ফ্যাশন ডিজাইন কি ? ফ্যাশন ডিজাইনার হওয়ার উপায়

ফ্যাশন ডিজাইন কি ? (what is Fashion design in Bangla) ফ্যাশন ডিজাইনার হওয়ার উপায় কি ? ইত্যাদি এই বিষয় গুলো নিয়ে আজকে আমরা বিস্তারিত চর্চা করতে চলেছি। 

ফ্যাশন ডিজাইন কি
ফ্যাশন ডিজাইনার হওয়ার উপায় এবং যোগ্যতা।

বর্তমান সময়ে বিনোদন জগতের রমরমা হুহু করে বেড়ে চলছে, তেমনইভাবে সমানে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ফ্যাশন জগতের পরিধি। 

সব্যসাচীর ব্র্যান্ডেড শাড়ি হোক কিংবা প্যারিসের মিলানের ফ্যাশন উইক – কিংবা বলিউড থেকে টলিউড সেলেব্রেটিরা সকলেই মজে আছেন ফ্যাশন জগতে। 

যে কারণেই ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে ফ্যাশন ডিসাইনিং বা ফ্যাশন ডিসাইন ইন্ডাস্ট্রি। 

যদি, আপনারও লক্ষ্য হয়ে থাকে ফ্যাশন ডিসাইনকে নিজের জীবিকা হিসেবে গড়ে তোলা,

তাহলে আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি একদমই আপনার জন্যেই। 

এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করবো, ফ্যাশন ডিসাইন কি, ফ্যাশন ডিজাইনার হওয়ার উপায়, পড়ার যোগ্যতা ও এই পেশা থেকে কত পরিমাণ বেতন পাওয়া সম্ভব– এই সমস্ত বিষয় সম্পর্কে।       

ফ্যাশন ডিজাইন কি ?

ফ্যাশন ডিজাইন হল ফ্যাশন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও কল্পনাকে পোশাক ও জীবনধারার আনুষাঙ্গিকতার সঙ্গে প্রয়োগ করার একটা শিল্প। 

নানান সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মনোভাবের বৈচিত্র্যতার সাথে সাথে ফ্যাশন ডিজাইন সময় ও জায়গা অনুসারে এগিয়ে চলে। 

এই ফ্যাশন ডিজাইন কেরিয়ার কল্পনাপ্রবণ শিল্পীদের মধ্যে যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। 

কারণ, ভারত এবং বিদেশে এই অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক পেশার দুর্দান্ত সুযোগ নিত্যনতুনভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ফ্যাশন ডিজাইনার হওয়ার প্রয়োজনীয় দক্ষতা:

ফ্যাশন ডিজাইনিং হল এক ধরণের আর্ট ফর্ম। 

তাই, একজন ডিজাইনার হওয়ার জন্য আপনার মধ্যে যেসব গুণাবলী রাখতে হবে, সেগুলো হল –

১. আপনার মধ্যে সৃজনশীল ও শৈল্পিক মনোভাব থাকাটা বাঞ্চনীয়।

২. টোন, শেড ও রঙ একত্রিত করার ক্ষমতার পাশাপাশি ভালো অঙ্কন দক্ষতাও রাখতে হবে।

৩. সব ধরণের কাপড়ের সাথে কাজ করতে জানতে হবে। 

এছাড়াও, আপনাকে অসাধারণ সৃজনশীল ও অনন্য পদ্ধতিতে ফেব্রিক ক্লথের ব্যবহার জানতে হবে।

৪. যেকোনো সফল ফ্যাশন ডিজাইনারদের মতো, আপনাকেও দুর্দান্ত ভিজ্যুয়াল ইমাজিনেশানের অধিকারী হতে হবে। 

যাতে, তাদের মতো আপনিও আপনার চিন্তাভাবনাগুলোকে সুন্দর পোশাকে রূপান্তর করার সময় 3D ডিজাইনে প্রকাশ করতে সক্ষম হন।

