ফোনে কথা বলার সময় নিজের গলার ভয়েস পাল্টিয়ে পাশের ব্যক্তিকে সারপ্রাইজ করে দিতে চান? তাহলে আপনার প্রয়োজন হবে একটি সেরা কল ভয়েস চেঞ্জার অ্যাপ এর। এই ধরণের সফটওয়্যার অ্যাপস গুলি গুগল প্লে স্টোরে গিয়ে সম্পূর্ণ ফ্রীতে ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে পারবেন।
এন্ড্রয়েড মোবাইলের জন্য এমনিতে প্রচুর অ্যাপস গুলি রয়েছে। কিছু অ্যাপস ব্যবহার করে নিজের ভয়েস ক্লিয়ার করা যাবে আবার কিছু কিছু অ্যাপস ব্যবহার করে ফোন কল রেকর্ড করা যায়।
বলতে গেলে আপনার প্রায় যেকোনো সমস্যার সমাধান করতে একটি এন্ড্রয়েড মোবাইল অ্যাপ অবশই পাবেন। ঠিক সেভাবেই, এন্ড্রয়েড মোবাইলের জন্য থাকা সেরা কল ভয়েস চেঞ্জার সফটওয়্যার গুলি ব্যবহার করে ফোনে কথা বলার সময় নিজের গলার আওয়াজ পাল্টিয়ে কথা বলা যাবে।
Android voice-changing apps গুলি ব্যবহার করে কথা বলার কারণ এমনিতে অনেক থাকতে পারে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মজা/ধেমালি করার উদ্দেশ্যে এই কল ভয়েস চেঞ্জ করার অ্যাপস গুলি ব্যবহার করা হয়।
অবশই পড়ুন: মিউজিক সহ গান গাওয়ার এবং রেকর্ড করার অ্যাপস
সেরা ৭টি কল ভয়েস চেঞ্জার সফটওয়্যার অ্যাপস: আওয়াজ পাল্টিয়ে কথা
গলার ভয়েস পাল্টিয়ে কথা বলার জন্য থাকা এই প্রতিটি মোবাইল অ্যাপস গুলি আপনারা Google Play Store থেকে সম্পূর্ণ ফ্রীতে ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে পারবেন। তাহলে চলুন, নিচে সরাসরি android মোবাইলের জন্য থাকা best voice changer apps গুলির বিষয়ে জেনেনেই।
১. Prank Call:
রেটিং: 4.4/5
ডাউনলোড: 10L+
স্মার্টফোনে অ্যাপের সাহায্যে প্র্যাঙ্ক কল করার সেরা একটা মাধ্যম হল এই অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশনটি। এর মাধ্যমে আপনি সহজেই এর প্রি-রেকর্ডেড প্র্যাঙ্ক ভয়েস রেকর্ডিংগুলো Wi-Fi কলের সাহায্যে ফ্রিতেই আপনার ফোনের কন্ট্যাক্টকে কল করতে পারেন।
এই সফটওয়্যার আপনাকে ইন্টারন্যাশনাল কভারেজও দেয়। যাতে, আপনি পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে থাকা মানুষের সাথে কল করে জোক করতে পারেন। এমনকি, Prank Call থেকে আপনি মোবাইল বা ল্যান্ডলাইন নম্বরে ফোন করেও মজা করতে পারবেন।
ফিচার:
✔ নতুন প্র্যাঙ্ক অ্যাড হতেই থাকে।
✔ “My Pranks”-এ কল রেকর্ডিংস সেভ হয়।
✔ ১০ টা প্রাক্টিক্যাল জোক ও প্র্যাঙ্ক কলের ফিচার।
সুবিধা:
⇾ অটোম্যাটিক প্র্যাঙ্ক কলের সুবিধা।
⇾ সাকসেসফুল প্র্যাঙ্ক কলগুলো শেয়ার করা যায়।
⇾ প্রফেশনাল ভয়েস আর্টিস্টদের রেকর্ডিং আছে।
অসুবিধা:
⇾ প্রচুর অ্যাড আসে।
২. Voice Changer:
রেটিং: 4.4/5
ডাউনলোড: 1Cr+
Youtube-এ ভয়েস চেঞ্জ করে ভিডিও আপলোড করা থেকে শুরু করে গেমিং স্ট্রিমে ভয়েস ওভার দেওয়ার জন্যে এই কল ভয়েস চেঞ্জার সফটওয়্যারটি যথেষ্ট উপকারী। এই স্মার্টফোন অ্যাপ্লিকেশনে প্রচুর ফানি ভয়েস আছে, যেগুলো ব্যবহার করে আপনি ইচ্ছেমতো প্র্যাঙ্ক কল বা ভয়েস কল রেকর্ড করে বন্ধুদের সাথে প্র্যাঙ্ক করতে পারবেন।
