একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করার মাধ্যমে অনলাইন জগতে নিজের ব্যবসাটিকে নিয়ে যাওয়া ছাড়াও অন্যান্য প্রচুর লাভ এবং সুবিধা গুলি আপনার হতে পারে। কেননা, এর দ্বারা প্রচুর নতুন নতুন ব্যবসার সুযোগ গুলিকে আপনি অবশই আনলক করে নিতে পারবেন।
২০২৪ সালে যদি আপনি নতুন করে একটি ই-কমার্স সাইট তৈরি করে নিজের অনলাইন ব্যবসা শুরু করার কথা চিন্তা করছেন বা নিজের পুরোনো ব্যবসাটিকেই ই-কমার্স এর দ্বারা অনলাইনে নিয়ে যেতে চাইছেন, তাহলে আপনার এই সিদ্ধান্ত আপনার জন্য সত্যি একটি গেম চেঞ্জার সিদ্ধান্ত হিসেবে প্রমাণিত হতে পারে।
এবার, আপনিও যদি কোনো ধরণের কোডিং ছাড়া নিজেই নিজের জন্য একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইটটি বানিয়ে নিতে চাইছেন, তাহলে আমাদের আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ ভালো করে পড়ুন।
আমাদের আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার পর আপনি বুঝতে পারবেন যে কিভাবে অনেক কম টাকা খরচ করে একটি শক্তিশালী এবং ইউজার-ফ্রেইন্ডলী eCommerce website বানানো যাবে।
সূচিপত্র:
- একটি ই-কমার্স সাইট আসলে কি?
- কেন তৈরি করবেন একটি ইকমার্স ওয়েবসাইট?
- একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট কিভাবে তৈরি করতে হবে?
- FAQ’s: How To Build e-Commerce Website?
একটি ই-কমার্স সাইট আসলে কি?
সহজ ভাবে বলতে হলে, e-commerce site-হলো এমন এক ধরণের ওয়েবসাইট যেখানে গিয়ে আমার এবং আপনার মতো সাধারণ লোকেরা নানান পণ্য এবং পরিষেবা গুলি কিনতে বা বিক্রি করতে পারি।
যেকোনো পণ্য বা পরিষেবা গুলি ক্রয়-বিক্রয় করার আগে এই ই-কমার্স সাইট গুলি তাদের ইউজারদের, ঘরে বসেই নানান পণ্য বা পরিষেবা গুলি ব্রাউজ করা, দামের তুলনা করা, ইউজার রিভিউ দেখা, এবং পণ্যটি কেনার জন্যে নানান পেমেন্ট অপসন গুলি প্রদান করার মতো সুবিধাগুলি দিয়ে থাকে।
eCommerce website-গুলিও একটি সাধারণ দোকানের মতোই, যদিও একটি সাধারণ দোকানের তুলনায় এদের প্রচুর সুবিধা এবং বৈশিষ্টগুলি রয়েছে।
যেমন, ই-কমার্স সাইট গুলি যেকোনো পণ্য সরাসরি আমাদের ঘরে হোম ডেলিভারি করে, পেমেন্ট করার জন্য ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, নেটব্যাংকিং, ক্যাশ অন ডেলিভারির মতো অপসন গুলি দেওয়া হয়। আজকাল তো বেশিরভাগ online e-commerce site গুলির থেকে EMI-তেওঁ জিনিস কেনা যায়।
এছাড়া, আপনার ঘরের পাশে থাকা দোকানটি সারাদিন বা ২৪ ঘন্টা খোলা থাকেনা, তবে একটি ই-কমার্স সাইট থেকে যেকোনো সময় যেকোনো জায়গার থেকে শপিং করা সম্ভব। বর্তমান সময়ের কিছু জনপ্রিয় ই-কমার্স সাইট গুলি হলো – Amazon, eBay, Flipkart, Bikroy.com, Daraz.com.bd, Myntra.com, এবং আরো আছে।
কেন তৈরি করবেন একটি ইকমার্স ওয়েবসাইট?
একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট কিভাবে তৈরি করতে হবে, এই বিষয়ে জানার আগে চলুন সবচেয়ে আগে ই-কমার্স সাইটের সুবিধা এবং এর থেকে কি কি লাভ হবে সেই বিষয়ে জেনেনেই।
- একটি অনলাইন ই-কমার্স স্টোর তৈরি করে সারা বিশ্বের গ্রাহকদের কাছে পণ্য বা পরিষেবা গুলি বিক্রি করতে পারবেন।
- একটি ফিজিক্যাল দোকানের বিপরীতে, আপনার অনলাইন দোকান দিন বা রাত যেকোনো সময় খোলা থাকে।
- অনলাইন ই-কমার্স দোকান চালানো একটি ফিজিক্যাল দোকানের তুলনায় প্রচুর সস্তা এবং সুবিধাজনক হতে পারে।
- গ্রাহকেরা নিজের মোবাইল বা ল্যাপটপের দ্বারা যেকোনো জায়গার থেকে শপিং করতে পারেন।
- অতিরিক্ত স্টোরেজ বা জায়গার কথা চিন্তা না করেই নতুন নতুন পণ্য বা স্টক গুলি নিজের দোকানে যুক্ত করা যাবে।
- গ্রাহকের আচরণ এবং পছন্দের সম্পর্কে মূল্যবান তথ্য সংগ্রহ করে নানান কার্যকর ব্যবসায়িক সিদ্ধান্তগুলি নেওয়া যায়।
- নিয়মিত নতুন নতুন গ্রাহক পাওয়ার জন্য SEO, social media, এবং email campaigns-এর মতো কৌশল গুলিকে কাজে লাগানো যায়।
- Live chat, email, এবং FAQs-এর দ্বারা প্রচুর সুবিধাজনক ভাবে গ্রাহকদের নানান সমস্যার সমাধান করা যায়।
একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট কিভাবে তৈরি করতে হবে?
এমনিতে, কিছু বছর আগে পর্যন্ত একটি e-Commerce সাইট তৈরি করার বিষয়টা এতোটা সোজা কখনোই ছিলোনা যতটা সোজা বর্তমানে হয়ে গিয়েছে।
আসলে, বর্তমান সময়ে ইন্টারনেটে এমন প্রচুর অনলাইন ইকমার্স ওয়েবসাইট বিল্ডার প্লাটফর্ম গুলি উপলব্ধ রয়েছে যেগুলিতে গিয়ে কোনো ধরণের কোডিং বা ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর অভিজ্ঞতা ছাড়া জেকেও নিজের পছন্দমতো একটি অনলাইন সেলিং ওয়েবসাইট তৈরি করে নিতে পারবেন।
অনলাইন ই-কমার্স স্টোর তৈরি করার এই ওয়েবসাইট বিল্ডার গুলিতে উপলব্ধ নানান টেমপ্লেট এবং এদের সোজা ইউজার ইন্টারফেসের কারণে, যদিওবা আপনি আগে কখনোই কোনো ধরণের ওয়েবসাইট তৈরি করেননি তাও একটি প্রফেশনাল এবং হাই কোয়ালিটির ই-কমার্স সাইট বানিয়ে নিতে পারবেন আপনি।
তাই, যদি আপনি কোনো কোডিং বা ওয়েব ডিজাইনিং অভিজ্ঞতা ছাড়া নিজেই একটি অনলাইন ই-কমার্স দোকান বা সাইট তৈরি করে নিতে চাইছেন, তাহলে নিচে বলে দেওয়া এই e-Commerce website builder প্লাটফর্ম গুলোর বিষয়ে আপনার জেনে রাখাটা জরুরি।
- Shopify: অনেক সহজে ব্যবহার করা যায়।
- WordPress/WooCommerce: নিজের পছন্দমতো যেকোনো ধরণের সাইট বানানো যাবে।
- Wix: প্রচুর আকর্ষণীয় ওয়েবসাইট টেমপ্লেট এবং একটি drag-and-drop builder পাবেন।