৫. ফ্যাশন ডিজাইনারদের ফ্যাশন মার্কেটের প্রয়োজনীয়তা ও দর সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।

৬. ফ্যাশন ডিজাইনিং ইন্ডাস্ট্রি ও নতুন ট্রেন্ড-সম্পর্কিত বই, ম্যাগাজিন ও জার্নালের সাহায্যে সবসময় নতুন জিনিস শিখে সুখে যেতে হবে।

৭. আপনাকে অবশ্যই সাধারণ শিল্পে আগ্রহী থাকতে হবে। 

আর্ট গ্যালারী পরিদর্শন থেকে শুরু সমস্ত ধরণের শিল্পীদের সাথে আলাপচারিতা করতে হবে।

৮. একজন ডিজাইনারের প্রাথমিক সেলাই করার জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা থাকতেই হবে। 

বিভিন্ন মানের কাপড়ের স্তরের মধ্যেকার পার্থক্য করতে সক্ষম হওয়া উচিত।

ফ্যাশন ডিজাইনার হওয়ার দক্ষতার সেট

হিউমান স্কিলস –

  • সৃজনশীলতা
  • শৈল্পিক মনোভাব
  • সহযোগী মনোভাব
  • কম্যুনিকেশন ক্ষমতা
  • ডিটেইল-ওরিয়েন্টেশন

হার্ড স্কিলস –

  • কালার থিওরি
  • টেক্সটাইল ট্রেনিং
  • ডিজাইন সফটওয়্যার
  • ক্লথ কনস্ট্রাকশন টেকনিক
  • কম্পিউটারের ব্যবহারিক জ্ঞান

ফ্যাশন ডিজাইনার হওয়ার উপায়:

ফ্যাশন ডিজাইন ডিগ্রী অর্জন করলে, তা ফ্যাশন ডিজাইনারদের তাদের কর্মজীবন শুরু করতে সাহায্য করতে পারে। 

কিন্তু, শুধু ডিগ্রিই এই পেশায় সাফল্য আনতে পারে না। 

যে কারণে, ডিজাইনারদের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে প্রবেশ করতে একটা পেশাদারি পোর্টফোলিও, কাজের অভিজ্ঞতা ও একটা পেশাদার নেটওয়ার্ক-এর দরকার পড়ে। 

এক্ষেত্রে, পেশাদারি সাফল্য সম্পূর্ণভাবে দক্ষতার উপরই নির্ভর করে। 

তাই, ডিজাইনারদের অবশ্যই তাদের ব্র্যান্ডের পরিচয়, নান্দনিকতা ও ইন্ডাস্ট্রির নিশ সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে হবে। 

ডিগ্রী অর্জনের পর বেশিরভাগ ডিজাইনাররাই ফ্যাশন ক্রেতা, স্টাইলিস্ট, ও প্রতিষ্ঠিত ডিজাইনারদের সহকারী হিসেবে কাজ করে থাকেন। 

এই কাজগুলো তাদের দক্ষতা বাড়াতে ও নেটওয়ার্ক তৈরি করতে সাহায্য করে। 

চলুন, এইবার জানা যাক, একজন সফল ডিজাইনার হওয়ার উপায় সম্পর্কে –

১. ফ্যাশন ডিসাইন ডিগ্রী প্রোগ্রাম সম্পূর্ণ করুন:

যেকোনো ফ্যাশন ডিসাইনারই আর্ট এন্ড ডিসাইন ব্যাচেলর ডিগ্রি সম্পূর্ণ করে থাকেন। 

এই কোর্সের মধ্যে তারা সাধারণত ফ্যাশন, কালার থিওরি ও ফেব্রিকের সম্পর্কে শেখেন। 

এছাড়াও, তারা কম্পিউটার-এডেড ডিসাইন (CAD) সফটওয়্যারও শিখে থাকেন। 

এই ধরণের কোর্সগুলোতে মূলত স্টুডেন্টদের প্রজেক্ট-ভিত্তিক এসাইনমেন্ট দেওয়া হয়ে থাকে। 

