মেয়েদের ঘরে বসে আয় করার উপায়: ঘরে বসে রোজগারের সুযোগ

Last updated on November 16th, 2023 at 06:33 pm

কিভাবে মেয়েরা ঘরে বসে অনলাইনে কাজ করে মাসে হাজার হাজার টাকা ইনকাম করতে পারবেন? মেয়েদের ঘরে বসে আয় করার উপায় গুলো কি কি? এই প্রশ্নের উত্তর গুলি আমরা আজকের এই আর্টিকেলের দ্বারা জানার চেষ্টা করবো।

মেয়েদের ঘরে বসে আয় করার উপায়
কিভাবে মহিলারা ঘরে বসে টাকা আয় করবেন?

বর্তমান সময়ে প্রযুক্তির কৃপাতে চাকরি করার জন্য আর তথাকথিত অফিসের দোরগোড়ায় যেতে হয় না, কেননা চাইলে সমস্ত কাজই হয়ে যায় ঘরে বসেই। মূলত ২০২০ সালে কোভিড-১৯ অতিমারীর কারণে একপ্রকার বাধ্য হয়েই বিভিন্ন সংস্থা ‘ওয়ার্ক-ফ্রম-হোম’ বা সংক্ষেপে WFH পন্থা বেছে নিয়েছিল।

কিন্তু সময়ের সাথে এই কর্মপদ্ধতি এতটাই জনপ্রিয়তা লাভ করেছে যে বহু মানুষ এখনো WFH চাকরি খুঁজে থাকেন।

রিমোর্ট মোডে কাজ করার সুবিধা একাধিক হলেও, অনেক অসুবিধাও বিদ্যমান। তবে যদি আপনি একজন মহিলা বা মেয়েদের ঘরে বসে ইনকাম করার কিছু সেরা উপায় গুলি খুঁজছেন, তাহলে উপায় অনেক রয়েছে যেগুলিকে কাজে লাগিয়ে নিয়মিত ইনকাম করা যাবে।

হাজারো অসুবিধা থাকা সত্ত্বেও স্বীকার করতেই হবে যে, ওয়ার্ক-ফ্রম-হোম চাকরিগুলি বিশেষত মহিলাদের জন্য চমৎকার ক্যারিয়ার স্কোপ হতে পারে।

মেয়েদের ঘরে বসে রোজগারের উপায় গুলির কারণে তারা টাকা ইনকামের সুযোগ সুবিধে পাওয়ার পাশাপাশি বাড়ির মানুষগুলিকে সময়ও দিতে পারবেন এবং চাইলে কাজের পাশাপাশি পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার সুবিধাও পাবেন।

বিশেষত আমরা যদি গৃহিণীদের পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে দেখি তবে, তারা প্রায় সারাদিনই বাড়ির কাজ এবং পরিবার পরিচালনা করতে ব্যস্ত থাকেন। যার দরুন হাউজ-ওয়াইফরা সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ওয়ার্কিং আওয়ারের সাথে আসা চাকরি করতে সক্ষম হন না।

তাই হোম-বেসড চাকরিতে নিযুক্ত হওয়ার মাধ্যমে, পরিবারকে আর্থিকভাবে সাহায্য করা এবং একই সাথে ‘ইন্ডিপেন্ডেন্ট’ হওয়াও সম্ভব। তবে মনে রাখতে হবে যে, এই ধরণের কাজে আয়ের পরিমাণ সম্পূর্ণরূপে আপনার অভিজ্ঞতা এবং পারদর্শিতার উপর নির্ভর করবে।

ঘরে বসে মেয়েদের আয় করার উপায় গুলির সুবিধা এবং অসুবিধা:

আপনি নিজে যদি মেয়েরা করতে পারবেন এমন একটি কাজে নিযুক্ত হতে চান কিন্তু ওয়ার্ক-ফ্রম-হোমের অধীনে কি কি ধরণের চাকরি বা রিমোর্ট কাজ গুলি পরে সেই সম্পর্কে ধারণা আপনার না থেকে থাকে, তবে আমাদের এই প্রতিবেদন থেকে ঘরে বসে মেয়েদের আয় করার উপায় গুলি দেখে নিতে পারেন।