- Weebly: নতুনদের জন্য সেরা ওয়েবসাইট বিল্ডার প্লাটফর্ম।
চলুন, এবার নিচে আমরা অনলাইন ই-কমার্স সাইট বানানোর জন্য উপলব্ধ থাকা এই প্রত্যেকটি প্লাটফর্ম গুলির বিষয়ে নিচে বিস্তারিত জেনেনেই।
১. Shopify: সহজে তৈরি করুন অনলাইন দোকান:
যখন কথা হয় অনেক কম টাকা খরচ করে নিজেই একটি ই-কমার্স সাইট তৈরি করার তখন সবচেয়ে আগেই চলে আসে shopify.com-এর নাম। এটা একটি অনেক দারুন e-commerce website builder যেখানে প্রচুর ফীচার এবং একটি সোজা এবং সরল ইউজার ইন্টারফেসে রয়েছে।
হতে পারে আপনি নতুন করে নিজের অনলাইন ব্যবসাটি শুরু করতে চলেছেন, নিজের অনলাইন দোকানটি সেটআপ করা এবং সেটিকে পরিচালনা করার কাজটি এখানে অনেক সুবিধাজনক ভাবে করা যাবে। এছাড়া, আপনার ব্যবসাটি নতুন হোক বা পুরোনো, ছোট হোক বা বড়, যেকোনো আকারের ব্যবসার জন্য আপনি শপিফায় ব্যবহার করতে পারবেন।
ওয়েবসাইট তৈরি করা ছাড়াও, এখানে আপনারা handling inventory, engaging customers, এবং analyzing sales-এর মতো নানান টুলস গুলি পেয়ে যাবেন যেগুলিকে কাজে লাগিয়ে নিজের গ্রাহকদের আচরণ, চাহিদা এবং পছন্দগুলো বুঝতে পারবেন।
কেন ব্যবহার করবেন শপিফায়?
- Shopify সাইট বিল্ডার এর ইন্টারফেসটি নেভিগেট করা খুবই সহজ।
- ওয়েবসাইট হোস্টিং এবং নিরাপত্তা নিয়ে আলাদা ভাবে ভাবতে হবেনা।
- নিজের চাহিদা মতো রিসোর্সেস গুলিকে বাড়ানো যাবে।
- যেকোনো ধরণের সমস্যার সমাধানের জন্য একটি অনেক বড় সাপোর্ট কমিউনিটি রয়েছে।
- ৩ দিনের free trial পেয়ে যাবেন। এতে, পেইড প্ল্যান নেওয়ার আগে সবটা ভালোভাবে জেনেনিতে পারবেন।
শপিফায় দিয়ে ই-কমার্স সাইট কিভাবে তৈরি করবেন?
- Shopify-এর ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন এবং start free trial-এর মধ্যে click করুন।
- নিজের email, Facebook, Google বা Apple একাউন্ট দ্বারা রেজিস্টার করুন।
- নিজের ই-কমার্স সাইটটিকে একটি আকর্ষণীয় লুক দেওয়ার জন্য একটি ফ্রি বা পেইড থিম সিলেক্ট করুন।
- এবার নিজের পণ্যের ছবি, তথ্য, ডেসক্রিপশন, দাম ইত্যাদি সাইটে আপলোড করুন।
- পেপ্যাল বা স্ট্রাইপের মত পেমেন্ট প্রদানকারী গুলোর সাথে নিজের অনলাইন দোকানটিকে কানেক্ট করুন।
- সবটা শোয়ে যাওয়ার পর, এবার আপনি আপনার Shopify online store-টি লঞ্চ করে নিতে পারবেন।
মনে রাখবেন, আপনার ট্রায়াল প্ল্যান সম্পূর্ণ শেষ হয়ে যাওয়ার পর প্রয়োজন মতো একটি প্ল্যান সিলেক্ট করে নিতে হবে।
Shopify-এ ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করতে কত খরচ হবে?
