড়া, আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকলে আর্টিকেলটি শেয়ার করতে ভুলবেননা।
পোস্টটা খুব সুন্দর হয়েছে বলতেই হবে !
ধন্যবাদ ভাই।