মেয়েদের ঘরে বসে রোজগার বা ইনকাম করার ক্ষেত্রে থাকা এই রিমোট ওয়ার্ক গুলির একাধিক ‘অ্যাডভ্যান্টেজ’ বা সুবিধা আছে, যার মধ্যে সামিল রয়েছে।

১. নিয়ন্ত্রণযোগ্য (অ্যাডজাস্টেবল) চাকরির সময়।
২. পরিবারকে সময় দিয়েও উপার্জন করা সম্ভব। বিশেষত মায়েরা নিজেদের সন্তানদের পর্যাপ্ত সময় দিতে পারবেন।
৩. প্রতিদিন বাড়ি থেকে কর্মস্থলে যাতায়াতের সময় ও খরচ উভয়ই বাঁচাতে পারবেন।
৪. অনলাইন ভিত্তিক চাকরি করলে হাতে নগদ পাওয়ার পরিবর্তে সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পরবে।
৫. বিভিন্ন ফিল্ডের মানুষের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের সুযোগ পাবেন।
৬. কর্ম জীবন এবং ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে সক্ষম হবেন।

মেয়েদের ঘরে বসে আয় করার ক্ষেত্রে থাকা এই ওয়ার্ক ফ্রম হোম চাকরি গুলি করার সময় বিভিন্ন ধরণের ‘চ্যালেঞ্জিং সিচুয়েশন’ -এর সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে।

এই ধরণের কয়েকটি অসুবিধা নিম্নরূপ,

১. ফ্রেশাররা কাজের প্রাথমিক বিষয়গুলি বুঝতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে পারেন।
২. রিমোর্ট ভিত্তিক চাকরি হওয়ার দরুন সিনিয়ররা অনেক সময় যথাযথ গাইড করার সুযোগ পান না।
৩. বাড়িতে কাজ করার সময়, আশপাশের পরিস্থিতি দ্বারা মনোসংযোগ ক্ষুন্ন হতে পারে।
৪. নিয়োগকর্তাদের দ্বারা ‘টেকেন ফর গ্র্যান্টেড’ বা অবহেলিত হতে পারেন। তবে সব রিমোর্ট জবেই যে এই ব্যবহার পাবেন তা একদমই নয়।
৫. ফুল-টাইম চাকরির বেতন আশা না করা ভালো। যদিও কিছু রিমোর্ট পেশায় অফলাইন চাকরির থেকেও অধিক রোজগারের সুযোগ থাকে।

মেয়েদের ঘরে বসে আয় করার উপায়: ঘরে বসে রোজগারের সুযোগ

ইন্টারনেটের মাধ্যমে ঘরে বসে মেয়েদের আয় করার উপায় এমনিতে প্রচুর রয়েছে। তবে, যখন মহিলারা প্রশ্নটি করে থাকেন যে, কিভাবে ঘরে বসে আয় করা যায় তখন নিচে বলে দেওয়া কাজ গুলো আমার হিসেবে সেরা এবং লাভজনক।

মেয়েদের ঘরে বসে রোজগাররের সেরা এবং উপযুক্ত কিছু ওয়ার্ক ফ্রম হোম জবের আইডিয়া :

১. অনলাইন টিউটর (Online Tutor):

মেয়েদের ঘরে বসে আয় করার উপায় গুলোর মধ্যে এই উপায় আমার হিসেবে সব থেকে সেরা।

ঘরে বসে দৈনিক টাকা ইনকামের অন্যতম সেরা উপায় হল ইন্টারনেট-ভিত্তিক শিক্ষাদান করা। ২০২০ সালের পর থেকে অর্থাৎ করোনা অতিমারী চলাকালীন শিক্ষা অর্জনের জন্য শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাসের উপর নির্ভর করতে হত।

মূলত যাতায়াতের সময় বাঁচানোর পাশাপাশি শিক্ষকদের থেকে আরো নিবিড়ভাবে পড়াশোনা শেখার সুযোগ থাকায় বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে ‘অনলাইন এডুকেশন’ পদ্ধতি। এছাড়া শিক্ষার্থীরা তাদের আগ্রহের বিষয় এবং মডিউল নির্বাচন করার স্বাধীনতাও পেয়ে থাকে শিক্ষাগ্রহণের এই নয়া পন্থায়।