শপিফায় ওয়েবসাইট বিল্ডারে আপনারা আলাদা আলাদা সাবস্ক্রিপশন প্ল্যান গুলি পেয়ে যাবেন। এমনিতে যা আমি উপরে আগেই বলেছি, আপনারা চাইলে এর ৩ দিনের ফ্রি ট্রায়াল ব্যবহার করে দেখতে পারবেন।
এছাড়া, Shopify-এর যেকোনো প্ল্যান (monthly বা yearly) শুধুমাত্র ২০ টাকা দিয়ে প্রথম মাসের জন্য ব্যবহার করতে পারবেন। তবে এর পর, আপনাকে রেগুলার monthly বা yearly pricing সহ শপিফায় ব্যবহার করতে হবে।
Plan | Monthly Price | Yearly Price |
---|---|---|
Basic Shopify | 1,994/month | 17,988/year (1,499/month) |
Shopify | 7,447/month | 67188/year (5,599/month) |
Advanced Shopify | 30,164/month | 2,72,160/year (22,680/month) |
২. WordPress এবং WooCommerce:
WordPress-হলো একটি অনেক জনপ্রিয় CMS website builder software যেটিকে কাজে লাগিয়ে আপনি যেকোনো ধরণের ওয়েবসাইট তৈরি করে নিতে পারবেন। হ্যা, ওয়ার্ডপ্রেস দ্বারা একটি অনলাইন শপিং ওয়েবসাইট ও তৈরি করে নেওয়া যাবে।
WordPress, সম্পূর্ণ ভাবে open-source এবং free হওয়ার কারণে এটিকে জেকেও কোনো ধরণের টাকা না দিয়েই ব্যবহার করতে পারবেন। তবে ওয়ার্ডপ্রেস হলো একটি ওয়েব বেসড CMS সফটওয়্যার আর এটিকে এক্সেস এবং ব্যবহার করার জন্য আপনাকে আলাদা ভাবে ওয়েব হোস্টিং অবশই কিনে নিতে হবে।
একটি পার্সোনাল ব্লগ সাইট থেকে শুরু করে একটি সম্পূর্ণ প্রফেশনাল ই-কমার্স স্টোর, সবটাই তৈরি করে নিতে পারবেন ওয়ার্ডপ্রেস দ্বারা। তবে, যদি আপনি অনলাইনে পণ্য বিক্রি করার জন্য একটি ই-কমার্স স্টোর বা ওয়েবসাইট বানাতে চাইছেন, তাহলে আপনাকে WordPress-এর সাথে WooCommerce plugin-টি অবশই ব্যবহার করতে হবে।
কেন ব্যবহার করবেন WordPress এবং WooCommerce?
WordPress-এর মধ্যে WooCommerce plugin ব্যবহার করে অনেক সহজেই আপনার ওয়ার্ডপ্রেস সাইটটিকে একটি সম্পূর্ণ কার্যকরী অনলাইন স্টোরে রূপান্তর করে নিতে পারবেন। চিন্তা করতে হবেনা, WooCommerce plugin-টি সম্পূর্ণ ভাবে একটি open-source এবং free eCommerce plugin।
Shopify বা অন্যান্য website builder গুলির ক্ষেত্রে আপনাকে তাদের প্লাটফর্ম এর মধ্যে তাদের হিসেবে কাজ করতে হয়। তবে, WordPress এবং WooCommerce ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনি আপনার ওয়েবসাইটের উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারবেন।
- ওয়ার্ডপ্রেস সম্পূর্ণভাবে ফ্লেক্সিবল এবং কাস্টমাইজযোগ্য একটি প্লাটফর্ম।
- WordPress এবং WooCommerce, দুটোই ফ্রি।
- আপনাকে শুধুমাত্র ওয়েব হোস্টিং এবং ডোমেইন কিনে নিতে হয়।
- সাইটে পছন্দমতো ফীচার গুলি যুক্ত করার জন্য ওয়ার্ডপ্রেসে হাজার হাজার প্লাগিন গুলি পাবেন।
- নিজের ই-কমার্স ওয়েবসাইট এর সাথে একটি ব্লগ সেকশনও যুক্ত করা যায়।
- YouTube-এর মধ্যে ই-কমার্স সাইট বানানোর প্রচুর টিউটোরিয়াল পাবেন।
- অন্যান্য ওয়েবসাইট বিল্ডার গুলির তুলনায় অনেক কম খরচে সাইট তৈরি করা যায়।
WordPress দিয়ে e-Commerce সাইট কিভাবে বানাবেন?