এই প্রজেক্টগুলো তাদের পোর্টফোলিও তৈরী করার পাশাপাশি দক্ষতাগুলোও বাড়াতে সাহায্য করে।

আর, এই প্রোগ্রামগুলো থেকে আপনি ফ্যাশন বিসনেস, মার্কেটিং ও মার্চেন্ডাইসিং সম্বন্ধেও শিখতে পারবেন। 

এই পড়াশোনাগুলো আপনাকে স্টাইল সম্পর্কে কাস্টমারদের চাহিদা বুঝতে, নিজের লাইন লঞ্চ করতে কিংবা এর থেকে অর্থ রোজগার করতেও শেখায়।

২. অভিজ্ঞতা অর্জন করুন:

বিভিন্ন ফ্যাশন ডিজানিং কোর্সগুলো তাদের স্টুডেন্টদের কেরিয়ার-বিল্ডিং-এর জন্যে মূল্যবান ট্রেনিং দিয়ে থাকে। 

যাতে, তারা ইন্ডাস্ট্রির ব্যাপারে হ্যান্ডস-ওন অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে। 

এই ফ্যাশন ইনস্টিটিউটগুলো ফ্যাশন ডিসাইনারদের বিভিন্ন ইন্টার্নশিপের সুযোগ করে দেয়। 

অনেক কলেজ নানান বিখ্যাত ডিসাইনারদের কোম্পানিতে তাদের ছাত্র-ছাত্রীদের ইন্টার্ন হিসেবে নিয়োগ করে দেয়। 

এক্ষেত্রে, স্টুডেন্টগুলো সেইসব বিখ্যাত ডিসাইনরের অধীনে ফ্যাশনের কাজ শিখতে থাকে। 

ইন্টার্নশিপের থেকে ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে সম্যক ধারণা তৈরী হয়ে যায়। 

এই ইন্টার্নশীপ প্রোগ্রামগুলো স্টুডেন্টদের বিভিন্ন ফ্যাশন টেকনিক ও এস্থেটিক্স শিখতে ব্যাপকভাবে সাহায্য করে থাকে।   

৩. ইন্ডাস্ট্রিতে নেটওয়ার্ক তৈরী করুন:

শৈল্পিক দক্ষতা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি নেটওয়ার্ক তৈরী করাও আপনাকে একজন সফল ডিজাইনার হয়ে উঠতে দারুণভাবে সাহায্য করে।

এর মাধ্যমে তারা পেশাদারি সুযোগ, ক্লায়েন্ট জোগাড় করার কৌশল ও শক্তিশালী কেরিয়ার গঠন করার ট্রেনিংও লাভ করে। 

তাই, একজন ডিসাইনারকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নেটওয়ার্ক বা পরিচিতি বৃদ্ধি করার কাজ শুরু করে দেওয়া উচিত। 

এমনকি, ফ্যাশন ট্রেনিং শুরু করার আগেই নেটওয়ার্কিং শুরু করে দেওয়াটা বেশি প্রয়োজনীয়। 

বিভিন্ন নেটওয়ার্কিং ইভেন্ট ফ্যাশন ডিসাইনারদের নানান পেশাদার ফ্যাশন ব্যক্তিত্ত্বের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে ব্যাপকভাবে সাহায্য করে থাকে।  

৪. ডিসাইন পোর্টফোলিও বানান:

সফলভাবে নিজেকে ফ্যাশন ডিসাইনার হিসেবে গড়ে তুলতে হলে একটা মজবুত পোর্টফোলিও থাকাটা একান্তই জরুরি। 

অনেক ফ্যাশন ডিসাইনারই ফ্যাশন প্রোগ্রাম করার আগেই নিজেদের পোর্টফোলিও বানানোর দিকে নজর দেন। 

স্টুডেন্টরা তাদের দক্ষতা ও ডিসাইন সম্পর্কিত অভিজ্ঞতাকে বাড়িয়ে তাদের পোর্টফোলিওগুলোকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে পারে। 