তাই অধিক সংখ্যক ছাত্রছাত্রীরা এখন তাদের পছন্দের নানান অনলাইন কোর্সে গুলিতে ভর্তি হচ্ছে।

যার দরুন অনলাইন এডুকেটর বা শিক্ষাবিদদের চাহিদাও দিনকেদিন বাড়ছে। অতএব আপনি যদি নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হন এবং অধ্যাপনার অভিজ্ঞতা থেকে থাকে তাহলে এই পেশা আপনার জন্য আদর্শ হতে পারে।

মেয়েদের ঘরে বসে ইনকাম করার এই পেশায় নিযুক্ত হওয়ার পর আপনাকে একটানা কম্পিউটারের সামনে বসে থাকতে হবে না, বরং আপনি নিজের সুবিধা মতো সময়ে ক্লাস শিডিউল করতে পড়বেন।

সর্বোপরি অনলাইন টিউটরিং করে আপনি মাসে ৩০,০০০ টাকার মতো টাকা খুব সহজে আয় করতে পারবেন। তবে কত টাকা উপার্জন করবেন, তা আপনার পূর্ববর্তী শিক্ষাদানের অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করবে।

২. বেকারি ব্যবসা (Bakery business):

কোভিড-১৯ পরিস্থিতির পর থেকে অনেকেই ২-৩ দিন ধরে ‘প্রিসার্ভড’ কেক বা বেকারি প্রোডাক্ট কিনতে চান না।

যার দরুন বিগত দু-বছরের মধ্যে হোম-বেসড বেকারি ব্যবসার প্রচলন বিশেষভাবে নজরে পরছে। এছাড়াও, অনেকে জন্মদিন, বিবাহ বার্ষিকী ইত্যাদি ধরণের অনুষ্ঠানের জন্য বাড়িতে তৈরী ডেসার্ট, প্যাটিস, পেস্ট্রি, কেক, টার্টস, কুকিজ, চকোলেট অর্ডার করতে পছন্দ করেন।

তাই আপনার যদি হোম-সায়েন্সে ডিগ্রি থাকে বা যদি কোনো বেকিং কোর্স করে থাকেন অথবা বেকারি খাদ্যদ্রব্য বানাতে দক্ষ হন, তাহলে আপনি নিজের একটি হোম বেসড প্যাস্ট্রি স্টোর বা কেক এর দোকান খুলতে পারেন।

মেয়েদের ঘরে বসে আয় করার নানান উপায় গুলির মধ্যে এটি একটি অনেক দারুন ও কার্যকর উপায়। আপনি চাইলে নিজের ঘরে বসে কেক বা প্যাস্ট্রি ইত্যাদি বানিয়ে অনলাইনে বা ফোনের মাধ্যমে অর্ডার নিতে পারেন।

একটি দোকান কেনার বা ভাড়া করার বাজেট যদি আপনার না থেকে তবে, খুব সহজেই হোম ডেলিভারি পরিষেবা বেছে নিয়ে কাজ শুরু করতে পারেন।

বেকারি ব্যবসা শুরু করার মাধ্যমে আপনি যথেষ্ট পরিমাণ উপার্জন করতে পারবেন। সর্বোপরি প্রি-অর্ডার বা বুকিং নেওয়ার সময়ে অ্যাডভান্স টাকা নিয়ে নিলে, এই ব্যবসা শুরুর জন্য আপনাকে অধিক বিনিয়োগও করতে হবে না।

প্রসঙ্গত, আপনি বেকারি ব্যবসাকে আরো বেশি সংখ্যক গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য – Swiggy, Dunzo, Zomato -এর মতো একাধিক ফুড ডেলিভারি অ্যাপে নিজের কোম্পানিকে তালিকাভুক্ত করাতে পারেন।

অথবা, নিজের একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে অনলাইনে সেবা প্রদান করার সুবিধা দিতে পারেন।

৩. ব্লগিং (Blogging):

যখন কথা হচ্ছে মহিলাদের জন্য থাকা সেরা ঘরে বসে আয় করার উপায় গুলি নিয়ে, তখন Blogging-এর বিষয়ে না বললে কিভাবে হয় বলুন তো।