- হোস্টিং কিনুন: Bluehost, Hostinger, GreenGeeks, ইত্যাদির মতো কোম্পানির থেকে ওয়েব হোস্টিং কিনুন এবং সেখানে ওয়ার্ডপ্রেস ইনস্টল করুন।
- WooCommerce: নিজের WordPress-এর মধ্যে থাকা Plugin সেকশনে গিয়ে WooCommerce Plugin ইনস্টল করুন।
- থিম সিলেক্ট করুন: এবার আপনাকে নিজের ই-কমার্স ওয়েবসাইটের জন্য একটি ভালো থিম সিলেক্ট করতে হবে। ওয়ার্ডপ্রেস থিম লাইব্রেরিতে নানান ফ্রি থিম গুলি পাবেন।
- পণ্য যুক্ত করুন: পছন্দমতো পণ্য, পণ্যের ছবি, তথ্য, দাম, ডেসক্রিপশন, ইত্যাদি আপলোড ও যুক্ত করুন।
- পেমেন্ট সেটিং: গ্রাহকেরা আপনাকে কিভাবে পেমেন্ট করবেন সেটা সেটআপ করুন। WooCommerce settings-এর মধ্যে গিয়ে আপনি পেমেন্ট সেটিং করতে পারবেন।
- অনলাইন দোকান চালু করুন: সবকিছু ভালো করে দেখে নিয়ে এবার আপনার দোকানটিকে লঞ্চ করুন।
ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ই-কমার্স সাইট বানাতে কত টাকা খরচ হবে?
কোথায় খরচ হবে: | অনুমানিক খরচ: | ডেসক্রিপশন: |
---|---|---|
১. ডোমেইন কেনা | প্রতি বছর ১০০০-১৫০০ টাকা | ই-কমার্স সাইটের জন্য ডোমেইন নাম কিনতে হবে। |
২. ওয়েব হোস্টিং | মাসে ৩০০ থেকে ৫০০০ টাকা | ওয়েবসাইটটিকে অনলাইনে হোস্ট করার জন্য প্রতিমাসে হোস্টিং চার্জ দিতে হবে। |
৩. ওয়েবসাইট থিম | ওয়ান-টাইম ৫০০০-৭০০০ টাকা | একটি আকর্ষণীয় এবং কাস্টমাইজযোগ্য ওয়েবসাইট তৈরি করতে থিম কিনতে হবে। |
৪. WooCommerce Plugin | Free | WooCommerce Plugin ফ্রীতে ইনস্টল এবং ব্যবহার করা যাবে। |
৫. অন্যান্য জরুরি প্লাগিন | প্রতিবছর ৩,০০০-৫,০০০ টাকা | payment gateways, SEO, ইত্যাদির জন্য প্রয়োজনীয় প্লাগিন গুলি কিনতে হবে। |
৬. ওয়েবসাইট ডিজাইন | ওয়ান-টাইম ৫,০০০-১০,০০০ টাকা | কাস্টম ওয়েবসাইট ডিজাইন করার জন্য একজন পেশাদার ডিজাইনার নিয়োগ করতে হতে পারে। |
এগুলি ছাড়াও, ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট বানাতে গেলে, ওয়েবসাইট ডিজাইন, পরিচালনা, এবং রক্ষণাবেক্ষণ এর ক্ষেত্রে অন্যান্য নানান খরচ গুলি হতে পারে।
অবশই পড়ুন: ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট কিভাবে তৈরি করবেন?