এমনকি, এখানে রেকর্ড করা ফানি ভয়েস এফেক্টসগুলো সহজেই সোশ্যাল মিডিয়াতেও শেয়ার করা যায়।
ফিচার:
✔ ভিডিও ডাব করা যায়।
✔ আলাদা আম্বিয়েন্ট সাউন্ড আছে।
✔ ভয়েস এফেক্ট কাস্টোমাইজেশন।
সুবিধা:
⇾ অডিও কোয়ালিটি খুবই ভালো হয়।
⇾ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়।
⇾ ভয়েস পিচ, ক্ল্যারিটি ও ভলিউম চেঞ্জ করা যায়।
অসুবিধা:
⇾ বেশিরভাগ ভয়েস অ্যাভেটার ও এফেক্টস কিনতে হয়।
৩. Baviux – Voice changer:
রেটিং: 4.4/5
ডাউনলোড: 10Cr+
এটি হল এমন একটা মোবাইল ভয়েস চেঞ্জার সফটওয়্যার, যেখানে আপনি প্রায় ৫০-এরও বেশি অডিও এফেক্টস পেয়ে যাবেন।
এখানে আপনি নিজের ভয়েস রেকর্ড করে সাথে-সাথে বিভিন্ন এফেক্ট ও ভয়েস অ্যাড করে নিতে পারেন। এছাড়াও, আপনি আপনার আগে থেকে রেকর্ড করা অডিও এই অ্যাপে এডিট করে বিভিন্ন এফেক্ট ব্যবহার করতেও পারবেন।
এমনকি, এখানে টেক্সটকেও ভয়েস রেকর্ডিংয়ে কনভার্ট করা যায়। আপনার মজার অডিও রেকর্ডিংগুলো বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মেও শেয়ার করা যায়। কল করার সময় ভয়েস চেঞ্জ করার ক্ষেত্রে এই অ্যাপ দারুন কার্যকর প্রমাণিত হবে।
ফিচার:
✔ টেক্সট থেকে ভয়েস ক্রিয়েট করা যায়।
✔ প্রি-রেকর্ডেড অডিও ইম্পোর্ট করা যায়।
✔ অডিও কোয়ালিটি অ্যাডজাস্ট করা যায়।
সুবিধা:
⇾ ৫০-এরও বেশি অডিও এফেক্টস রয়েছে।
⇾ যেকোনো সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা যায়।
⇾ রিংটোন বা নোটিফিকেশন সাউন্ড হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
অসুবিধা:
⇾ ইন-অ্যাপ পার্চেজ ও অ্যাড আছে।
৪. Voicer Celebrity:
রেটিং: 4.3/5
ডাউনলোড: 1Cr+
কোনো সেলেব্রিটির ভয়েস নকল করে পরিচিত লোকদের বোকা বানাতে চান? তাহলে, এই ভয়েস কল চেঞ্জার অ্যাপটি সম্পূর্ণভাবেই আপনার জন্যেই তৈরী করা হয়েছে। এখানে আপনি ইন্টারনাল পপস্টার ও সেলেব্রিটির সাউন্ড নকল করতে পারবেন।
এমনকি, এখানে ব্যাকওয়ার্ড মোশনে নিজের অডিও রেকর্ড করার ফিচারও রয়েছে। তাছাড়াও, এখানে আপনি খুশিমতো ভয়েস প্যারামিটারগুলো অ্যাডজাস্টও করে নিতে পারেন।
এখানে ওবামা ও ট্র্যাম্পের ভয়েস চেঞ্জারগুলো খুবই মজাদার।
ফিচার:
✔ ভয়েস প্যারামিটার রয়েছে।
✔ সেলেব্রিটি ভিডিও বানানো যায়।
✔ ইনস্টাগ্রামে স্টোরি হিসেবে শেয়ার করা যায়।
সুবিধা:
⇾ অটোটিউনের ব্যবস্থা আছে।
⇾ সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ারের অপশন আছে।
⇾ মজার সেলেব্রিটি প্যারোডি ভিডিও বানানোর সুবিধা।
অসুবিধা:
⇾ ইয়ার্লি সাবস্ক্রিপশন নিতে হয়।
৫. MagicCall:
রেটিং: 3.6/5
ডাউনলোড: 1Cr+
আমাদের এই লিস্টের সবথেকে বেস্ট কল ভয়েস চেঞ্জার অ্যাপ হল এই MagicCall। এই স্মার্টফোন অ্যাপ্লিকেশনটির সাহায্যে আপনি কল চলাকালীন যেকোনো ভয়েসই পাল্টে নিতে পারবেন।
এই রিয়েলটাইম ভয়েস চেঞ্জ করার সফটওয়্যারটিতে কলের সময় বিভিন্ন ধরণের ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ডও ব্যবহার করা যায়। এখানে আপনি কার্টুন, মেইল, ফিমেইল ও আরও নানান ফানি আওয়াজে প্র্যাঙ্ক কল করতে পারবেন।