বাড়ি বসে নিজের খালি সময়ে কাজ করে নিয়মিত টাকা ইনকামের আরেকটি সর্বোত্তম উপায় হল নির্দিষ্ট কোনো বিষয়কে কেন্দ্র করে ব্লগ সাইট তৈরি করে তাতে আর্টিকেল লেখা, যেগুলিকে পাঠকরা পড়তে ও শেয়ার করতে পারবে।

তাই আপনি যদি লেখালিখি করতে পছন্দ করেন তাহলে অনলাইন ব্লগিং করার কথা ভাবতে পারেন। এর জন্য আপনি – লাইফস্টাইল, মুভি, কসমেটিক্স বা সাজসজ্জার সরঞ্জাম, ফ্যাশন, ট্রাভেল, গার্ডেনিং, ফুড বা কোনো শিক্ষাগত বিষয়কে টপিক হিসাবে বেছে নিতে পারেন।

আবার নিজের জীবনে প্রত্যহ ঘটা ঘটনাগুলিকেও ডাইরি ব্লগ হিসাবে পোস্ট করতে পারেন। এছাড়াও, ইনস্টাগ্রামের (Instagram) মাধ্যমে মাইক্রোব্লগিং শুরু করতে পারেন। এমনটা করলে অডিয়েন্স এর ভিউ পাওয়ার সুযোগ অধিক থাকে।

তবে আয়ের পরিমাণ আরো ত্বরান্বিত করার জন্য আপনি কয়েকটি স্ট্র্যাটেজি অনুসরণ করতে পারেন, যেমন – গুগল এডসেন্স, ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং এবং এফিলিয়েট মার্কেটিং

৪. ভ্লগিং (Vlogging) :

মেয়েদের ঘরে বসে রোজগারের উপায় গুলির মধ্যে আরেকটি সেরা ও খুব লাভজনক উপায়টি হলো ভ্লগিং (vlogging)। এটা বিশেষ কিছুই নয় তবে ব্লগিংয়েরই একটি ভিডিও ফর্ম।

আরো সোজা করে বললে, বিভিন্ন বিষয় ভিত্তিক ভিডিও রেকর্ড করে সেগুলিকে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিতে শেয়ার করার প্রক্রিয়াকে ভ্লগিং বলা হয়। Vlogging করে অনেক তাড়াতাড়ি ও সুবিধাজনক ভাবে টাকা ইনকাম করার সেরা উপায় গুলির মধ্যে YouTube সব থেকে জনপ্রিয় একটি প্লাটফর্ম।

তাই আপনি যদি একজন ভ্রমণপিপাসু ব্যক্তি হন বা নিজের প্রাত্যহিক জীবনের প্রতিটি অভিজ্ঞতাকে অন্যদের সাথে শেয়ার করতে আগ্রহী থাকেন, তবে ভিডিও বানিয়ে তা অনলাইন বা ইউটিউবের মতো প্লাটফর্ম গুলিতে পোস্ট করতে পারেন।

একজন মহিলা ভ্লগিং করার মাধ্যমে খুব সহজেই ঘরে বসে ইনকাম করার সুযোগ পেতে পারবেন। আপনি আপনার পছন্দের সময়, জায়গা এবং বিষয় বেছে নিয়ে vlogging শুরু করতে পারবেন। তবে, এক্ষেত্রে প্রতিদিন কিছুটা সময় আপনাকে অবশই দিতে হবে।

আপনি নিজের গুণাবলীকে ভিডিও বন্দি করে ইউটিউবের মতো প্লাটফর্মে প্রচার করতে পারেন।

বিশ্বাস করুন, সারা বিশ্বজুড়ে YouTube থেকে হাজার লক্ষ লোকেরা প্রতিমাসে হাজার লক্ষ টাকা আয় করে নিতে পারছেন। এর দ্বারা ঘরে বসে অনলাইন থেকে আনলিমিটেড টাকা রোজগারের সুযোগ অবশই পাওয়া যাবে।

তবে সবথেকে মজার ব্যাপার, ভ্লগিং করার ক্ষেত্রে প্রতিদিন মাত্র ২-৪ ঘন্টা ‘ইনভেস্ট’ করাই যথেষ্ট। ফলে আপনি নিজের জীবিকা ও ব্যক্তিগত জীবনকে সমান ভাবে গুরুত্ব দিতে পারবেন।