৩. Wix দিয়ে তৈরি করুন ই-কমার্স সাইট:
যদি আপনি কোনো ধরণের ওয়েব ডিজাইনিং দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা ছাড়া নিজের জন্য একটি অনলাইন সেলিং ওয়েবসাইট তৈরি করতে চাইছেন, তাহলে Wix-এর সোজা ড্র্যাগ-এন্ড-ড্রপ ফীচার এর সাথে এই কাজ করতে পারবেন।
বিগিনারদের জন্য “Wix” সেরা একটি বিকল্প যেখানে নিজের অনলাইন সেলিং সাইটটিকে একটি প্রফেশনাল লুক দেওয়ার জন্য প্রচুর ভালো ভালো template গুলি দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, ড্র্যাগ-এন্ড-ড্রপ ই-কমার্স ওয়েবসাইট বিল্ডার হওয়ার কারণে, কোনো ধরণের কোডিং এর কৌশল ছাড়া ঝটপট বানিয়ে নেওয়া যাবে একটি অনলাইন শপ।
WIX ওয়েবসাইট বিল্ডারের সুবিধা:
Wix, একটি অনেক সোজা ও সিম্পল এবং একটি drag-and-drop website builder হওয়ার ছাড়াও এর অন্যান্য কিছু সুবিধা এবং বৈশিষ্ট গুলি অবশই রয়েছে।
- এখানে ৯০০ থেকেও অধিক আকর্ষণীয় ওয়েবসাইট টেমপ্লেট এবং ডিজাইনিং অপসন পাবেন।
- SEO, marketing, এবং analytics-এর জন্য নানান টুলস গুলি আছে।
- আপনার বাজেট হিসেবে প্ল্যান সিলেক্ট করতে পারবেন।
- এখানে একটি Logo maker-ও যুক্ত রাখা হয়েছে।
- AI website builder-এর দ্বারা ঝটপট নিজের সাইট তৈরি করা সম্ভব।
- প্রত্যেক পেইড প্ল্যান এর সাথে ১ বছরের জন্য ফ্রি ডোমেইন পাবেন।
WIX website builder-এ একটি ই-কমার্স সাইট কিভাবে বানাবেন?
WIX ওয়েবসাইট বিল্ডার দিয়ে একটি অনলাইন ই-কমার্স ওয়েবসাইট ডেভেলপ করার নিয়ম অনেক সোজা এবং ইউটিউবে উপলব্ধ নানান টিউটোরিয়াল গুলি দেখে এবিষয়ে সম্পূর্ণটা জেনেনিতে পারবেন।
- সবচেয়ে আগে আপনাকে WIX-এর ওয়েবসাইটে ভিসিট করতে হবে। GET STARTED-এর মধ্যে click করুন এবং নিজের একটি একাউন্ট তৈরি করে নিন।
- উপলব্ধ নানান eCommerce templates গুলির মধ্যে থেকে যেকোনো একটি সিলেক্ট করুন।
- দিয়ে দেওয়া drag-and-drop editor-টি ব্যবহার করে নিজের ওয়েবসাইটটি ডিজাইন এবং এডিট করুন।
- আপনি যেই পণ্য গুলি বিক্রি করতে চান সেগুলির তথ্য, ছবি, দাম এবং ডেসক্রিপশন ওয়েবসাইটের মধ্যে অ্যাড করুন।
- গ্রাহকেরা যাতে সুবিধাজনকভাবে আপনাকে পেমেন্ট করতে পারেন তার জন্যে পেইমেন্ট মেথড সেটআপ করুন।
WIX দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করতে খরচ কত হবে?
WIX হলো একটি অনেক জনপ্রিয় অনলাইন ই-কমার্স ওয়েবসাইট বিল্ডার যেখানে আপনারা মাসে কিছু টাকা দিয়ে নিজের ই-কমার্স সাইটটি হোস্ট, তৈরি, ডিজাইন এবং পরিচালনা করতে পারবেন। তাই, আপনাকে আলাদা ভাবে হোস্টিং বা ডোমেইন কিনে নিতে হয়না। এখানে মাসে ১৯৯ টাকা থেকে শুরু করে মাসে ১৫৯৯ টাকা পর্যন্ত প্ল্যান রয়েছে।
Plan | Monthly Price | Storage: |
---|---|---|
Light | 199/month | 2 GB storage space |
Core | 399/month | 50 GB storage space |
Business | 799/month | 100 GB storage space |
Business Elite | 1599/month | Unlimited storage space |
মনে রাখবেন, WIX-এর প্রতিটি প্ল্যান এর সাথেই কিন্তু ১ বছরের জন্য ফ্রি ডোমেইন নেম দিয়ে দেওয়া হবে।
একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট এর মধ্যে কি কি বৈশিষ্ট থাকা দরকার?