ডিজাইনাররা তাদের পোর্টফোলিওতে রেডি-টু-ওয়্যার লুক কিংবা কাস্টম হাই ফ্যাশন লুকসগুলো যুক্ত করে, তার বহুমুখিতা দেখানোর পাশাপাশি তাদের প্রযুক্তিগত দক্ষতার উপরও নজর দিয়ে থাকে। 

পুরো ফ্যাশন কেরিয়ার জুড়েই ডিজাইনাররা তাদের পোর্টফোলিও আপডেট করে থাকেন। 

ইন্টার্নশিপ, এন্ট্রি-লেভেল জব বা স্টাইলিস্ট জীবিকা- সবই ডিজাইনারদের তাদের পোর্টফোলিওকে আরও মজবুত করতে সাহায্য করে। 

৫. ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে আপ-টু-ডেট থাকুন:

ফ্যাশন ডিজাইনারদের ট্রেন্ড ও ফ্যাশনের খবরের বিষয়ে সবসময়েই আপডেটেড থাকতে হয়। 

যেহেতু, ইন্ডাস্ট্রিতে পরিবর্তন খুবই স্বাভাবিক, তাই ডিজাইনারদের অবশ্যই ফ্যাশন সাইকেল অনুসরণ করেই চলতে হয়। 

বিভিন্ন সূত্র ফ্যাশন ডিজাইনারদের আপডেটেড থাকতে সাহায্য করে। 

প্রফেশনাল এসোসিয়েশন, ফ্যাশন ম্যাগাজিন, ও ফ্যাশন শোগুলো আপনাকে নানান ইন্ডাস্ট্রি ইনফরমেশন ও ট্রেন্ডস সম্পর্কে ধারণা দিতে পারে। 

বিভিন্ন রেড কার্পেট ইভেন্ট ও ফ্যাশন ডিজাইনারদের অনুসরণ করা, ডিজাইনারদেরকে ট্রেন্ডের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে সাহায্য করে। 

এই অনুপ্রেরণাগুলো ডিজাইনারদের তাদের আসন্ন প্রজেক্টগুলোতে নতুন স্টাইল যুক্ত করতে সাহায্য করে। 

ফ্যাশন ডিজাইন পড়ার যোগ্যতা:

ফ্যাশন ডিজাইনের যোগ্যতার ক্রাইটেরিয়া (ইউজি ও পিজি)

অন্যান্য কোর্সের মতো ফ্যাশন ডিজাইন কোর্সের জন্যেও প্রায় একই রকমের যোগ্যতার প্রয়োজনীয়তা থাকে। 

নিম্নলিখিত যোগ্যতাগুলো যদি আপনার সাথে মেলে, তবেই আপনি ভারতের সবচেয়ে বিশিষ্ট ইনস্টিটিউট ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি হতে পারবেন। 

আন্ডার গ্রাজুয়েশন ও গ্রাজুয়েশন প্রোগ্রামগুলোর জন্য যোগ্যতার ক্রাইটেরিয়াগুলো নিচে আলোচনা করা হল।

আন্ডার গ্রাজুয়েট কোর্স – যোগ্যতার ক্রাইটেরিয়া –

– প্রার্থীদের ১০+২ শ্রেণীর পাঠ শেষ করার সাথে সাথে ফ্যাশন ডিজাইন কোর্সের জন্যে আবেদন করতে হবে।

– অনেক কলেজ ও ইনস্টিটিউট রয়েছে, যেখান থেকে আপনি আপনার পছন্দমতো বেছে নিতে পারবেন। 

– আন্ডার গ্রাজুয়েশন লেভেলে ফ্যাশন ডিজাইনিং কোর্সে ভর্তির হওয়ার জন্য স্টুডেন্টদের অবশ্যই ভারতের যেকোনো স্বীকৃত বোর্ড থেকে তাদের ১২তম শ্রেণীর পরীক্ষায়  কম করে ৫০% নম্বর নিয়ে পাস করতে হবে।