যাইহোক প্রাথমিক ধাপ হিসাবে, ইউটিউবে (YouTube) নিজের ভিডিও আপলোড করে আপনি নিজের ভ্লগ শুরু করতে পারেন। তবে মনে রাখবেন আপনি যেই বিষয় ভিত্তিক ভিডিও বানাচ্ছেন তা যেন আকর্ষণীয় হয় এবং কনটেন্টের উপস্থাপনা যেন চিত্তাকর্ষক হয়।

আর একবার বিপুল সংখ্যক ফলোয়ার আপনার চ্যানেলের সাথে যুক্ত হয়ে গেলেই প্রতি কনটেন্ট পিছু ব্যাপক পরিমাণ টাকা রোজগার করতে পারবেন।

৫. কনটেন্ট রাইটার (Content Writer):

আমরা বর্তমানে এমন একটা যুগে বাস করছি, যেখানে মানুষ ছোটোখাটো কোনো বিষয় সম্পর্কে জানতে হলেও ইন্টারনেট সার্ভ করে থাকেন। এক্ষেত্রে ইন্টারনেটে উপলব্ধ নানান ‘ইনফরমেটিভ আর্টিকেল’ গুলি লিখে থাকেন এই কনটেন্ট রাইটাররা।

এছাড়া যেইসকল কোম্পানি বা ওয়েবসাইট গুলো, অ্যাকডেমিক বা বিনোদন ভিত্তিক লেখালিখি পোস্ট করার মাধ্যমে অডিয়েন্স আকৃষ্ট করেন তারাও কনটেন্ট রাইটার খুঁজে তাদের দ্বারা ওয়েবসাইটে নিয়মিতই আর্টিকেল পাবলিশ করিয়ে থাকেন।

তাই আপনার যদি নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হয়ে থাকেন এবং আপনার লেখার হাত ভালো হয় তবে অনলাইনে কনটেন্ট লিখে মাসিক ১৫,০০০ টাকা বা তার বেশি উপার্জন করতে পারেন।

জানিয়ে রাখি, ইন্টারনেট সার্ভ করলে আপনি অনেক ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস গুলি পাবেন যেগুলিতে গিয়ে নানান কনটেন্ট রাইটিং প্রজেক্ট গুলি পেয়ে যাবেন। এখানে, ইচ্ছানুসার সংখ্যক কনটেন্ট লেখার মাধ্যমে আপনি নিয়মিত টাকা রোজগার করতে পারবেন।

তবে এর জন্য ইংরেজি সহ যেকোনো আঞ্চলিক ভাষা এবং শব্দভাণ্ডারের উপর ভালো দখল থাকা দরকার।

কনটেন্ট রাইটিংয়ের অধীনে বেশ কয়েকটি ক্যাটাগরি সামিল রয়েছে, যথা – রিজিউম রাইটিং, ক্রিয়েটিভ রাইটিং, লিগাল রাইটিং, এসইও (SEO) রাইটিং এবং প্রুফ রিডিং।

এছাড়া, আপনি চাইলে নিজের একটি ওয়েবসাইট তৈরী করে ভাল কনটেন্ট পোস্ট করার মাধ্যমেও আয় করতে পারেন। আমার হিসেবে, মেয়েদের ঘরে বসে অনলাইনে টাকা আয় করার সেরা উপায় গুলির মধ্যে এটা একটি অনেক কার্যকর উপায়।

৬. সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার:

আজকালকার সময়ে ‘সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার’ -রা শুধু নামই নয়, সাথে ব্যাপক পরিমান অর্থও উপার্জন করছেন। তবে আপনাদের যদি এই সম্পর্কে ধারণা না থাকে তবে জানিয়ে দিই যে, এই পেশাটি বর্তমানে খুব ট্রেন্ডিংয়ে আছে অর্থাৎ লোকপ্রিয় হয়েছে।

এই পেশায় ঢুকতে হলে, আপনাকে প্রথমে আপনার পছন্দের একটি বিষয় বেছে নিতে হবে এবং টুইটার বা ইনস্টাগ্রামে একটি প্রোফাইল খুলতে হবে। তারপরে, নির্বাচিত বিষয় কেন্দ্রিক ভিডিও বা ‘ইনস্টাগ্রাম রিলস’ (Instagram Reels) বানিয়ে পোস্ট করা শুরু করতে হবে।