Shopify, WIX বা WordPress, যেই ওয়েবসাইট বিল্ডার প্লাটফর্ম ব্যবহার করেই নিজের ওয়েবসাইট তৈরি করছেননা কেন, আপনার ওয়েবসাইটের মধ্যে নিচে বলে দেওয়া এই বৈশিষ্ট গুলি অবশই থাকা দরকার।
মোবাইল-ফ্রেন্ডলি ডিজাইন: আপনার ওয়েবসাইটটি কম্পিউটারের পাশাপাশি মোবাইল এবং অন্যান্য প্রত্যেকটি ডিভাইসে কোনো সমস্যা ছাড়া সঠিক ভাবে ডিসপ্লে হতে হবে।
হাই কোয়ালিটি ছবি: ওয়েবসাইটে উপলব্ধ প্রোডাক্ট গুলির জন্য ক্লিয়ার, শার্প, এবং হাই কোয়ালিটি ইমেজ ব্যবহার করতে হবে।
বিস্তারিত প্রোডাক্ট ডেসক্রিপশন: পণ্যের সাথে জড়িত প্রতিটি জরুরি তথ্য প্রোডাক্ট ডেসক্রিপশন এর অংশে যুক্ত করতে হবে।
নিরাপদ পেমেন্ট গেটওয়ে: আপনার গ্রাহকদের পেমেন্ট ডিটেলস গুলি নিরাপদ রাখতে হবে।
কাস্টমার রিভিউ: আপনার গ্রাহকেরা যাতে পণ্যের রিভিউ গুলি যুক্ত করতে পারে। এতে, নতুন এবং ফার্স্ট-টাইম গ্রাহকদের মধ্যে বিশ্বাস স্থাপন করা যেতে পারে।
এসইও অপ্টিমাইজেশান: সার্চ ইঞ্জিন গুলির জন্য নিজের ওয়েবসাইটটি অপ্টিমাইজ করতে হবে। এতে, সার্চ ইঞ্জিন গুলির থেকে নিয়মিত নতুন নতুন গ্রাহকদের পাওয়া যাবে।
FAQ’s: How To Build e-Commerce Website?
বর্তমান সময়ে একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট বানানোর নিয়ম অনেক সোজা। WIX, Shopify, ইত্যাদির মতো উপলব্ধ নানান website builder গুলি ব্যবহার করে বা WordPress এবং WooCommerce Plugin একসাথে ব্যবহার করে আপনি নিজেই কোনো ধরণের কোডিং বা ওয়েব ডিজাইনিং অভিজ্ঞতা ছাড়া একটি ই-কমার্স সাইট বানাতে পারবেন।
আপনার বাজেট, প্রয়োজনীয়তা, প্রযুক্তিগত দক্ষতা, এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় ফীচার গুলির উপর নজর রেখে আপনাকে নিজের জন্য একটি ই-কমার্স প্লাটফর্ম সিলেক্ট করতে হবে।
কিছু সাধারণ ও অত্যন্ত জরুরি ফীচার এবং বৈশিষ্ট গুলি আপনার ই-কমার্স ওয়েবসাইটে অবশই থাকা দরকার। যেমন, ইউজার-ফ্রেন্ডলি ইন্টারফেস, নিরাপদ পেমেন্ট গেটওয়ে, সহজ এবং সুবিধাজনক ন্যাভিগেশন, আলাদা আলাদা প্রডাক্ট ক্যাটাগরি, কাস্টমার রিভিউ, এবং মোবাইল রেসপনসিভ ডিজাইন এর সুবিধা।
আর্টিকেলের সাথে জড়িত কোনো ধরণের প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকলে নিচে কমেন্ট করে অবশই জানিয়ে দিবেন। এছাড়া, আর্টিকেলটি পছন্দ হলে সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করতে কিন্তু ভুলবেননা।