– স্টুডেন্টদের নানান প্রবেশিকা বা এন্ট্রান্স পরীক্ষা, যথা- UCEED, NID, DAT ও NIFT-এর পরীক্ষাগুলোতে পাশ করতে হবে।

পোস্ট-গ্রাজুয়েশন কোর্স- যোগ্যতার ক্রাইটেরিয়া –

গ্রাজুয়েশন হয়ে যাওয়ার পর, যারা ফ্যাশন ডিজাইনের শিক্ষা নিতে আগ্রহী, তারা বিভিন্ন কলেজ বা ইনস্টিটিউটে আবেদন করতে পারেন। 

PG যোগ্যতার জন্য যে যে ক্রাইটেরিয়া রয়েছে, তা নিচে আলোচনা করা হল –

১. ফ্যাশন ডিজাইনিং-এ পিজি কোর্সের জন্য আবেদনকারী স্টুডেন্টদের অবশ্যই ভারতের কোনো স্বীকৃত কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম পক্ষে ৫০% নম্বর রেখেও সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে পাশ করতে হবে।

২. তাদের NID DAT, IIAD, CEED ও আরও অনেকের মতো এন্ট্রান্স পরীক্ষায় পাশ করতে হবে।

ফ্যাশন ডিজাইনারের বেতন কত/ইনকাম:

এখনকার হিসেবে ভারতে একজন ফ্যাশন ডিজাইনারের গড় মাসিক বেতন ১৮,৯৪৫ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। 

মূলত, ফ্রেশাররা ১৫,০০০ টাকা থেকে শুরু করে ব্র্যান্ডের উপর ভিত্তি করে ৩০,০০০ টাকা পর্যন্ত মাসিকভাবে আয় করতে পারে। 

একবার ফ্যাশন ডিসাইনার হিসেবে পেশাদারি অভিজ্ঞতা অর্জন করলে, আপনার বেতন প্রতি মাসে ২ লাখ টাকা পর্যন্তও হতে পারে। 

ফ্যাশন ডিজাইনারদের চাকরির সুযোগ ভারত থেকে শুরু করে সারা বিশ্বজুড়েই রয়েছে। 

তাই, ফ্যাশন দুনিয়ার সবথেকে সেরা রাজধানীর তালিকায় রয়েছে প্যারিস, লন্ডন ও নিউইয়র্ক। 

ফ্যাশন জগতে টিকে থাকতে গেলে, আপনাকে ব্যক্তিত্ত্ব ধরে রেখে কাজ করে যেতে হবে। 

বিশেষত, যারা ট্যালেন্ট ও উজ্জ্বল মনের অধিকারী, তারা তাদের প্রত্যাশার বাইরে গিয়েও এই ইন্ডাস্ট্রিতে প্রশংসা ও সাফল্য অর্জন করে থাকে। 

ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি ভারতের মতো দেশে ব্যাপক উন্নতিলাভ করে চলছে। 

ফ্যাশন ডিজাইনারদের বেতন প্রভাবিত করার ফ্যাক্টরগুলো হল –

একজন ফ্যাশন ডিসাইনারের বেতন নির্ধারণ করে এমন কারণগুলো খুব অস্পষ্ট হলেও, তার মধ্যে প্রধান কয়েকটি নিয়ে নিচে আলোচনা করা হল:

– শিক্ষাগত যোগ্যতা

– পেশার ভূমিকার চাহিদা

– অবস্থান (রাজ্য ও শহর)

– ফ্যাশন জগতে কাজের অভিজ্ঞতা 

– ফ্যাশন জগতে ডিসাইনারের মূল দক্ষতা

– ভারতে ফ্যাশন ডিজাইনারের বিভিন্ন ভূমিকার জন্য বিভিন্ন বেতন

ফ্যাশন ডিজাইনিং-এর পেশার ক্ষেত্রে, বেতন সরাসরি আপনার ভূমিকার উপর নির্ভর করে নানান রকমের হতে পারে। 

যথা- একজন কস্টিউম ডিজাইনারের বার্ষিক আয় ১,৫০,০০০ টাকা থেকে শুরু করে ৮,৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। 