এক্ষেত্রে, আপনার ভিডিওর ভিডিওগ্রাফি যত সুন্দর এবং নির্বাচিত বিষয় বা টপিক আকর্ষণীয় হবে, তত বেশি ‘এনগেজমেন্ট রেট’ আসবে ও ফলোয়ারও বাড়বে। আর একবার ৫,০০০ ফলোয়ার-বেস তৈরী হয়ে গেলে, আপনার প্রোফাইল মনিটাইজ হয়ে যাবে।

বিভিন্ন অ্যাডভার্টাইজমেন্ট কোম্পানিগুলি সেলিব্রেটিদের পরিবর্তে সাধারণ মানুষের মধ্যে থেকে উঠে আসা এই ‘সেলফ মেড’ ইনফ্লুয়েন্সারদের দ্বারা নিজেদের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস প্রচার করতে বেশি আগ্রহী থাকে।

তাই অতিরিক্ত আয়ের জন্য এই কোম্পানিগুলি আপনার সাথে যোগাযোগ করলে তাদের সাথে অংশীদারিত্ব করতে পারেন। এমনটা করলে ফলোয়ারদের মধ্যে আপনার গুরুত্ব বাড়বে এবং পাশাপাশি ইনফ্লুয়েন্সার হিসাবে আপনি নিজের জায়গা আরো পোক্ত করতে পারবেন।

বর্তমান সময়ে একজন social media influencer হিসেবে প্রচুর flowers জমা করে নিয়ে মহিলারা ঘরে বসেই প্রচুর টাকা আয় করার সুযোগ পেয়ে যাচ্ছেন।

৭. ডেটা এন্ট্রি (Data Entry):

বর্তমান সময়ে ন্যাশেনাল বা ইন্টারন্যাশনাল প্রায় প্রত্যেকটি কোম্পানিই দৈনিক ডেটা ট্রান্সফারের কাজ করে থাকেন।

এই কারণবশত এখন বহু কোম্পানির এমন নানান ব্যক্তিদের প্রয়োজন হচ্ছে, যারা ডেটা ট্রান্সফারের কাজ পরিচালনা করতে সক্ষম এবং একই সাথে তাদের সিস্টেমে সেই ডেটা এন্টার বা যুক্ত করতে পারবে।

সোজা ভাষায় বললে, ডেটা এন্ট্রির জন্য এখন ব্যাপক পরিমাণে লোক নিয়োগে করা হচ্ছে। আর এক্ষেত্রে তৈরি হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রী সহ মেয়েদের ঘরে বসে আয় করার দারুন একটি সুযোগ।

ডাটা এন্ট্রি হল একপ্রকারের ‘ক্লারিক্যাল জব’, যেখানে কম্পিউটার এবং ডেটা প্রসেসিং প্রোগ্রাম ব্যবহার করে কোনো লিখিত তথ্যাদিকে ইলেকট্রনিক ফরম্যাটে এন্ট্রি করার কাজ করতে হয়।

এই কাজ করার জন্য আপনাকে অফিস যেতে হবে না, ঘরে বসে একটি ল্যাপটপ বা পিসি এবং স্টেবল ইন্টারনেট কানেকশন থাকলেই কাজ করা যাবে।

তবে আপনি যদি স্নাতক বা স্নাতকোত্তর হন এবং একই সাথে হাই-টাইপিং স্পিডে মাইক্রোসফ্ট এমএস অফিসে কাজ করতে পারদর্শী হন তবে এই চাকরিটি আপনার জন্য সেরা।

৮. টিফিন সার্ভিস (Tiffin Services):

মহিলাদের রান্নাবান্নায় পারদর্শিতার কথা কারোরই অজানা নয়। তাই এই রান্নাবান্না কিন্তু হয়ে দাঁড়াতে পারে মেয়েদের ক্ষেত্রে ঘরে বসে আয় করার একটি দারুন ও কার্যকর উপায়। তাই এই গুনটিকে ঘরের মধ্যে বন্দি না রেখে, উপার্জনের কাজেও লাগাতে পারেন।