ফিচার:
✔ ব্যাকগ্রাউন্ড এফেক্ট রয়েছে।
✔ ‘রেফার এন্ড আর্ন’ ফিচার আছে।
✔ ‘ড্রিম গার্ল’ ভয়েস ফিল্টার ফিচার রয়েছে।
সুবিধা:
⇾ ডেমো কলের সুবিধা।
⇾ অ্যাপ থেকে সরাসরি কল করা যায়।
⇾ অ্যাপে ভয়েস টেস্টের সুবিধা আছে।
অসুবিধা:
⇾ পেইড সাবস্ক্রিপশন আছে।
৬. Funcalls:
রেটিং: 3.0/5
ডাউনলোড: 10L+
Funcalls হল এমন একটা ভয়েস চেঞ্জ করার অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ, যেটা থেকে পৃথিবীর ১৫০টা দেশের যেকোনো মানুষকে প্র্যাঙ্ক করা সম্ভব। এখানে আপনি প্র্যাঙ্ক কলাগুলো রেকর্ড করে বন্ধুদের সাথে শেয়ারও করতে পারবেন।
এই মজার স্মার্টফোন অ্যাপ্লিকেশনটিতে লাইভ কলে নিজের খুশিমতো যেকোনো সাউন্ড অ্যাড করা যায়। নিজের প্র্যাঙ্ক কলগুলো রেকর্ড করে সোশ্যাল মিডিয়াতেও দেওয়া যায়।
ফিচার:
✔ ডেমো কল করা যায়।
✔ ফানি ভয়েস রেকর্ডের ফিচার।
✔ লাইভ কলে ভয়েস পাল্টানো যায়।
সুবিধা:
⇾ বিভিন্ন ধরণের ভয়েস ফিল্টার আছে।
⇾ সস্তায় ইন্টারন্যাশনাল কল করা যায়।
⇾ স্মার্টফোন ও ট্যাবলেট দুটোতেই কাজ করে।
অসুবিধা:
⇾ সাবস্ক্রিপশন খরচ অনেকটাই বেশি।
৭. Boomrang:
রেটিং: 3.4/5
ডাউনলোড: 1L+
আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স-এর মাধ্যমে কাউকে প্র্যাঙ্ক কল করার সেরা অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ হল এই Boomrang। এই স্মার্টফোন অ্যাপ্লিকেশনটিতে আপনি রিয়েলটাইমে আপনার পরিচিত লোকদের সাথে মজা করতে পারবেন।
এখানে আপনি ইচ্ছেমতো যেকোনো সিচুয়েশন সিলেক্ট করে কাউকে কলও দিতে পারেন। এছাড়াও, আপনার প্র্যাঙ্ক কলগুলো এখানে নিজে থেকেই রেকর্ড হয়। তাই, আপনি ইচ্ছে হলে সেগুলো বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে শেয়ারও করতে পারবেন।
ফিচার:
✔ প্র্যাঙ্কগুলো প্রিভিউ করা যায়।
✔ কল সিস্টেমের মাধ্যমে প্র্যাঙ্ক পাঠানো যায়।
✔ যেকোনো দুটো নাম্বার দিয়ে ব্লাইন্ড ডেট সেট করা যায়।
সুবিধা:
⇾ প্র্যাঙ্ক কলের রেকর্ডিং পাওয়া যায়।
⇾ অ্যাড দেখে ক্রেডিট আর্ন করা যায়।
⇾ অনেকগুলো প্রি-প্ল্যান্ড প্র্যাঙ্কস রয়েছে।
অসুবিধা:
⇾ একসাথে প্রচুর অ্যাড দেখতে হয়।
পরিশেষে:
এই সবকটি কল ভয়েস চেঞ্জার অ্যাপ গুলোই আপনার গুগল প্লে স্টোরে গিয়ে ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে পারেন। এই অ্যাপগুলো শুধুমাত্র বিনোদনের জন্যেই ব্যবহার করা উচিত। এই ভয়েস চেঞ্জের বা ফানি প্র্যাঙ্কের বিষয়গুলো কখনোই যেন কারোর ক্ষতির না কারণ হয়ে দাঁড়ায়, সেটা আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে। তাই, আমাদের উচিত ঠান্ডা মাথায় এবং কেবলমাত্র মজার জন্যেই এই ধরণের অ্যাপগুলোর ব্যবহার করা।
অবশই পড়ুন:
- মোবাইলে ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড পরিবর্তন করুন
- এন্ড্রয়েড মোবাইল থেকে ভিডিও কল করার ৭ টি ফ্রি এপস
- সেরা ৫টি রিংটোন বানানোর সফটওয়্যার
- অনলাইনে বই পড়ার সেরা ৬টি অ্যাপস
- ছবিতে পোশাক চেঞ্জ করার এন্ড্রয়েড সফটওয়্যার