আপনার ভালো কম্যুনিকেশন দক্ষতা থাকলে, আপনি যদি একজন ফ্যাশন কলামিস্ট হন, তাহলে আপনি ১,২৫,০০০ টাকা থেকে ৭,২৫,০০০ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারবেন। 

আপনি ফ্যাশন শোতে কিংবা ফিল্মের কস্টিউম ডিজাইনার হলে ৯,৮০,০০০ টাকা পর্যন্ত রোজগার করতে সক্ষম হবেন।

ভারতের মুম্বাই, নিউ দিল্লি ও ব্যাঙ্গালুরুতে ফ্যাশন ডিজাইনারদের সবথেকে বেশি বেতন দেওয়া হয়ে থাকে। 

মুম্বাই হল ফিল্ম ও ফ্যাশন শোগুলোর প্রধান প্রাণকেন্দ্র। 

সাধারণত, একজন ফ্যাশন ডিজাইনারের বার্ষিক বেতন ২,০০,০০০ টাকা থেকে ১৫,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। 

তবে, তুলনামূলকভাবে চেন্নাই ও হায়দ্রাবাদে ফ্যাশন ডিজাইনারদের কম বেতন দেওয়া হয়ে থাকে। 

কিন্তু, রাজ্য স্তরে তুলনা করলে দেখবেন যে, একজন ফ্যাশন ডিজাইনারের বেতন দিল্লিতেই সবথেকে বেশি, তারপরে আসে মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু ও অন্ধ্রপ্রদেশ।

ভারতের সেরা কয়েকটি ফ্যাশন ডিজাইনিং কলেজ বা ইনস্টিটিউট:

ভারতের কিছু সেরা ফ্যাশন ডিজাইনিং কলেজ রয়েছে, যেগুলো আপনাকে ফ্যাশন ডিজাইনিং-এর বিষয়ে সম্যক ধারণা দিতে সক্ষম। 

চলুন, তাহলে দেখে নিন ভারতের কযেকটি ফ্যাশন ডিসাইন ইনস্টিটিউটের তালিকাটি-

১. ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ফ্যাশন টেকনোলজি (NIFT), দিল্লি

২. ভোগ ইনস্টিটিউট অফ আর্ট অ্যান্ড ডিজাইন (VIFT), ব্যাঙ্গালোর

৩. ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ডিজাইন (NID), আহমেদাবাদ

৪. সিম্বায়োসিস ইনস্টিটিউট অফ ডিজাইন (SID), পুনে

৫. আর্মি ইনস্টিটিউট অফ ফ্যাশন অ্যান্ড ডিজাইন, ব্যাঙ্গালোর

৬. অ্যামিটি ইনস্টিটিউট অফ ফ্যাশন টেকনোলজি, নয়ডা

৭. পার্ল একাডেমি, দিল্লি

৮. ইন্টারন্যাশনাল কলেজ অফ ফ্যাশন (ICF), দিল্লি

৯. ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ফ্যাশন ডিজাইন, পুনে

১০. মাইরের এমআইটি ইনস্টিটিউট অফ ডিজাইন, পুনে

১১. আর্চ একাডেমি অফ ডিজাইন, জয়পুর

১২. ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অফ ডিজাইন, হরিয়ানা

১৩. ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ফ্যাশন টেকনোলজি (NIFT), মুম্বাই

১৪. ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ফ্যাশন ডিজাইন (IIFD), নাভি মুম্বাই

১৫. টেকনিয়া ইনস্টিটিউট অফ আর্ট অ্যান্ড ডিজাইন, নতুন দিল্লি

আমাদের শেষ কথা,,

আমাদের আজকের ফ্যাশন ডিসাইন নিয়ে লেখা আর্টিকেলটি এখানেই শেষ হল।

আশা করছি, ফ্যাশন ডিজাইন কি (what is Fashion design in Bangla), বিষয়টি আপনারা ভালো করে বুঝতে পেরেছেন। 

লেখাটি পছন্দ হলে অবশ্যই তা কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন।

 

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top