এক্ষেত্রে আপনি নিজের একটি হোম-ডেলিভারি ভিত্তিক টিফিন সার্ভিস ব্যবসা শুরু করতে পারেন। যদিও দৈনন্দিন কাজকর্ম সামলে এই ব্যবসা পরিচালনা প্রথম প্রথম শ্রমসাধ্য হতে পারে, তবে একবার ‘টাইম মেনেজমেন্ট’ -এর কৌশল শিখে গেলে সাবলীলভাবে আপনি এই পেশায় নিজেকে গুছিয়ে নিতে পারবেন।

মেয়েদের ঘরে বসে আয় করার সহজ উপায় হিসেবে টিফিন সার্ভিস ব্যবসা খুবই লাভজনক। কারণ আজকাল বহু চাকরিজীবি মানুষ নিয়মিত খাবার রান্না করার সময় পায় না এবং রেস্টুরেন্টের থেকে খাবার অর্ডার করেন।

আর এর জন্য তাদের স্বাস্থ্য ও পকেট উভয়ের উপরই চাপ পরে। ফলে অনেকেই বাড়িতে তৈরী খাবার পৌঁছে দিতে পারবে এমন ব্যক্তিদের খুঁজে থাকেন। আপনি এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে একটি সফল টিফিন ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

এর জন্য, সপ্তাহের প্রতিদিন-ভিত্তিক একটি ছোট মেনু তৈরি করুন, সাথে কিছু ‘স্পেশাল’ ডিশ রাখুন এবং দৈনিক খাবার নেবে এমন গ্রাহকদের জন্য একটি মান্থলি স্কিম অফার করতে পারেন।

প্রসঙ্গত, Zomata, Swiggy, Homely -এর মতো বিভিন্ন ফুড সার্ভিসিং অ্যাপ বা সংস্থার সাথে যোগাযোগ করেও আপনি নিজের ব্যবসাকে পেশাগতভাবে আরো সম্প্রসারিত করতে পারেন।

৯. ভার্চুয়াল অ্যাসিস্টেন্ট (Virtual Assistant):

ভার্চুয়াল অ্যাসিস্টেন্ট বা সংক্ষেপে VA হল একজন স্ব-নিযুক্ত পেশাদার, যিনি বড় এবং ছোট ব্যবসায়িক সংস্থাগুলির হয়ে তাদের ‘রিমোর্ট’ মোডে দৈনন্দিন কাজকর্মে সহায়তা করে থাকেন।

এক্ষেত্রে একজন ভার্চুয়াল অ্যাসিস্টেন্টের কাজের প্রক্রিয়া নির্ভর করে ক্লায়েন্টের প্রয়োজনীয়তা উপর।

তাই আপনি যদি ইন্টারনেট ব্যবহারে দক্ষ হন ও উক্ত পেশায় নিযুক্ত হতে চান তবে, আপনাকে আপনার ক্লায়েন্টের হয়ে মিটিং শিডিউল, প্রেজেন্টেশন বানানো, ফোন কল রিসিভ এবং ওয়েবসাইট পরিচালনা করতে হতে পারে।

তবে ভার্চুয়াল অ্যাসিস্টেন্ট হওয়ার জন্য আপনার মধ্যে কয়েকটি গুন অবশ্যই থাকতে হবে, যথা – ভাল কমিউনিকেশন স্কিল, যথাযথ টাইম মেনেজমেন্ট স্কিল এবং মাইক্রোসফ্ট অফিসে পারদর্শিতা।

দেখতে গেলে, হোম-মেকার বা গৃহিণীরা বাস্তব জীবনে এইসকল বিষয়ে যথেষ্টই পারদর্শী। যাইহোক ভার্চুয়াল অ্যাসিস্টেন্ট হিসাবে আপনি প্রতি ঘন্টায় ৫০০–১৫০০ টাকা অর্থাৎ মাসে ৩০,০০০–৬৫,০০০ টাকা আয় করার সুযোগ পাবেন।

১০. গ্রাফিক ডিজাইনিং (Graphic Designing):

যখন কথা হচ্ছে, মেয়েদের ঘরে বসে রোজগার করার বিষয়টি নিয়ে, তখন গ্রাফিক্স ডিজাইন একটি দারুন বিকল্প।

বর্তমান সময়ে ছোট বড় প্রায় প্রত্যেকটি ব্যবসাই নিজেদের প্রচারকার্যের জন্য ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের উপর নির্ভরশীল। আর এই মার্কেটিং পন্থার সাথে বিশেষ ভাবে জড়িত আছে গ্রাফিক্স ডিজাইনিং। তাই এই পেশায় কেরিয়ার গড়ার অফুরন্ত সুযোগ আছে।

এক্ষেত্রে আপনি যদি গ্রাফিক্সের উপর কোন কোর্স করে থাকেন বা সার্টিফাইড ইনস্টিটিউশন থেকে ডিগ্রী-প্রাপ্ত করে থাকেন তাহলে আপনি এই পেশার জন্য উপযুক্ত।

এছাড়া আপনাকে ফটোশপ, ইলাস্ট্রেটর, কোরেলড্র, অ্যাডব ইনডিজাইন ইত্যাদি গ্রাফিক্স সফ্টওয়্যার ব্যবহারে দক্ষ হতেই হবে। এই কাজ যেমন অফলাইন মোডে করা যায়, তেমনই অনলাইন মোডে অর্থাৎ বাড়ি থেকেও করা সম্ভব।

তবে একটি কোম্পানির অধীনে কাজ করতে হলে বা পার্সোনাল প্রজেক্ট কন্ট্রাক্ট নিলে পেশাদারদের মতো কাজ দিতে হবে। আর এর জন্য সৃজনশীলতা এবং ব্যতিক্রমী চিন্তাভাবনা থাকা জরুরি, যাতে বিষয়ভিত্তিক আকর্ষিণীয় পোস্টার, কার্ড ইত্যাদি বানাতে পারেন।

আপনার কাজ যত দৃষ্টি-আকর্ষক হবে ততই তা সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিতে অডিয়েন্স ক্রাউড অর্জনে সহায়তা করতে পারবে। প্রসঙ্গত, গ্রাফিক্স ডিজাইনিংয়ের পাশাপাশি ওয়েব ডিজাইনিংয়ের কাজও করতে পারেন।

মনে রাখবেন, এই সকল ফিল্ডে কাজ ও বেতন কোনটারই অভাব নেই।

ঘরে বসে আয় করার ক্ষেত্রে ওয়ার্ক ফ্রম হোম চাকরি কোথায় পাবেন?

গুগল প্লে স্টোর বা অ্যাপল স্টোরে অনলাইন বা অফলাইন মোড ভিত্তিক চাকরির জন্য আবেদন করার একাধিক বৈধ অ্যাপ পেয়ে যাবেন। যার কয়েকটি নিম্নরূপ –

  • LinkedIn
  • Naukri
  • Indeed
  • TimesJobs
  • Shine
  • Upwork
  • Hirect.
  • Fiverr,
  • Guru,

অবশই পড়ুন এই আর্টিকেল গুলো – 

আমাদের শেষ কথা,,

তাহলে বন্ধুরা, আশা করছি মেয়েদের ঘরে বসে আয় করার উপায় এবং অনলাইন প্রক্রিয়া গুলো আপনাদের কাজে অবশই লাগবে।

আমাদের আজকের আর্টিকেল, ঘরে বসে মহিলাদের আয় করার সহজ উপায় গুলো যদি আপনাদের সত্যি ভালো লেগে থাকে তাহলে আর্টিকেলটি সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার অবশই করবেন। এছাড়া, আর্টিকেলের সাথে জড়িত কোনো ধরণের প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকলে, সেটা কমেন্টের মাধ্যমে অবশই জানাবেন।

মনে রাখবেন, অনলাইনে কাজ করে টাকা ইনকাম করার উপায় বা প্লাটফর্ম এমনিতে প্রচুর রয়েছে। তবে, অনলাইন মাধ্যমে কাজ করার আগে সবসময় সেই কাজ, ওয়েবসাইট, app বা প্লাটফর্ম এর বিষয়ে ভালো করে যাচাই করে নেওয়াটা আপনার দায়িত্ব।

তাই, ইন্টারনেটে নানান আর্টিকেল এবং ইউসার রিভিউ গুলি পড়ে নিয়ে তারপর যেকোনো কাজে জড়িত হওয়ার পরামর্শ আমি দিচ্ছি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error:
Scroll to Top